ঢাকা, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০১৩, ২৩ চৈত্র ১৪১৯, ৩১তম সংখ্যা।

আজ প্রকাশিত হলো ৩১তম সংখ্যা, আছে মোট ১৭ কবিতা, লিখেছেন- এম আর ফারজানা,অমিতাভ দাশ,মৌসুমী সেন,রেজওয়ান তানিম, রত্নদীপা দে ঘোষ,অনুপম দাশশর্মা,সৌমিত্র ঘোষ,ইন্দ্রানী সরকার,চৌধুরী ফাহাদ,সায়ক চক্রবর্তী,আলী আফজাল খান,শ্রীশুভ্র,আদর ভুঁইয়া,রূম্পা শিমুল,সোহান সরকার,শামীম পারভেজ এবং মোঃসরোয়ার জাহান ।


স্বাধীনতা আমার

এম আর ফারজানা

স্বাধীনতা আমার উত্তাল সমুদ্রের
দক্ষ নাবিকের আলোর দিশা।
স্বাধীনতা আমার মায়ের আঁচলের
মমতায় জড়ানো পরশ শিখা।
স্বাধীনতা আমার অবুঝ কিশোরীর
নিষ্পাপ মুখের সরল হাসি।
স্বাধীনতা আমার মুক্তিসেনার
দক্ষ শ্লোগান রাশি রাশি
স্বাধীনতা আমার সবুজ ধানের
ঢেউ খেলানো উদিত হাওয়া।
স্বাধীনতা আমার সাহসী বাঙ্গালীর
লক্ষ্য প্রাণের পরম পাওয়া।
স্বাধীনতা আমার ইতিহাসের
সুরক্ষিত সতেজ দলিল।
স্বাধীনতা আমার হাজার শব্দের
কথা মালার দৃপ্ত মিছিল ।।


 ঘাসফুল
অমিতাভ দাশ

তিসতা...
সবাই জানতে চাইছে তো?

জানতে চাইছে...
সেই আমাদের আশ্চর্য দিন গুলির
রহস্য...

তাই
আমি সে গুলিকে
মেঘের মধ্যে পুরে আজ
পাঠিয়ে দিলাম
সাহারা মরুভূমির দিকে

জানো তো
খুউব নাকি আশ্চর্য রকমের
বৃষ্টি সেখানে এখন !

আচ্ছা বলো!
বরিষণ-স্নাত কোন সকালে
যদি সারা সাহারা
ঘাসফুলে ... ভরে যায়
লোকজন বুঝবে,
বুঝবে না? বলো?

আমাদের ভালবাসা
ছিল
কত সহজ
অথচ...স্বমহিমায় উজ্জ্বল !



নীল দীপে প্রজাপতি

মৌসুমী সেন


কখন যে ব্যাকুলতার রঙে ভরে গেছে
আমার হৃদয় গভীরের সুপ্ত ইনবক্স
আমি তা টেরই পাইনি !
হয়তো মনের অজান্তেই
ভরে গেছে বাহারি অনুভূতিতে;
তার সূত্র ধরেই
তৈরি হয়েছে সংগোপনে
আমার চোখের
প্লাবিত অঝোর ফোয়ারা

তুমি এতো মনোযোগে আমায়
গড়ে তুলতে গিয়েও,
শেষ পর্যন্ত ভুল রংতুলিতে এঁকে দিলে
আমার হৃদয়ের অন্তগহীন ক্যানভাস !

কোথায় তুমি শীতলতার রঙে আঁকবে আমায়
তোমার মনের সবটুকু মাধুরী মিশিয়ে,
তা না করে তুমি সাজালে
তোমার খেয়ালে খুশিতে

মনের সাদা কাগজের
দৈর্ঘ্য প্রস্থ নেই হয়তো;
রংতুলিতে আঁকা ছবির
পরিমাপ তো তোমার শিল্পে,
প্রজ্বলিত সে তার সাবলীলতায়;
সেখানে বর্ডার ভেদ করে
যদি তুমি রঙ করো,
কাগজের দোষ দিয়ে আর কি করবে বলো

আজ আমার বেদনার্ত হৃদয়
নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে অগ্নিদগ্ধতায়;
এই অগ্নিরঙ যেন
রৌদ্র দ্বীপ্ততায় বড় বেশী জোরালো,
নীলাভ আভাটুকু বিলুপ্ত যেন এই দহতায়

হৃদয় তপোবনে
আজ অনুভূতির বিশেষণগুলো
টুকরো কাঠ কয়লার মতো
আমায় নিষ্পেষিত করছে,
যদিও জন্ম আমার শ্মশান স্তূপে !!
এখানকার বহু পুরনো পরিচারিকা আমি,
পড়ে আছি এখানে শুধুমাত্র পরমেশ্বরের জন্য;
মাঝে মাঝে এখানে তিনি আসেন
একবার এই জীবনে
ক্ষণকালের জন্য
দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল তাকে,
ত্রি-চোখ নয়নে
ত্রিবেদী পরিধানে
সেই মুহূর্ত সময়
নীলে নীলে অকুণ্ঠ তার গায়ের বরণ,
অমানিশার ঘোর আঁধারেও
খুব চিকচিকে সেই নীলকণ্ঠকে...
একটি মাটির দীপ জ্বালিয়ে
সন্তর্পণে গুটি গুটি পায়ে,
এগিয়ে গেলাম দেখার অভিলাষে

ধ্যানমগ্ন শ্মশানপুরী;
অকস্মাৎ এক প্রজাপতি
ক্লান্ত শরীরে উড়ে এসে বসলো
ক্ষীণ দীপের প্রজ্বলিত সলতের উপর !
নিভে গেল দীপশিখাটি

আমি আত্মচিৎকারে যখন
পরমেশ্বর পরমেশ্বর বলে ডাকলাম
আতংকিতে চোখের পাতা বন্ধ হলো;
চোখ খুলতে দেখি
সেই নীল প্রতিমূর্তি সেখানে নেই !
নিভে যাওয়া দীপটি
পড়ে আছে ভীষণ অসহায়ত্বে...
প্রজাপতির শবদেহটি সৎকারের প্রতীক্ষায়

আমি আজো এখানে বসে আছি
তেমন একটি সময়ের আশায়;
যদি ফিরে আসে, আবার সেই নীল !
জ্বলে উঠে দীপ !
ফিরে আসে
আবার তেমন এক অতিথি প্রজাপতি
তবে, ভরে উঠবে মনবীথি,
নীল দীপে প্রজাপতি ।।


 

বিষাদ দিনের কথা

রেজওয়ান তানিম



বিষাদের পপলার পাতাগুলো
অশ্রু লুকায়, ঝরে পড়ে
মুচমুচে পাঁপড় হয়ে , প্রতিটি
শীতের শিশির আসবার আগে

প্রাণের প্রাচুর্যে পূর্ণ হৃদয়,
নি:শেষ হয় একদিন, শুষ্কতার সঙ্গমে !
তার পরিণতি বিদ্যমান, ছোট্ট অথচ,
প্রবাহিত অর্থবহ জীবনে

সংজ্ঞাহীন একাকীত্বের
হিম সমুদ্রে, ডোবে যে বালক
আলেয়া করে না স্পর্শ তারে
অনাহূত জোছনার ছলে



বসত

রত্নদীপা দে ঘোষ


করুন জলাশয়ের মতো তোমাতে ঘুরে আসি বারবার সে ভ্রমণ মুঠোময় পাখির অনুচ্চার শোক
মুগ্ধ দেবালয়ের বাতায়ন খুলে কি নিপুণ অশ্বমেধ ! তুলির এক টানে তুমি সূর্য আঁকছ শিশিরমদিরায় ,
এমনকি আকাশমণি ফুলের বৃন্তে ছড়িয়ে দিচ্ছ আটপৌরে জ্বর আমি দেখি তোমার খনন , আহরণ , স্মৃতি আমি দেখি অনাবাসী পিপাসার বালুকাসরণি ... শাওনঝরার অরণ্য , ঝাঁ চকচকে নতুন বৃক্ষাবলী ......

আমাদের সঙ্গীতে পলাশের তানপুরা
আমাদের আগুনে রাত জড়ানো গলায় বেগম আখতার
আমাদের শীতে ফিনফিনে পাহাড়তলির কমলামানুষ

শরীরে এখন হাল্কা হয়ে ফুটেছে মেঘহরিণ
সূর্যাস্তে খুলেছি চোখের নিবু ইস্তেহার ... দিগন্ত সবুজ সোনার গুঁড়োকলম
জল কেটে কেটে ইতির কলামে দ্রুত এগিয়ে আসছে পোড়ামাটির দ্রবণনৌকো

আর আকাশী সুতোয় আল্লাহর বসত বুনছো তুমি ......



এসো বুলবুল

অনুপম দাশশর্মা

জোৎস্নার বালুকায় ভাসিনি কখনও
আলতো আঙ্গুলে পড়েনি মৃদু চাপ
নিশ্চুপ আল ধরে হারিয়ে যেতে যেতে
শুধু পর পর খুলেছি কল্পনার ছাপ।

জল পায়ে গুঁড়ি গুঁড়ি ইচ্ছা হেঁটেছে
একে একে উল্টেছে বসন্ত পাতা
সূর্যের মুখ ফেরা দিনান্ত প্রাচীরে
চকখড়ি এঁকেছে দমভরা ব্যথা।

কামনার শাড়ি ফাঁকে ভুলেও হাঁটিনি
ফাগের বুনিয়াদে নিয়েছি ফুল
একরাশ ভাবঘুমে অক্ষর বুনে
দোলনার শূন্য সাজে ডাকি বুলবুল।
.



.
অন্তরা
সৌমিত্র ঘোষ

তুমি কি তেমনই আছ ?
চঞ্চলা ঝর্ণার মত অবিশ্রান্ত
নীরব দুপুরে নূপুর বাজিয়ে
দমকা হাওয়ায় পাতা ঝরানো,
আপন ঢেউয়ে ঢেউয়ে বালুকাবেলায়
আছড়ে পড়া ! তুমি কি তেমনই আছ ?
উদাস মনে পশ্চিমের সূর্য ডোবায়,
হারিয়ে গিয়ে নদীর সাথে কথা বলা
কৃষ্ণপক্ষে চন্দ্রায়নে আমার প্রাণ জাগিয়ে তুলে
সুর হয়ে যেন বসন্ত বাহার !
তুমি কি তেমনই আছ ?
খুঁজে যাই আজও দুই বেণীরই সেই তোমাকে
হারিয়ে কখন পাহাড় পেরিয়ে পরবাসে,
খুঁজে বেড়াই অজয় নদীর কোনো ঘাটে
শুক্লপক্ষেও চাঁদ ওঠে না পারে
কামিনী আর সৌরভে মন ছোঁয়ে না,
তুষার দিয়ে ঢেকে গেছে চিরশৈত্যে এই বাটে


রূপকথার মেয়ের গল্প
 
ইন্দ্রানী সরকার



নদীর ধারে একটি গাছের তলায় বসে
মেয়েটি অনেক পাতাসমেত ডাল নিয়ে
খেলছে, "লাভ মি অর লাভ মি নট |"

পরনে একটি সবুজ কালো কুঁচি দেওয়া
স্কার্ট আর ফুল আঁকা গোলাপি জামা |
পা দুটি ঘাসের উপর লুটিয়ে পড়েছে |

বিকেলের আকাশে রামধনুর সব কটি রং
তার চোখের পাতায় ঝিলিক দিয়ে ওঠে |
আনত মুখে লেগে আছে এক চিলতে হাসি |

গলায় দোলানো মুক্তোর মালাটি পড়ন্ত
রোদের আলোয় উজ্জ্বল তারার মত
মিটমিট করে চারিদিকে আলো ছড়ায় |

গালের রক্তিম আভা কুসুম রঙা ডুবন্ত
সূর্যের মত চারিপাশে এক মোহময়ী
পরিবেশের জাদু সৃষ্টি করেছে যেন |

চাঁপাকলির মত আঙুলগুলো পিয়ানোয়
সুর তোলার মতো দ্রুত পাতাগুলি একে
একে ডাল থেকে খুলে খুলে নিচ্ছিল |

সুডৌল নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম চিকচিক
করে যেন পদ্মপাতায় জমা ফোঁটা ফোঁটা
সদ্য ঝরা ভোরের শিশিরের কণা |

দুই গালের উপর গুচ্ছ গুচ্ছ চুলের রাশি
কালো মেঘের মত চাঁদ মুখটিকে কেমন
যেন পরম আদরে জড়িয়ে আছে |

ওগো মেয়ে ঘরে যাও না, দেখো
সিঁদুর মাখা দুষ্টু মেঘগুলো তোমায়
কেমন করে তখন থেকে দেখে যাচ্ছে !

নজর না লেগে যায় ওই নরম শরীরে |
পাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে কি পেলে গো, মেয়ে ?
মেয়ে খিলখিলিয়ে হেসে বলল, কি আবার ?

কেন বলব তোমায় আমার গোপন কথা ?
বলো না তবে বয়েই গেল জানতে আমার
মন ভোলানো সোনা সোনামেয়ের রূপকথা ||


এখন সবই অন্যরকম

চৌধুরী ফাহাদ

যখন তুমি ছিলেনা তখনও আকাশ ছিল,
তখনও ছিল নদীর কলতান-পাখীদের গান,
যখন তুমি ছিলে না তখনও মেঘেদের গুঞ্জনে
বৃষ্টির উচাটনে সিক্ত 'তো দূর্বা বাগান,
থই থই জলে কোলাহলে মুখর 'তো কপোতের প্রাণ।

যখন ছিলে না তুমি তখনও বাতাসের শ্বাস
কানেকানে দিয়ে যেতো চৈতালি ঘ্রাণ,
তারার বুকে জ্বলত পিদিম-ধূমকেতুরাও ছিল আদিম
বটের ছায়ায় আলতো মায়ায়
মনমাখা পথ হিমেল হাওয়ায় জিরিয়ে নি'তো।
যখন তুমি ছিলেনা তখনও জোছনা লাগতো চাঁদের গায়ে
জোনাকির দল নেচে যুগল মাতাল 'তো রূপালী পা'য়ে।

এখন সবই অন্যরকম, অন্যরঙে আকাশ সাজে,
সকাল-দুপুর, রাত্রি বিভোর তোমায় ভেবে স্বপ্নআঁকে।

এখন তুমি আমার আকাশ, তোমার মত চন্দ্রহাসে,
তোমার চোখে দৃশ্যধরে মায়াপূরের স্বর্গে ভাসে।
এখন সবই অন্যরকম, তোমায় নিয়ে সূর মাতে,
এখন সবই অন্যরকম, অন্যসুখে দিন কাটে।

 
বন্দুকবাজ
সায়ক চক্রবর্তী

সমস্ত সুখাদ্যের প্রতি অরুচি থেকেই আমি বন্দুক ধরি।
পূর্ব-পশ্চিমে মহামারী হয়ে হাসছিসংক্রমণ ছড়াচ্ছি
মার্বেল থেকে কিত-কিত এর ধুলো পর্যন্ত।
ভালো লাগে কুঁকড়ে যাওয়া মানুষের বুক
খাবলে খাবলে নিই সহজাত আবেগ।
এভাবেই ঋতুরা আসছে যাচ্ছে বেণী দুলিয়ে
নিশ্চিন্তে ঘুম দিচ্ছি মনের ভিতর।
কখন যে তুমি এলে রক্তের উপরে পা টিপে টিপে!
জানো, কুঁকড়ে যাচ্ছি আমিও তোমার ঠোঁট, হাত দেখে
সরে যাই, আরও আরও সরে গিয়ে দেওয়ালের কানে
বলে দিই; আমিও তো ভয় পেতে পারি!


নগর রসনা

আলী আফজাল খান

০১.
এই নগরীর বেপরোয়া জীবনের
নাগরিক জীবনের নর্দমা টেনে
উন্নয়নের ভয়াল গ্রাসে
বিপন্ন বাস্তুসংস্থান -পয়:নালা বুড়িগঙ্গা
০২.
জীবনের আবর্জনা জমতে জমতে
তলিয়ে গেছে চোখ যোনী দেশে
উর্বর জমি ছেয়ে আছে অব্যবহৃত পলিথিন
মৃত স্নায়ুরস উপচে উঠে ম্যানহোল ঘিরে
০৩.
তোমার সাথে সঙ্গমে যে অবৈধ (!) ভ্রূণ জন্মে
প্রতি রাতে ফেলে আসি তারে
সই করে কেনা ঘরে আনা বৈধ গর্তে
তবু প্রতীক্ষা করি একদিন বুড়িগঙ্গার নিটল জলে স্নান আর বৈধ সঙ্গ

হক!

শ্রীশুভ্র

সামাজিক বিন্যাসগুলো সুন্দর নয় জেনেও
মরণ কামড় দিয়ে
গড্ডালিকাতেই আছি!
ঝোলের লাউ অম্বলের কদু
বলে তুমি গাল দিয়ে যেও!
আমি বেদের গালে সাপের মুখে চুমু খেয়ে যাবো!
জেডপ্লাস নিরাপত্তাবলয়ে যাদের মসনদে বসাই
তাদের প্রসাদে আমারও
ভাগ আছে!
বৈদ্যুতিক চুল্লীতে
আগুনের পরশমণি পারেনি
পোড়াতে অর্থ বিত্ত গুপ্ত রোগ!
তাই পূর্বপুরুষের সংক্রমণ
উত্তরপুরুষে দিয়ে যাচ্ছি
দেখ!
আমাদের ক্রোমোজোমে
সংবিধান থেকে আইনি ধারায় মুখ শোঁকাশুঁকির
সুবন্দোবস্ত আছে!
তুমি বোধোদয়ের পাতা
উল্টাতে পারো!
মালা দাও জন্মদিনে
মহাপুরুষ অবতারের গলায়!
আমি ফুলের বরাত নেব!

কি পবিত্র এই দেশ দেখ!
গঙ্গাজল আচমনে তুমি
আমি সত্যবাদী!
জনপ্রিয়তায় পার পেয়ে যায় খুনি!


অপেক্ষা

আদর ভুঁইয়া

তুমি তো গেলে সব ভুলে
আমাকে একা ফেলে ক্লাসরুমে,
ধর্মঘট যেন ঘড়ির কাঁটাতে
তেমন ক্ষোভ দারোয়ানের চোখে,
আজ বিরিয়ানি খাবো সেটাও ভুলে গেলে?
পড়ছে ঘাম, খাচ্ছি চুরুট, জ্বলছি সূর্যতাপে
এর মাঝে একবারও কি আমায় পড়ে মনে?
দাদারা হিংসুটে চোখে দেখছে
শালীরা খিলখিলিয়ে হাসছে
অপেক্ষার এত পরীক্ষা কেন প্রেমে?
আজ বলে খুব সাজুগুজু করেছো, নূপুর দিয়েছ পায়ে
হাতের গোলাপ চলে যাবে চুলে, দিয়েছ কি কাজল চোখে?
এখনও আসছোনা কেন? যাচ্ছি তো মরে…….
শুধু তোমায় দেখবো বলে এখনও রয়েছি বেঁচে।
প্রেমানুভূতি বোমা পড়লো আমার চোখে
যখন পেলাম তোমায় আমার পাশে!
শরীরের সব কোষ উঠলো জেগে, আনন্দ উল্লাসে
চরম দুঃখেও হাসি আসে তোমায় পাশে পেলে।


অপরূপা

রূম্পা শিমুল
সূর্যের তাপে উত্তপ্ত হয় পৃথিবী
আলো ছড়ায় জগত জুড়ে
বিধাতার অপার মহিমায়
আজ পৃথিবী কত বিস্ময়কর

গাছ পালা নদনদী
সুন্দর এর স্বরলিপি
আবহমান এই বিশ্বায়নে
যেন এক ফালি অপরূপের পসরা

দুই দিনের অতিথি এই ভবে আমরা
করি কত শত রঙ্গশালা
সহস্র রূপের মেলা
কোন এক দিন সমাপ্তি হবে
জীবনের সাঙ্গলীলা


স্বপ্ন

সোহান সরকার

বসন্ত বাতাসে খোলা বারান্দায়
জামার বোতাম খোলা, কোন ভুল ঠিকানায়
এঁটেছি কি ভ্রমজালে? শুধায় দখিন বায়
উষ্ণ পেয়ালা হাতে মেতেছি ভাবনাতে;
না হোক প্রভাতে রবি উঠবে রাতে
রবে না কোন ধরা জড়া সংঘাতে
হবে না চলার গতি হুইল চেয়ারে ভর করে,
বাজবে না বিষাদের গান দুপুর-সন্ধ্যা-রাত্রি-ভোরে
শান্তির সুবাতাস বইবে শহরে।



আমি থাকি
শামীম পারভেজ 

আমি থাকি সবুজের দেশে
যেখানে সবুজ ঘাসে ভরপুর
আমি থাকি পাখিদের দেশে
যেখানে আছে সুমধুর সুর।


আমি থাকি নদীর দেশে
যেখানে ভাসে নৌকা ভেলা
আমি থাকি ইলিশের দেশে
যেখানে বসে ইলিশের মেলা।


আমি থাকি পলির দেশে
যেখানে জন্মে শব্জি ধান
আমি থাকি ফলের দেশে
যেখানে সুবাসে ভরে প্রাণ।


আমি থাকি শাপলার দেশে
যেখানে নয়নের ক্ষুদা মেটায়
আমি থাকি রাখালের দেশে
যেখানে বাঁশের বাঁশি বাজায়।


আমি থাকি জ্যোৎস্নার দেশে
যেখানে আছে রূপালি আলো
আমি থাকি হৃদয়ের দেশে
যেখানে ভালবাসার কথা বলে। 


আমি থাকি গাছের দেশে
যেখানে আছে কত ছায়া
আমি থাকি মায়ের কোলে
যেখানে আছে স্নেহ মায়া।


আমি থাকি মুক্তির দেশে
যেখানে তারা করেছে যুদ্ধ
আমি থাকি স্বাধীন দেশে
যেখানে থেকে আমি মুগ্ধ। 


আমি থাকি সোনার দেশে
যেখানে সুনামের নেই শেষ
আমি থাকি এমনই দেশে
যেখানে তার নাম বাংলাদেশ।



প্রিয় স্বাধীনতা
মোঃসরোয়ার জাহান

বুভুক্ষু জিহ্বার টানে
উঠে আসুক ঘূর্ণিঝড়
তছনছ করে দিক দালালদের মিথ্যে মুখোশ!

জীবনের মুখামুখি বুলেটের অসভ্য চিৎকার
মাথার মগজের ভিতরে যুদ্ধকালীন সাইরেন
আর কতো দূর,কতো দূরে তুমি স্বাধিনতা ?

প্রিয় স্বাধীনতা
আমি তোমার জন্য যুদ্ধে যাবো
শুধু তোমার জন্য !




***৩২তম সংখ্যা প্রকাশিত আগামী ২০ এপ্রিল ২০১৩ শনিবার***