ঢাকা, বুধবার,১৫ আগস্ট ২০১২,৩১ শ্রাবণ ১৪১৯, ১৬তম সংখ্যা ।

আজ ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীজাতীয় শোক দিবস আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে শেখ মুজিবকে স্মরণ করি হৃদয়ের ভালোবাসায় তাঁর নেতৃত্বে আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি ।১৯৭৫ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সপরিবারে নিহত হন।
  
১৬তম সংখ্যায় আছে মোট ১৬টি কবিতা, লিখেছেন-রেজা রহমান ,সৌভিক দা,সাবরিনা সিরাজী তিতির,ইন্দ্রাণী সরকার,মৌ দাশগুপ্তা,শুভ বাবর,দোলন মাহমুদ,আব্দুল্লাহ্ আল জামিল,সালাহউদ্দিন আহমেদ সালমান,আহমেদ মুনীর,শামীম পারভেজ,হাসিদা ইয়াসমিন মুন,ইমেল নাঈম,সোহান সরকার,হান্নান হামিদ লিখন এবং মোঃ সরোয়ার জাহান
একা একা
 
রেজা রহমান


একলা ঘুমোই
একলাই জেগে থাকি
আঁধারমানিক দেখবো লে
দুইচোখ মেলে রাখি
রাত থেকে রাত
রাতভোর হতে
আর কত রাত বাকি ?

একলাই ডুবি
একলাই উঠি ভেসে
বিনষ্ট নদী উজাড় বনের
উজানভাটির দেশে
না মেলে জল না মেলে ডাঙ্গা
সর্বনাশের শেষে।

একলাই মরি
একলাই বেঁচে উঠি
পথের প্রান্তে একলা দাঁড়াই
একলাই ছুটোছুটি

একলা এগোই
একলা পিছিয়ে আসি
ধনধান্যের না আমি গৃহী
না কোনো সন্ন্যাসী
ভাংতে ভাংতে গুড়ো হয়ে যাই
ভেঙে ভেঙে ভালবাসি।

একলাই খুঁজি
একলাই পেয়ে যাই
যাকিছু ছিল সকল হারিয়ে
যা আমি চাইনি তাই।
মুঠো খুলে দেখি বিস্ময় একি
ধুলো ছাড়া কিছু নাই !

দীর্ঘশ্বাস
সৌভিক দা'

- কোথায় তুমি ?
- এইতো পান্থপথে
(অনেক শব্দ ছাপিয়ে যেন দূর-কন্ঠ ভেসে আসে মহাশুন্য থেকে)
- শুনতে পাচ্ছিনা। কথা কেটে কেটে আসছে। যাই হোক, কী করছ?
- একটা ছবি শ্যুট করার চেষ্টা করছি। কিন্তু বারবার ফ্রেমের ভেতরে রিকশা...শুনো শুনো, আমি রাখি
   পরে কথা হবে। সিগন্যাল পড়েছে...

- কোথায় তুমি ?
- হাঁটছি, শুন্যের দিকে। আর এভাবে হেঁটে গেলে ক্রমাগতরোদের ঠিকানা...
- কী বলো এইসব পাগলের মত? ঠিক করে বলোনা, কোথায় তুমি !
- মাথার ওপরে আকাশ দেখতে পাচ্ছি। আর কিছু ঠিকমত দেখা যাচ্ছেনা। কেমন যেন ঝাপসা
- ধুর ! যত্তসব আবোল-তাবোল...রাখি
- আচ্ছা
- লেখা শেষ হলে ফোন দিও...

নিয়ম মেনে চলা আমার পছন্দ !
সাবরিনা সিরাজী তিতির
 
 আমাকে তুমি ততটুকুই হাসতে বা কাঁদতে বলো
যতোটা আমার সাধ্যি
আমাকে তুমি ততটুকুই সুখ বা দুঃখ দিও
যতোটা বুকের সিন্দুকে আঁটে
আমাকে তুমি ততটাই বসিয়ে রেখো
যতোটা এই চোখ সইতে পারে

ততোটা শ্রাবণ , ততোটা বসন্ত আর ঠিক ততোটাই অভিমান দিও
এই নুয়ে পড়া ভঙ্গুর আমাকে পরখ করে
ফোঁটায় ফোঁটায় তোমার চাওয়া ছড়িয়ে দিও বিষণ্ণ অবসন্নতায়
আমি আঁজলা পেতে দিলাম ;ভরা বর্ষা আমার জন্য নয়
ডুবে যাবার ভয় সেই ছেলেবেলার !
একসময় আমি অবশ্য অনেক নিতে পারতাম
ভালোবাসা নেবার পাশাপাশি অবহেলা নেবার ক্ষমতাও ছিলো ঈর্ষা করবার মতো
মায়ায় কিম্বা অবজ্ঞায় , খুব দ্রুত খেই হারাই এখন !
তবুও বারবার ভেসে উঠবার চেষ্টা ,ভালো রাখবার চেষ্টা
ব্যাকরণের নিয়মের মতো খামচে ধরে আছে আমাকে

তুমি তো জানতেই
নিয়ম মেনে চলা ,আমার পছন্দের তালিকার প্রথম সারিতেই !
 
একটি রাতের কথা

ইন্দ্রাণী
সরকার

নীরব নিশুতি রাতে যখন চলি একা ,
দূর থেকে ভেসে আসে বকুলের গন্ধ |
সারি সারি গাছের ফাঁকে আঁকাবাঁকা পথ
ফুলের গন্ধে সুগন্ধি বাতাস বয় মন্দ ||

দূরের আকাশে ওঠা একফালি চাঁদ
আলোয় ভরায় আমার অজানা পথ |
ভয় হয় যেন না হারাই এই আঁধারে
চলার সাথে সাথে গতি হয় শ্লথ ||

দূরে শুনি সমুদ্রের ঢেউয়ের আহ্বান
সমুদ্রের রং বোঝা যায় না আঁধারে |
শুধুই শুনি ঢেউয়ের ওঠাপড়ার শব্দ
কালো মেঘ মেশে নিঃসীম পারাবারে ||

ভুলে যাই নিজেকে মায়াবী রাতে, সাথে
চাঁদের আলো আর বাতাস গন্ধে ভরা |
গাছের পাতারা ফিসফিসিয়ে কথা কয়,
হঠাৎ বুঝি জগতে সবাই একা মোরা ||

স্বাধীনতা

-মৌ দাশগুপ্তা
স্বাধীনতা ইচ্ছেপাখী, বুকের খাঁচায় থাকে।
বারোমাসের রোজনামচার পাঁক লাগে না পাখে।
স্বাধীনতা বড্ড একা, দূর আকাশের চাঁদ.
আনবো পেড়ে, আশায় থাকি,কথায় পাতি ফাঁদ।
স্বাধীনতা অনেকটা ঠিক সোনার পাথরবাটি,
নিজেই আমি ধন্দে থাকি, মেকি নাকি খাঁটি?
স্বাধীনতা মন ময়ূরের পেখম-তোলা নাচ,
হাতের মুঠোয় সুখ নামের সেই ঝাড়বাতি ভাঙ্গা কাঁচ।
একমুঠো রোদ,একফালি আলো,একমনা বেঁচে থাকা,
সুখ দুঃখের সাদা ক্যানভাসে, স্বাধীনতা রঙে আঁকা।
স্বাধীনতা যায়না কেনা, অমূল্য সে জানি,
তোমার আমার মনের মাঝে লুকানো হীরার খনি।।

উত্তরবিহীন প্রশ্নের উত্তর আমি ভয়ে খুঁজিনি 
শুভ বাবর
উত্তরবিহীন প্রশ্নের উত্তর আমি ভয়ে খুঁজিনি
অদ্ভুত এক শূন্যতা গোটা তল্লাট জুড়ে
নৈরাশ্যের কথা বলতে চাইনা,উপমায় অজস্র জলপ্রপাত
কপাল থেকে চিবুকে হৃদয়ে ভাসে শুধু চূর্ণ কষ্টের গুঁড়ো।
ব্যস্ততা যখন তুঙ্গে নগরজুড়ে ছায়াসঙ্গী স্বার্থপর ভালোবাসো

অন্ধকার থেঁতলে দিয়েছে অপূর্ণ ইচ্ছা গুলো
ইদানীং অর্থহীন মনে হয় দিনগুলোকে
কোণঠাসা ভাবনা চিন্তার দুমড়ে মুচড়ে চটকে যাওয়া
রমণ সুখের উষ্ণতা প্রথাগত নিয়ম ব্যাখ্যা চায় না
যে সভ্যতায় আত্মসচেতনতা মেলে দেয় নিউক্লিয়ার ছোট্ট সংসার
পর্দা ফুঁড়ে ঊরুর জিজ্ঞাসায় বারংবার টুটি চেপে ধরে পরিত্যক্ত চুল্লী
অক্সিজেন খুঁজে স্থূল মানবেরা থালায় থৈ থৈ রাত
আঁধারে একগলা যুবক যুবতীর উড়ছে বেলুন জমালো ভেজাল
দর্জির আঙ্গুল ভীরু গর্ভে কাঁচি ছুঁড়ে দিলে পূর্ণিমাচাঁদ নাড়িটান
প্যান্টে ফলেছে থিরথিরে চোখ মালিকের বাড়িতে গোলাপবাগান

সর্পনখা-নাভির জন্মতিল নখের প্রান্তবিন্দুতে যৌনঘ্রাণ
সজন্মা ঘাস কস্তুরীজল
আঙুলের জ্যামিতি আরও নিচে সবজি-হরিণ
ঘামের নিজস্ব আকুতি
অবিরল উচ্ছ্বাসে পাথর চাপা সময়েও চিড় ধরে
বিলম্বিত স্বর্ণালী রোদের অপেক্ষায় রাত্রিরও ক্লান্তি আসে,
গাছ চুয়ে পড়ে শীতল আনন্দ
রসের কলসে অব্যবহারে মরচে পড়া
শব্দবন্ধ নড়েচড়ে হয়তো ওরই আচ্ছাদনে পেয়ে যাবো
হারানো রূপোর চাবি গোছা
বাতাসের ভাঁজে ভাঁজে কষ্টের কাহন
ঋতুরা হঠাৎ এসে হঠাৎ
হারিয়ে যাচ্ছে ছায়া হয়ে ইচ্ছেহীন বসে থাকি
জলহীন নদীর পারে--রঙ হারানো জীবনের গল্পে, অনন্তকাল।

প্রতিদিন চিত্রকল্পের বদলে
রচনা করি অগণন কল্পচিত্র রুপটান
রাজপরিবারে রূপকথার রাখাল সেজে চিৎকার করি বাঘের আগমনে
হায় অন্ধ কোকিল কাকের
বাসায় ডিম পেড়ে গেয়ে উঠিস কুহু-কুহু সুরে
আসলে আমরা জ্যোৎস্নার আগুনে রান্না করি গহীন অন্ধকারে
আমরা আসলে কাক তাড়াবারর ছদ্মবেশে প্রতিদিন জ্যোৎস্না তাড়াই
 
এক II..আলসে মেয়ে..II
দোলন মাহমুদ
চিলতে চাঁদের আলোয়,
বিছিয়ে সুখের ঘোর।
স্বপ্ন থেকে কুড়িয়ে নিলাম,
তোর জন্য একটি ভোর।।

ভোর হয়েছে অনেক আগে,
ঘুমের ঘোর কাটেনি তোর।
আলতো করে চোখ মেলে দেখ,
পুরো সকালটাই আজ তোর।।

আলসে মেয়ে খোল বাতায়ন,
বাহিরে একটু চেয়ে দেখ।
আকাশটা তোর সাজিয়ে রেখেছি,
দিয়ে কিছু নীলচে আলোয় মেঘ।।

একটু পরে ঝরবে বুঝি,
শান্তিময় অমিয় বারি ধারা।
স্বর্ণলতা কাঁপছে থর থর,
হয়ে আজ আনন্দে দিশেহারা।।

এই বাদল দিনের বাদল ধারা,
ঝরছে তোরই জন্য।
তুই যদি আজ ভিজিছ হেথায়,
তবে বারিষ হবে ধন্য।।


একটি
ঝর্ণার জীবন
আব্দুল্লাহ্ আল জামিল 
 
এক পাহাড়ের পাদদেশে একটি ঝর্ণার উৎপত্তি হলো কিছুকাল আগে
চলছিলো ভালোই তার চঞ্চলতা নিয়ে।
হঠাৎ এক পাথরের পদচাপে থেমে গেলো তার চলার গতি
তাই ফল্গুধারা হয়ে সকলের অজান্তে বয়ে চললো।

কোনো এক সাগর পাড়ের মেয়ে এসে
একদিন খুঁড়ে দিলো উপরের মাটি
বসন্ত রাগের সুর পেয়ে
উষ্ণ প্রস্রবণ হয়ে বয়ে চললো সে।

এতদিন পর মুক্ত হয়ে
সাগরের দিকে ধাবিত হলো আবার।
কিন্তু এক বাঁধ নির্মাণ হলো চলার পথে তার
গতি ঘুরিয়ে পতিত হলো যেয়ে এক বদ্ধ ঝিলে।

বুঝে নিলো সাগরের সাথে মিলন হবার নয়
বদ্ধ ঝিল হয়ে থাকাটাই তার আসল নিয়তি।
 
বৈতরণী

সালাহউদ্দিন আহমেদ সালমান
 অনন্ত রাত্রির আকাশপটে ফিনিক জ্যোৎস্না
ভারবাহী দায়বাহী ভাসমান মেঘের ব্রজে
ভাবনার ধূসর জীবন ঘুরে অচেনা বৈকুণ্ঠে।

বেপথুমান বিদগ্ধ সর্বসত্তা প্রশ্নের উপশহরে
বয়োজীর্ণ পথের একলা পথিক বিস্ময়ে
মানবেতর তারতম্য দীর্ঘকায় তিরোধান ইহলোকে।

প্রাচীন রহস্যের মলাটে অন্তরীণ অদৈর্ঘ জনম
ভূগর্ভে প্রোথিত প্রত্নের প্রত্ন ব্যবচ্ছেদ
হিসেবের অন্ত্যমিল মানুষ অমানুষের জীবন্ত প্রচ্ছদ।

নিঃশ্বাসের স্বল্পপরিধির ভীতর
দক্ষ অদক্ষ অভিযাত্রীর নানারকম দল
প্রার্থনার তিলকদন্ড ব্যবধানে বৈতরণী
কারো জন্য সুগম কারো অনন্ত অনল।
 
 ভজকট
আহমেদ মুনীর
 
হিমাগারে হিমাঙ্কে আমার লাশ
তোমরা এখন কে কোথায়
পুলিশ তদন্ত কমিটি গোয়েন্দা সংস্থা
সারারাত আমি একাই ছিলাম
হিমাঙ্কের সাথে আমার বেদনা হয়েছে হিমশীতল
অভিযোগগুলো খণ্ড খণ্ড খুঁজে পাওয়া যায় না
বন্ধুবান্ধব আত্মীয় স্বজন অনেকেই এখন
এবেলা এসেছে। কিন্তু সে আসেনি
সে মানে ঘাতক। তিল তিল করে কুড়িটি বছর ধরে
হত্যা করেছে সে আমাকে বিষাক্ত বাতাসে জোছনালোকে
রক্তপিপাসু দানবের মতন খেয়েছে আমার রক্ত
মাংস হাড় গোড় অর্থ বিত্ত বাড়ী গাড়ী জীবন যৌবন
সহস্র অব্যর্থ হামলায় আমি হয়েছি নিহত
তবুও করিনি প্রতিবাদ প্রতিরোধ
চেয়েছিলাম একাগ্র শান্তি সুখ
তাও হল না পাইনি দিশা নিজের দেশ নিরন্তর ।।

এখন ন্যায়বিচার নাই রাষ্ট্রে সঠিক তদন্ত নাই
অর্থ দিলেই কলম নড়ে ঘোরে অর্থ ছাড়া তারা
কথা বলে না হাসে না
কী রাজনৈতিক কী আমলা কী পুলিশ কী তদন্ত সংস্থা
বিচারিক আদালত।
অর্থের কল বাতাস নড়ে
অনর্থের কল হিমাঙ্কে শীতনিদ্রায় ।।

নাড়ী ভুঁড়ি কেটে কী পেলে কী পেলেনা তা আজ
বড় কথা নয় অর্থ কথা বলে
'পয়সা হল আমদানি রোজগার
ঘাতক ড্রাইভার পুলিশ রাজাকার বিচারক
রাষ্ট্রপতি সমতলে সমতটে ।।

দুঃখে কাঁদে দেশ দেশের আকাশ
মাটি জল শস্যদানা
বর্গীরা আবার দেয় হানা
জননীরা হারায় সম্ভ্রম
রক্তস্রোতে ভেসে যায় গঙ্গা নদী সাগর অতল
শতাব্দীর আর্তনাদ ভজকট ।।
 
যা আমাকে কষ্ট দেয় ,সুখ দেয়না

 
শামীম পারভেজ


কেন আমার নয়ন পর্দায় ভেসে উঠে
কালো কালো ছবিগুলো ?
যা আমাকে দুঃখ দেয় আর কাঁদায়।

কেন আমার কর্ন পর্দায় আঘাত করে
ভয়ংকর আতংক শব্দ ?
যা আমাকে কম্পিত করে, হই আতংকিত।

কেন আমার সবুজ রংগে ঢাকা শরীরটাকে
বিবস্র করে শয়তানের দল ?
যা আমার রুপকে কুৎসিত করে

কেন আমার চরনকে সুদুর পথ চলায়
বাধার সৃষ্টি করে দিয়েছে ?
যা আমার পঙ্গুত্বকে স্থায়ী করেছে

কেন আমার দেহের রন্দ্রে রন্দ্রে ঢুকেয়ে
দিয়েছে দুর্নীতি নামক জীবানু ?
যা আমার দেহে চর্ম রোগের সৃষ্টি হয়েছে

কেন আমার পঙ্গুত্বের সুযোগে কেড়ে নিচ্ছে
আমার গুদামের সঞ্চিত খাবার ?
যা আমাকে রুগ্ন বানাচ্ছে

কেন আমার সঞ্চিত সম্পদ কুড়িয়ে কুড়িয়ে
লুট করে নিয়ে যাচ্ছে ?
যা আমাকে চরম দরিদ্র বানিয়েছে

কেন আমার বক্ষে জন্ম নেয়া সন্তানদের
বিপথে নিয়ে যাচ্ছে ওরা ?
যা আমার স্নেহময়ী বক্ষকে খালি করছে।

কেন আমার সন্তানদের তাজা লাল টুকটুক রক্তে
স্বাধীন করেছিল আমায় ?
যা আমাকে এরুপ কষ্ট , বেদনা , ব্যাথিত করে।

না না না, আমি এমন স্বাধীনতা চাইনা,
যা আমাকে কষ্ট দেয় , সুখ দেয়না

ছবি আঁকা 
হাসিদা ইয়াসমিন মুন

বন্দুকের মধ্যে ভরা মান্ধাতার বিধ্বংসী বারুদ
কেউ যদি জানে ,
বুঝে নিক 'বিবেকের ভয়' পালনকর্তার বড় অস্ত্র
জিহ্বা যুদ্ধে যাওয়ার সহচর
আর ভণ্ডামি অপহরণ করা অন্তর
ধর্মঘট করে লাজুক মনেরা
পুরুষের বুকে জাগে আলো
যা জাগাতে পারে সমগ্র জাতীকে ,
ভালোবাসা দরজায় দাঁড়ানো তাঁর
উপকূলে জ্যোতির্ময় সূর্যের গোধূলি
মানুষের দুর্দশা যেন পাহারাদার নেকড়ের মতো
ভিতরে ভীতু ভেড়াদের হুড়োহুড়ি
আহ, শিকারি............
চাই ঐকান্তিক চোখ ,
মৃগয়া তোমার শান্তি সম্মুখে
পায়ের নীচে পুরাতন জ্বালাতন
দাঁড়াও পবিত্র স্থানে এই তো সেই ভূমি পাটাতন ,
শর ছুড়বার সময় কাঁপেনা জেনো হাত
অসাধু খর্পর বর্ণচোরের হাতে রঙ্গিন পতাকা
যার বুকে তোমার আমার সন্তানদের ছবি আঁকা .........!!!


অসহ্য কষ্টের কাব্য

ইমেল নাঈম


মাঝে মাঝে জীবনটাকে অনেক অসহ্য লাগে।
কোন কিছুই করতে ইচ্ছে করে না,
অসহ্য লাগে সকালের নীরবতাকে,
অসহ্য লাগে ঘড়ির কাটার টিক টিক শব্দ,
অসহ্য লাগে বৃষ্টির টুপটাপ অশ্লীল নৃত্য।
অসহ্য লাগে সকালের প্রিয় গরম চায়ের পেয়ালাকে,
আর ফেলে আসা এক হ্রাস স্মৃতিমালাকে।

ভাবি আমরা মানুষ কেন এতো স্বার্থপর হই?
কেন আমরা সব ভুলে যাই এতো সহজেই।
ফেলে আসা স্মৃতি----
ফেলে আসা অনুভাব----
আর ফেলে আসা হাসি-কান্না গুলোকে।
কেনই বা ইদানীং ভালবাসাগুলো ভেঙে যায়
এক তুড়িতেই, কত সহজেই মানুষ হয়ে যায় পর,
আর রেখে যায় কিছু আঁচড়----
জীবনের খাতায় প্রেমের হিসাব মেলে ব্যর্থতার মাঝে।

কিছু প্রিয় মানুষ চলে যায় একেবারেই অন্য জগতে
যেখানে তাকে ছোঁয়া যায় না---
দেখাও যায় না----
কথা বলাও যায় না----
আর যায় না তার বুকে মাথা রেখে একটু ঘুমানো,
হয়তো আমিও একদিন চলে যাবো তোমাদের ছেড়ে
কিছুটা অভিমান আর বাকীটা অনুরাগ নিয়ে।
তখন আমায় মনে রেখো না তোমরা তোমাদের
স্মৃতির ডায়রির পাতাতে-----
 
রাত
 
সোহান সরকার

এখন রাত;
প্রেতাত্মার হাসির মত,
ঘুমকুমারীর ঘুমের মত
অথবা আমার নির্ঘুম চোখের মত
সুন্দর এই রাত।

পৃথিবী এত নিস্তব্ধ
ঝিঝিরা তা অবিশ্বাস করে,
বাগিচার গুল্মরাজি বিশ্বাস করে;
তবে তাদের কেউ
বিশ্বাসের অমর্যাদা করে না।

হস্তিযূথ কখনোবা নেমে আসে
প্রতিবেশীদের ভিটে হতে আমাদের আঙ্গিনায়।
চলেও যায়, তাড়াতেও হয়।
সরীসৃপদের তাড়ানো যায় না
ঘিরে ধরে আমার তালপাতার প্রাসাদ।

এখন রাত,
অসীম চাওয়ার মত,
কিছুটা পাওয়ার মত,
সুন্দর সকালের তরে
ঘুরে দাঁড়াবার স্বাদ।

খোঁজ খবর 
 হান্নান হামিদ লিখন

যাকে মহার্ঘ ভেবেছি
মহান হবার লেশ মাত্র
মোহ তার মাঝে ছিলোনা কোথাও

যাকে ভেবেছি আলোর ঝর্ণা,
কখনো দেখেনি সে সূর্য বলয়,
চকচকে রোদ মাখা গরম দুপুর !

যাকে শেখাবো ভেবেছি
রিকশা যাপন, তপ্ত জনপদ,
সে কখনো মানুষ দেখেনি,
নিজেকেও না !
আমি তবে ফিরবো কোথায় ?
যাবো কার কাছে ?
যে রকম আমি চাই, ঠিক সে রকম
আছে কি কোথাও !
কোথায় আছে ?

নিভৃত আলোতে 
মোঃ সরোয়ার জাহান
উচ্ছাসিত যৌবন
বিষ দগ্ধ নীল রক্তস্রোতে
অবজ্ঞায় কঠোর ভর্ৎসনায়
নিরন্তর তৃষ্ণা শুধু রহস্যের ইন্দ্রজালে !
                   
প্রচ্ছন্ন প্রান অবিচল
পৃথিবীর প্রথম যৌবনে
শুধু তোমাকে চেয়েছিলাম নারী!

স্হির স্বচ্ছতায়
হৃদয়ের নিভৃত আলোতে…!

1 টি মন্তব্য:

  1. সাবরিনা সিরাজী তিতিরের লেখা সবচে ভাল লেগেছে। উনার লেখা উনার মতই স্নিগ্ধ ও মাধুর্যমন্ডিত !!

    উত্তরমুছুন