ডা.সুরাইয়া হেলেন,মুনীব রেজওয়ান,অনুপম দাশ শর্মা, শৈলেন্দ্র প্রসাদ চৌধুরী মানিক,আলী রেজা ,সায়ক চক্রবর্তী,শুভ বাবর,রহমান হেনরী ,সৌভিক দা', পর্না,আহম্মেদ রফিক এবং সাবরিনা সিরাজী তিতির।
জাদুঘর

নিজেরই ভেতরে।
বিষয়আশয় যত কামনাবাসনা সবই পুরাকীর্তি প্রত্ন-নিদর্শন
শবাধারে শুয়ে আছে শিমুল পলাশ শাল মহুয়ার বন
গুছিয়ে রেখেছি যত্নে বলপেন পেন্সিল এবং বইখাতা
পাখির পালক কিছু অমলধবল প্রত্ন-পান্ডুলিপি আর ঝরাপাতা
আকাশটা ছুঁয়ে আছে পাথর খোদাই দিব্য আইকন পাহাড় প্রমাণ
গুহার ভেতর একটা স্বপ্নশেকল বাঁধা প্রাণদন্ডিত প্রত্ন-প্রাণ।
বিসর্জিত ইচ্ছাশক্তি ক্ষুধা-তৃষ্ণা উচ্চাকাংখা পরিকল্পনা
গেল দুই শতকের দেয়ানেয়া অসংখ্য অগোনা
সাদাকালো রংচটা স্বচ্ছ অস্বচ্ছ ছবি অলৌকিক এক য়্যালবাম
বাক্সভর্তি গদ্যপদ্য চিঠিপত্র,গানের ক্যাসেট সিডি,খাম।
সত্তর দশকটাকে মুক্তিদশক বলা কাণ্ডজ্ঞানহীন লিফ্লেট
তূর্ণানিশীথা আর জলযান অস্ট্রিচের পুরনো টিকেট
হোটেল রেস্তোরা বিল শপিং ব্যাগ ভাউচার
সমুদ্র, সূর্যাস্তদৃশ্য মহাজাগতিক জ্যোতি দিব্য অন্ধকার।
রাতের গভীরে দেখা রাতভোর নতুন প্রভাত
একহাতে চিরায়তা অন্যহাতে শঙ্খনীল রাত
সাজিয়ে রেখেছি আরো কত কী যে রেললাইনের দুই ধারে
গাছের ছায়ার নিচে নদীদের এপারে ওপারে।
গেল দুই শতকের দেয়ানেয়া অসংখ্য অগোনা
সাদাকালো রংচটা স্বচ্ছ অস্বচ্ছ ছবি অলৌকিক এক য়্যালবাম
বাক্সভর্তি গদ্যপদ্য চিঠিপত্র,গানের ক্যাসেট সিডি,খাম।
সত্তর দশকটাকে মুক্তিদশক বলা কাণ্ডজ্ঞানহীন লিফ্লেট
তূর্ণানিশীথা আর জলযান অস্ট্রিচের পুরনো টিকেট
হোটেল রেস্তোরা বিল শপিং ব্যাগ ভাউচার
সমুদ্র, সূর্যাস্তদৃশ্য মহাজাগতিক জ্যোতি দিব্য অন্ধকার।
রাতের গভীরে দেখা রাতভোর নতুন প্রভাত
একহাতে চিরায়তা অন্যহাতে শঙ্খনীল রাত
সাজিয়ে রেখেছি আরো কত কী যে রেললাইনের দুই ধারে
গাছের ছায়ার নিচে নদীদের এপারে ওপারে।
যত
দেখা
ফিরে
দেখা
ফেরার
অতীত
আলোবর্ষ পেছনে
প্রদোষে প্রাগিতিহাসে অন্ধকারের কোণে কোণে
যতদূর যাই একই জলমগ্ন স্মৃতিসত্তা অতলান্তিকতা
রাজনীতি অর্থনীতি মৃত্যু অপমৃত্যু মনুষ্যত্ব-প্রান্তিকতা
পূর্বরাত্রি পূর্বদিন দশদিক দিগন্তর সাজিয়ে রেখেছি সযতনে
তীর্থে তীর্থে স্তব্ধযাত্রা সায়াহ্ন-সন্ধ্যার সন্ধিক্ষণে।
কোন দর্শনার্থী নেই রাত্রি হয় হয়—
তবে কি এসেই গেল প্রদর্শনী বন্ধের সময়?
প্রদোষে প্রাগিতিহাসে অন্ধকারের কোণে কোণে
যতদূর যাই একই জলমগ্ন স্মৃতিসত্তা অতলান্তিকতা
রাজনীতি অর্থনীতি মৃত্যু অপমৃত্যু মনুষ্যত্ব-প্রান্তিকতা
পূর্বরাত্রি পূর্বদিন দশদিক দিগন্তর সাজিয়ে রেখেছি সযতনে
তীর্থে তীর্থে স্তব্ধযাত্রা সায়াহ্ন-সন্ধ্যার সন্ধিক্ষণে।
কোন দর্শনার্থী নেই রাত্রি হয় হয়—
তবে কি এসেই গেল প্রদর্শনী বন্ধের সময়?
মধ্যরাত
ডান হাতের বাম
আঙ্গুলটা থেমে থাকে
হঠাৎ ফেইসবুকে
ওর ছবি দেখে!
চোখ বরফ হয়ে গলতে
থাকে
মফস্ল শহরের টাউন
হলের
সিঙ্গারা আর চায়ের
কথা
সল্ট লেকের মধ্য
রাতের বাড়ি ফেরার কথা
চামেলী গাছের
ফটকের সামনে থেমে যায় পা
চেয়ে দেখি জানালায়
দাড়িয়ে থাকা অপেক্ষার জয়ন্তীর মুখ !
উচ্চ-মধ্য-নিম্নবিত্ত
ডা.সুরাইয়া হেলেন
ভালোবাসি না ভালোবাসি না,
ভালোবাসার মূল্য এক কানাকড়িও না !
গিভ এন্ড টেক,
কর হ্যান্ডশেক ।
বর ইন্ডাস্ট্রির ম্যানেজিং ডিরেক্টর
বউ সেখানে ডিরেক্টর-ডিক্টেটর !
টাকা পয়সা বড় ফ্যাক্টর,
তা নয়তো করবো না ঘর
জ্বর এসেছে ? চল সিঙ্গাপুর,
এইতো কাছে, নয়তো দূর !
মধ্যবিত্ত
স্বামী করে টাকা রোজগার,
স্ত্রী ঘরের কেয়ারটেকার !
ভাত কাপড়ের বদলে,
এমন দাসী আর কি মেলে ?
দেবে আর নেবে, মিলবে মিলাবে,
নইলে এ তাসের ঘর ভেঙে যাবে
নিম্নবিত্ত
গরীব ঘরে আরো বালাই
ভাত-কাপড় দেয়ার মুরোদ নাই,
কিল মারবার বড় গোঁসাই।
চারদিকে শুধু নাই নাই নাই,
টাকাও নাই ভাতও নাই ।
ভালোবাসার কোনো দরকারও নাই।
অভাব দাঁড়িয়ে ঘরের দরজায়,
জানালা দিয়ে ভালোবাসা পালায়।
এভাবেই একদিন ঘর ভেঙে যায়।
জল, জাল, জ্বালা

মাকড়ের মত সুতো ছড়াতে ছড়াতে
তুমি আর আমি দুজনেই দেখো
কেমন ঝুলে গেছি উঁচু নিমগাছটার ডালে।
বলেছিলাম সুতো অতো ছেড়না---
মাকড় স্বভাব!—সুতো ছেড়ে জালেতে নকশি আঁকা
আমি শুধু রপ্ত করে গেছি অন্ধ অনুকরণ
মাক্কু মেরে মেরে দুজনেই বানিয়েছি মাকড়ের ঘর দোর
জালে এখন আটকে যাচ্ছে সকল প্রজাতির পোকা
কিছু কিছু মেঘ আর আকাশ ছিঁড়ে খুঁড়ে বিজলির নাচ।
কেবল দুলছি ডিঙ্গি নৌকোর মতো—জল, জাল আর জ্বালা
পরস্পর নিয়মিত ব্যবধানে, অন্তর্বাসে আড়াল নিশ্চিত রাখি
টইটুম্বুর চোখে---সকল গণিত ভুলে দুজন মানুষ
দুজনের নিবেদিত অস্তিত্বের দিকে কেমন তাকিয়ে আছি
ডুবু নৌকোর মাস্তুল শুধু জেগে আছে---চোখের মতন।
আমি আছি---তুমি আছো---পাশাপাশি আগেরই মত
তৃষ্ণায় কমতি নেই— পানপাত্র খানিকটা সরে গেছে দূরে।
পেয়েছি
কবিতা
-অনুপম দাশ শর্মা
তোমার কাছে চেয়েছিলাম একটি কবিতার চারা
ফাগুনের মিনারে উড়ল অভিমানী চাঁদগোধূলি ছড়াল পাখনা ধ্রুপদী মুগ্ধতায়।
বলেছিলাম ভেসো ব্যলকনি আবডালে
রোদের ঝালর লুকোচুরি খেলে
আলোছায়া নাভিতলে।
খেজুরপাতায় সোনালী আতর
সর্ষে ফুলের গন্ধে যখন ভাদর নাচায়,
বাদামী আকাঙ্ক্ষায় তুমিও ফেনিল ঢেউ
আলুথালু বৈচিত্র্যে নিরাবরণ সিক্ত
উপমায় ভাসছ, তখনি স্বর সরগম
উদ্দাম রতি জঙ্ঘায়।
বানভাসি মাধুর্যে চেতনার রং কাঁচারোদ
বুকজল আহ্লাদে ক্রমশ গ্রাসস্থ হই,
তোমার ডালিমাভা ওষ্ঠভ্রুণে
কবিতাকে পাই অবশেষে
কিন্নরী ইমনরাগে..!
তোমাকে আসতেই হবে
-শৈলেন্দ্র প্রসাদ চৌধুরী মানিক

পৃথিবীর বুকে কান পেতে শুনি
গত অতীতের ব্যথা ,
পৃথিবী সব মনে রাখেগত অতীতের ব্যথা ,
তাই কান পেতে শুনি !
যে দিন দখিন দুয়ার গিয়েছিল খুলি
আমি চেয়ে ছিলেম তুমি আসবে ,
তুমি আসো নাই !
এমন তো কথা ছিল না !
তুমি আসবে বলে আমার খোকারা
অপেক্ষায় ছিল !
ওরা তোমায় গান শোনাতো
বলতো তোমার কথা ,আমার কথা,
আমাদের কথা !
আজ আমার খোকার চোখে জল
এক তুমি আসনাই বলে !
খোকা , আমার খোকারা ,
আর কেঁদো না ।
এক দিন ওকে আসতেই হবে
ঠিক তোমাদের কাছে !
আজ আমি চলেছি কোথায়
কোথায় গিয়ে পথ হবে শেষ
তা খোকারাই বলে দেবে
অযুত খোকারা আজ জেগে
পথের বাঁকে বাঁকে গাইছে-
"আমরা করবো জয় ..."
আমার সকল আদর-
আমার সব ভালবাসা -
আমার সকল প্রত্যয় -
আমার সকল শিক্ষা -
আমার সব রক্ত -
সব ,সব খোকাদের জন্য!
তোমাকে আসতেই হবে !
দেখবে পৃথিবীও গাইছে
মানব ও প্রকৃতির মুক্তির গান
এসো এক সাথে কণ্ঠ মিলাই:
"...মিলাবে মানবজাত ।।"
যে দিন দখিন দুয়ার গিয়েছিল খুলি
আমি চেয়ে ছিলেম তুমি আসবে ,
তুমি আসো নাই !
এমন তো কথা ছিল না !
তুমি আসবে বলে আমার খোকারা
অপেক্ষায় ছিল !
ওরা তোমায় গান শোনাতো
বলতো তোমার কথা ,আমার কথা,
আমাদের কথা !
আজ আমার খোকার চোখে জল
এক তুমি আসনাই বলে !
খোকা , আমার খোকারা ,
আর কেঁদো না ।
এক দিন ওকে আসতেই হবে
ঠিক তোমাদের কাছে !
আজ আমি চলেছি কোথায়
কোথায় গিয়ে পথ হবে শেষ
তা খোকারাই বলে দেবে
অযুত খোকারা আজ জেগে
পথের বাঁকে বাঁকে গাইছে-
"আমরা করবো জয় ..."
আমার সকল আদর-
আমার সব ভালবাসা -
আমার সকল প্রত্যয় -
আমার সকল শিক্ষা -
আমার সব রক্ত -
সব ,সব খোকাদের জন্য!
তোমাকে আসতেই হবে !
দেখবে পৃথিবীও গাইছে
মানব ও প্রকৃতির মুক্তির গান
এসো এক সাথে কণ্ঠ মিলাই:
"...মিলাবে মানবজাত ।।"
উয়ারী-বট্টেশ্বর
ধাবমান অশ্বক্ষুর ধূলিঝড় তোলে
টানটান ধনুকের জ্যামিতিক ঠোঁটে;
তৃণভেজা অবগুন্ঠনে আবৃত অধীর অপেক্ষা –
কাল রাতে স্বপ্ন খেতে খেতে ভুলে গেছি
তাহাদের কথা তোমাদের কথা;
তুমিও বলতে চক্ষু-সীমানার বাইরে গেলে
অন্তহীন পটভূমি মুছে যায় হরিৎ শস্যের
খড়ের কোরকে গুঁজে রাখা গোপন আগুনে;
দুই-দুয়ারী ঘরে হ্রেষার ধ্বনি ভেঙ্গে
পৌঁছে গেছি পূর্বপুরুষের দিকচক্রবালে –
প্রত্ন-মৃৎপাত্রে সোমরস নেই
শিশিরের ঘ্রাণ লেগে আছে শুধু
উয়ারী-বট্টেশ্বর মৃত্তিকার গভীরে।
টানটান ধনুকের জ্যামিতিক ঠোঁটে;
তৃণভেজা অবগুন্ঠনে আবৃত অধীর অপেক্ষা –
কাল রাতে স্বপ্ন খেতে খেতে ভুলে গেছি
তাহাদের কথা তোমাদের কথা;
তুমিও বলতে চক্ষু-সীমানার বাইরে গেলে
অন্তহীন পটভূমি মুছে যায় হরিৎ শস্যের
খড়ের কোরকে গুঁজে রাখা গোপন আগুনে;
দুই-দুয়ারী ঘরে হ্রেষার ধ্বনি ভেঙ্গে
পৌঁছে গেছি পূর্বপুরুষের দিকচক্রবালে –
প্রত্ন-মৃৎপাত্রে সোমরস নেই
শিশিরের ঘ্রাণ লেগে আছে শুধু
উয়ারী-বট্টেশ্বর মৃত্তিকার গভীরে।
মর্গসংক্রান্ত
-সায়ক চক্রবর্তী

পোয়াতি রাত এই যন্ত্রণায় – সকাল প্রসব করবে বলে,
মানুষেরা হেঁটে যাবে গায়ে মেখে আধপাকা রোদ্দুর।
চোষে মৃত-ঠোঁট – জীবন্ত পাখীর ঠোঁট তীক্ষ্ণ – জ্বলে
যায় পাখা কারও কারও – উড়তে থাকে মাটিতে।
সাজানো মর্গের ভিড়ে শীৎকার – ইজ্জত গেলে
আদালতে উকিল লম্পট – জামিন অনর্থক।
এসো আজ গাছে আছে ঝুলি – ছিঁড়ে ফেলে তাবৎ
স্নায়ুর ফাঁদ – পূর্বপুরুষের মানরক্ষা করি।
পেট বলে কথা, সংসার,ও মায়াবতী বউ
-শুভ বাবর
নিজেকে রক্তাক্ত করে দেখেছি বহুবার ,
হলদে পানি মদের নেশায় চূর ঘুম ঘুম একলা
মাতাল হয়ে বাড়ি ফেরা হয়নি কত রাত পৃথিবী
ঘুমালেও চেতনা স্বপ্নের হাল ছাড়েনি ,
প্রকাশ্য দিবালোকে চড় খেয়ে দেখেছি ভালবাসা
সজীব হয় কিনা, মজা করেছো ৷
গোলাপের টবে গুড়ো চায়ের পাতা হয়েছি
একটি সুগন্ধ সুরভিত ফুলের আশায় ,পাইনি
বংশী নদীর পাড়ে গন্ধহীন বেনামি কত নাম না জানা
দৃষ্টিনন্দন দুধসাদা রঙের ফুলে
বুক পেতে সুভাস নিয়েছি কত দীর্ঘশ্বাস ছাড়া৷
কিছুই মেলেনি তাতে ,অযথা হয়রানি ৷
একজন সাদা মনের মানুষের খোঁজে কেটে গেছে সাঁরাবেলা ,
সন্ধ্যায় সাদা বক উড়ে যায় ঝিলের জলে ,
শহরে হাজার নতুনের ভিড়ে অসহায় ল্যাম্পপোস্টের
মত নতজানু হয়ে দাড়িয়ে থাকি ,
কখন জ্বলবে আলো ৷অসময়ের নিয়ন বাতি
মাঝ বয়সী পুরোহিত একই যৌনকামনায় ভুগে ৷
পর্দার আড়ালে জীবন উদয়-ঊষার শীষ-মহলে ,
রাতের আঁধারে রূপ-অপরূপের ক্ষুধা ,
ইতিহাসে-বিলুপ্ত. তুচ্ছ এক মধ্যাহ্নের আলস্য-
আবিষ্ট রৌদ্রে অকাল ঘুমের একখানি ছবি
মুগ্ধ আলো ভরা দুটি চোখ। জগতজোড়া ছুটছে মানুষ;
লুটে করে নেয় অন্যের সম্পদ যত,
কারো সাথে কোন কথা নেই ,বিধাতা যা লুকান লজ্জায়
দেখতে যাই হোক মানবের ওটাই চাই ৷
কাপুরুষ নাটকে তাড়াতাড়ি দৃশ্যপট পরিবর্তন হবে ,
গোপন প্রিয়ার ঠোঁটে খুব গোপনে চুমু খায়
নির্লজ্জ তাও জানতে পারিনি ,বুকের মধ্যে কাহার বাস ,
কে খামছে ধরে প্রতি রাতে ঘুমের মধ্যে৷
কিছুই চাইনা ,কিছুই জানতেও চাইনা ,কামুক পুরুষ
সাবধানী ধৃত শয়তানে কিছুই জানতে চায়না,
বোঝার বেলায় সব বুঝে সব জানে, বিকৃত রুচির পুরুষ
অভিসারে জানে শুধু স্ত্রীর উরুর উপর
আরোহণ করতে ,গোলাপি ঠোঁটে চুম্বন করতে কোমল স্তনে মুখ লুকাতে
ভূমি সমতল জরায়ুকে কিছু সময়ের জন্য ফুলিয়ে দিতে,
এর বেশী আর কিছুই জানেনা ,পেট বলে কথা, সংসার,ও মায়াবতী বউ, ৷
ডাকাতি
-রহমান হেনরী
অমারাত্রে, ভিখারীটির ঘরে
ডাকাত এলো, চোর ও রাজার ছেলে,
বললো: "রে, তোর মেয়েটি সেকেলে;
ওকে একটু সাজতে-গুজতে বল!"
মেয়ের দেহে, মেয়ের মনে,
উঠানে-কদম্ববনে,
তখন বৃষ্টি ঝরে...
গোঙানী নেই, ফোঁপানী নেই,
শুধু মেয়ের__ দু'চোখ ছলোছল,
বিনা মেঘেই
অন্ধকারে বিজুলী চমকায়;
মেয়েকে তো ঘরে রাখাই দায়!
সংসার !
- সৌভিক দা'

হয়ত আমরা মৃত্যু থেকে শৈশবের দিকে
যৌবন থেকে জন্মের দিকে
উলটো হাঁটা শুরু করেছি পথে...
শরীরের সম্পাদ্য পড়ে ফেলে সব
মনের উপপাদ্যের দিকে চেয়ে আছি -
: তুমি আর আমি
চেয়ে আছি তৃষিত বিকেল !
হায় ! এক একটি পরিতৃপ্ত সঙ্গম শেষে প্রতিরাতে
আমরা আমাদের বিছানায় . বেডরুমে . রান্নাঘরে
এখানে . ওখানে
যুগল দু'জনে
কী যেন খুঁজি, কী যেন নেই :
কী যেন থাকা উচিত ছিল
ভীষন জরুরী
দীর্ঘশ্বাস বায়ুমণ্ডলে ঘুরপাক ঘুরপাক...
ছাই হয়ে উড়ে যাক, ধোয়া হয়ে মিশে যাক -
ভীষন একাকী থাক ভৈরবের পাড় !!
(অসমাপ্ত)
“ তোমার চোখের মায়া ”

- পর্না
রিম, তোমার ঐ সুন্দর দু’চোখে কাজল
না দিলেও পারতে,
আমি তো এমনিতেই পাগল !
যদিও আমি দেখেছি ঐ চোখে
শরত হেমন্ত শীত ও বসন্ত,
দেখেছি ওখানে সমুদ্রের মোহিনী লহর
দেখেছি কাঞ্চনজঙ্ঘার তুষারপাত-ও !
তোমার হরিণ চোখে মায়াবী মায়া,
মেঘেরা খেলা করে অনায়াসে,
চোখের আলোকে বিদ্যুৎ চমকায়,
না চাইলেও হারিয়ে যাই !
কতদিন ঐ চোখে বৃষ্টি দেখবো বলে
চাতক পাখির অপেক্ষা,
মুক্তোদানা কুড়িয়ে নিতে-
এক প্যাকেট ন্যাপকিন কিনেছি সযত্নে !
যখন ক্লান্ত অবসন্ন তোমার কাছে ফিরি,
তোমার স্নিগ্ধ চোখে মমতা ঝরে,
কখনোবা দুষ্টুমির ঝিলিক খেলে যায়,
ভালোবাসা উপচে পড়ে অফুরান !
তোমার নীরব চাহনি কাছে ডাকে,
তোমার অবুঝ চোখে হৃদয় ভাঙ্গে,
তোমার নীল চোখে ময়ূর নাচে,
তোমার উদাসী চোখে হারিয়ে যাই !
আজ হটাৎ দেখি –
তোমার সুন্দর দু’চোখের মাঝ কপালে
টকটকে লাল সূর্য টিপ...
হৃদয়ের গভীরে বিপদ সংকেত...
তাই এ-জন্মে তোমাকে আর
কিছুই বলা হল না রিম !!!
বেলুন উড়ে যাই
-আহম্মেদ রফিক

ফানুস উড়াই;
দৌড়াতে দৌড়াতে ফিরি-
গতদিনের হিসাবে মেলেনি দু'পয়সা;
কত আর ধার করে চলা ?
তোমার বুকের ভিতর স্বপ্ন,
আকাশের বুকে বাঁধবে নীড়;
নদীর বুকে যার ছায়া থাকবে,
অবগাহন করবে জনপদ,
শোধ হবে ভালোবাসার ঋণ ।
আকাশের মাঝে ঘুরি ফানুস,
কখন চুপসে যাই- ঠিক নাই!
ধার শোধের বাজারে অস্থির ।
ঋণের ডামাডোলে ভড়কে যাই,
বার বার পিছিয়ে পড়ে আবার দৌড়াই ।
সামনে ঝুলে থাকে স্বপ্ন-
তোমার অব্যাহতি নাই;
আমি সিক্ত হই তোমার লালে....
প্রতিদিন দৌড়াই,
বেলুনের মত উড়ে উড়ে যাই ।
২০/০৯/১১.
আমার পৃথিবীতে একদম বৃষ্টি হচ্ছে না
-সাবরিনা সিরাজী তিতির

সেই কবে একবার মেঘেরা নেমেছিলো মাটির আঁচলে !
প্রাসাদের নর্তকীর নূপুরের মতো

তোমাদের টিনের চালটার উপরে ,
মনে আছে তোমার ?
মস্ত বিনুনি দুলিয়ে
খুব আনমনে গান গাইতে গাইতে দুলছিলে দোলনায়
আমার বোকাসোকা মনও তোমার সাথে দুলে উঠছিলো বারবার ।
সেই সময় আমার মূর্খ বাপজানের সাথে জমির আলাপে
বিশেষ ব্যস্ত তোমার বাবা ।
আমি তখন আট ক্লাসের ছাত্র
বন্ধকের কাগজ পড়বার জন্য বাপের সাথে আমার আগমন
বুবু'র যৌতুকের টাকা দেবে তোমার বাবা
বিনিময়ে একটা টিপসই ।
ঠিক এমন সময় সেই বৃষ্টিটা এলো
আমার চোখ তখন তোমার সাহসী বেণীর সাথে বাতাসের গায়ে ঢেউ তুলছে
বৃষ্টির জল তোমাকে ছুঁতেই তুমি হয়ে উঠলে এক মায়া হরিণ
তোমার অস্থিরতায় ভিজে যাওয়া কিশোর চোখ
হারিয়েছিল সমস্ত বোধ !
কখন বাপজান যে টিপসই দিলো
অনেক ভেবেও মনে করতে পারিনি
শুধু মনে পড়ে সেই বৃষ্টিটা !
যেদিন ভিটে দখলে তোমার বাবার লোকেরা এলে
বাপজান অদ্ভুত এক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলেন আমার দিকে
উদ্ভ্রান্ত সেই চোখ প্রশ্নের সামনে
কেঁপে উঠেছিলাম সবটুকু আমি !
মায়া হরিণের উচ্ছলতা ঘৃণার বীজ বুনতে শুরু করলো
জন্ম নিলো অনেক প্রশ্ন -
তুমি কি তোমার বাবার ভাড়া করা লোকদের একজন !
নইলে ওই সময়েই কেন দোলনায় তুমি
সবদিনই এমন বেণী দুলিয়ে দোলনায় গান করো ?
কিশোর বেলাতেই নিজেকে কারো খেলনা ভেবে ফেললাম ।
অবাধ্য রাগ সেদিন তোমায় ছুঁয়েছিলো কিনা জানিনা
তবে বৃষ্টি ভুলে গেছি আমি !
মাঝে মাঝে দেখি আকাশ থেকে মন খারাপ নেমে আসে
অনেকে সেগুলোকে বৃষ্টি বললেও
আমার কাছে ওটা তোমাদের ষড়যন্ত্রের অংশ মনে হয় !
আমার বৃষ্টি থেমে গেছে তোমাদের টিনের চালে
ওকে খুঁজতে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে
তোমাদের মস্ত নতুন দালানের অহমিকায়
ওই দালানে আমার বসত বাড়ির দীর্ঘশ্বাস শুনতেই
পালিয়ে এসেছিলাম কাপুরুষ আমি ;
নিজেকে অভিশাপ দেই
এই চোখ খুবলে নিতে চাই
ধ্বংস করতে দিতে চাই সেই মন
যা এখন মুখর লম্বা বেণীর দাপুটে কোলাহলে !
যতোই নামুক বৃষ্টি আমি আর ভিজবো না
আর দেখবো না তোমার দোলনায় চলাচল
আমি খুব অপেক্ষা করি বৃষ্টির
আমার আমিকে শাস্তি দিয়ে বৃষ্টি কোথায় যে হারালো !
কালো কালো ফোঁটায় মেঘেরা কাঁদুক
আমি সব ছেড়ে সেই ভাগ্য বদলের কাগজ হাতে নেবো
তোমার বাবার লেখা সাধারণ কিছু কথা
অসাধারণ হবার আগেই চোখ সরাবো তোমার ষড়যন্ত্র থেকে
কিছুতেই ভুল হবে না আর
তোমার দোলনা , তোমার উদ্ধত গানের সুর
সব ভেসে যাক
আমি শুধু সেই কাগজ টা পড়বো
আট ক্লাস পড়া চোখে থামিয়ে দেবো ভাগ্যের বদলে যাওয়া !