ঢাকা,মঙ্গলবার ,৬ নভেম্বর ২০১২, ২২ কার্তিক ১৪১৯,২৩তম সংখ্যা।

২৩ তম সংখ্যায় আছে মোট ১৪টি কবিতালিখেছেন-শর্মিষ্ঠা ঘোষ,রেজওয়ান তানিম,
ফারহানা খানম,ইন্দ্রানী সরকার,শুভ বাবর,আহমেদ মুনীর,আব্দুল্লাহ্ আল জামিল,সিপাহী রেজা,তমিজ
তমোহর ,ফেরদৌস হাসান খান,কবি আসাদ,অনুপম মুখোপাধ্যায়,অনুপম মন্ডল এবং পাগলা জাঈদ।


টেলিপ্যাথি
শর্মিষ্ঠা ঘোষ

ঘরে ফেরার আগে কিছু কথা রেখে যাচ্ছি বাহিরে
কিছু কথা গচ্ছিত থাক ধোঁয়া ওঠা নদী জলে
শীতের সকালে পাতা ঝরা ক্ষণে শূন্য বিতানের সাথে
ঝরে যাক কিছু কথা।কিছু কথা পাখি কুড়িয়ে পেয়ে ঠোঁটে করে
উড়ে গেল তার পরিযায়ী পরিক্রমায়। দিনান্তের সূর্য কিছু কথা নিয়ে টুপ করে
ডুবে গেল নদীটির বুকে। দু একটি অভিমানী কথা রেখে এলাম বিস্মৃতির কিনারায়।
কিছু কথা পড়ে রইল হৈমন্তী হিমে মাখামাখি ফসলের ক্ষেতে,
গমের শিষের মধু জারিত কিছু কথা এগিয়ে গেল পূর্ণতায়।
কিছু উড়িয়ে দিলাম মেঘেদের কানে কানে, বাতাসের আহ্বানে সাড়া দিল কিছু ,
আর কিছু একান্ত ব্যক্তিগত পৃথিবীর অগোচরে
তোমার দিকে ছুঁড়ে দিচ্ছি টেলিপ্যাথি টানে।
 
নষ্ট ছেলের ইতিকথা
রেজওয়ান তানিম

নিজেকে এখন গুটিয়ে নিয়েছি আমি,
ইদানীং বড্ড একঘেয়ে লাগে
বন্ধু কিংবা চেনা জানা মানুষের ভিড়ে
এখন একা থাকি মাঝে মাঝেই, স্বেচ্ছা নির্বাসনে
এই যেমন গত পাঁচ দিন!
ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়ি নিরুদ্দেশ যাত্রায়
কানাগলি পেড়িয়ে রেললাইনের ধার,
হাটতে হাটতে উপশহরের ছোট্ট কোন পার্ক,
কাদা জল মাখা গ্রামের পথে হেঁটেছি,
রোদ বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে। কোথায় ছিলাম
এতদিন, তাই বলা মুশকিল। এমনি করেই
হারিয়ে যাই বারংবার। আবার ফিরে ফিরে আসি!
তখনি ফিরে আসে লুকিয়ে থাকা
ইচ্ছেরা, আমার ভাললাগার নুড়ি পাথর গুলো-
তখনি মনে হয়, শুরু করি অধিকারের লড়াই ;
বুঝে নেই আমার প্রাপ্য টুকু কড়ায় গণ্ডায়।
ঢেকে দেই ব্যর্থতার কালি, উড়াই বিজয় নিশান।
হা হা হাঅর্থহীন সবকিছু; তবু ভাল লাগে
এই লুকোচুরি। মূল্যহীন জীবনটা, মূল্যবান করার
প্রচেষ্টা চলে তখন ক্লান্তি হীন।

অবাক লাগে মাঝে মাঝে। বন্ধুদের আড্ডায়
মধ্যমণি থেকে কবে যেন হলাম তৃতীয় ব্যক্তি!
চোখের মাঝে কেমন তাচ্ছিল্য;
দৃষ্টিতে করুণা- ওদের কাছে আমি নষ্ট ছেলে।
চুপচাপ বসে থাকাও বিরক্ত করে ওদের;
আড্ডায় বিরস আমি, কেউ দেয় ভাবের খোটা,
কেউ বা ভাবে ঠুনকো আমায়। কেউ কেউ
বলে ব্যক্তিত্বহীন, কেউবা পথের ছেলে।
সেদিন ঊর্মি বললএমন রুক্ষ হলি কেন তুই ?
কোন আবেগ নেই, পাথরের মতন শক্ত!
আমি হাসি তখন-এসব ছিল কি
কখনো কোনদিন ? হয়ত বা! খুঁজে যাই
অন্তহীন স্মৃতি সাগরের তলদেশ।
কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি তথাকথিত
ব্যক্তিত্ব কিংবা আবেগের অন্ধপ্রকাশ!
মনে পড়ে যায় হঠাৎ , বিক্ষত হৃদয় আমার
আছে এখন গভীর কোমায়; তাকে নিয়ে
যম- মানুষে টানাটানি এর মাঝে
বেঁচে থাকার এই যে অভিনয়; এই তো অনেক
আবেগ আর ভালবাসা- গাল ভরা বুলি।

সমস্ত দিন কেটে যায় ব্যস্ততার অভিনয়ে।
রাত আসে অন্ধ নিরবতা নিয়ে, তখন আমি
স্মৃতিচারণে মত্ত নিয়তির সাথে।
হে পৃথিবী, তুমি তো জান
নিয়তি আমায়, করেছে ধ্বংসকামী। আমি আজ
ভুলে গেছি সৃষ্টির আনন্দ। মৃত্যুর বেদনা
এখন কানে বাজে। তুমি সহায় হও আমার
দাও এক টুকরো উদার জমিন,
যার হৃদয় বিদীর্ণ হবে,আমার ভালবাসার
লাঙলের কর্ষণে। শক্ত উষর ভূমি
আমি করবো সরস আমারি জন্যে।
সোনালি ফসল দেখে দু চোখ জুড়ে
বইবে জমে থাকা অশ্রুধারা।
ভাটার টানে ঝিমিয়ে পড়া যৌবন নদীতে
আবার জাগুক মত্ত জোয়ার। দুকূল ভেঙে
এগিয়ে যাক সে। পলি পরে
থেমে যাওয়া তার চরাচর উন্মুক্ত হোক
ভালবাসার পরশে! আমি আছি এখনো
ক্ষীণ থেকে ক্ষীণ স্বপ্ন নিয়ে। হয়তবা
একদিন শেষ হবে নিজের থেকে নিজের
পালিয়ে বেড়াবার খেলা।

কথা ছিল
ফারহানা খানম

সেই কবে থেকে শুরু মনে নেই
এখনো বাতাসে ভাসে আর্তনাদ
ক্ষুদার্থ শিশুর কান্না
মানুষের হাহাকার, বেদনাহত ক্ষোভ
সবই এতদিনে থেমে যাবার কথা ছিল
কথাছিল,
বাগান ভরে উঠবে বাহারি ফুলের সুগন্ধে
কথাগুল তেমনি আছে আশার সুপ্তিতে ;
যেমন আকাঙ্খায় থাকে প্রাপ্তিযোগ
হয়তো সপ্ন- বীজে ছিল অধরা কল্পনা তাই
হতাশার মাঝেওআছে সপ্নের অজস্রতা
তাই এখনো মুখে মুখে যুদ্ধের গল্প শোনা যায়
৫২ ,৬৯, ৭১ আজো স্মৃতিতে অম্লান
এখনো মানুষ নতুন ভোরের সপ্ন বোনে
নতুন কবিতা লেখে
বাগানে ফোঁটায় ফুল !!
এখনো উচ্চারিত হয় দৃপ্ত শপথ
তরুনের চোখে থাকে অনড় প্রতিজ্ঞা
তাই এখনো ,
আশার প্রদীপ জ্বেলে অপেক্ষায় থাকি
একদিন চেতনার জলে জ্বলবে আগুন!
আসবে স্বর্ণকণা ভোর ................

আমি আর আমার সাগর

ইন্দ্রানী সরকার

আকাশ জুড়ে চাঁদের আলো দূরে তারাদের ঝিকমিক |
সাগরে ভাসে মেঘের ছায়া অদূরে বালির চিকচিক ||
ভেসে চলে এক ছোট্ট জাহাজ আলো ঝলমল চারিদিক |
অজানার পথে পাড়ি দেয় মন ডাক দেয় অতলান্তিক ||
আগুন জ্বলে এধারে ওধারে আকাশে আলোর ফুলকি |
সেতুর গায়ে আলোর মালা আঁধারে ওঠে চকমকি ||
বালির ফাঁকে লুকানো রয়েছে লক্ষ ঝিনুক ঢালা |
সকাল হলে গাঁথব তাদের গড়তে ঝিনুক মালা ||
সাগরের ডাক ফেলতে নারি তাইত ঘুরে আসি |
কেউ বোঝে না সাগর বোঝে আমার কান্না হাসি ||

অসভ্য বিবেক খোঁজ করে সোনার মানুষের সন্ধান
শুভ বাবর

বিবেকের কণ্ঠস্বর,গল্পের জাদুকর ,একটি স্বপ্নের কারিগরের মৃত্যু
আপোষহীন বিবেকের তাড়নায় বিদ্রোহী হয়ে,
রক্ষণশীল সমাজটাকে মান-ইজ্জতের ঘুণপোকা হতে বাঁচালো
কাকে যেন বলতে শুনেছি ,তিনি নাস্তিক ছিলেন ,
নিষ্ঠাবান, নিতির প্রশ্নে আপোষহীন পথহারা এই মানুষটি শেষ বয়সে
অর্থের প্রলোভনে ভেসে গেছে তার আদর্শ ,মৃতপ্রায় বিবেক

পাঠকের দুরন্ত ধর্মশালা ,
আলোকিত মানুষ খুজে অলিখিত জীবনের রঙ্গ
বুকের জ্বালা বাইনে বাইনে গেঁথে রয় শতাব্দীর স্বার্থক বুনীয়াদ
দূর্বল কোন বিবেকের ছায়া হয়ে রঙধনু বেঁকে আছে দূরে সাতটি রঙ ধরে
ক্লান্ত পথিক ইচ্ছের প্রান্তরে
যতদুর দৃষ্টি যায় স্বপ্নহারা বিবেকের দুয়ারে শূণ্যতার দৃশ্য পাপ৷

বিবেকের সব উজ্জ্বল প্রকোষ্ঠগুলোকে তালাবদ্ধ করে সততার অন্ধ জগত
রাত সঙ্গমে বিব্রত নষ্ট পুরুষের বড় নির্লজ্জ হুংকার ,
মনের ভেতরে দূর্বল সস্তাবুলির মুখে ঠুলি পরিয়ে
উজ্জ্বল অস্তিত্বের চোখে কালো কাপড় বেঁধে ছুটে চলেছে অবিরাম
ম্রিয়মান গন্তব্যহীন অসভ্য স্বাধীন কোন বেশ্যার গৃহে
পথহারা আদর্শের অষ্টপ্রহর সর্ষের মধ্যে এখন আর ভূত নেই

জালাও পোড়াও মানুষ হত্যার ব্যবসায় অতীত জেগে রয় পরবাসে
বিষ ঢেলেছি গলায় ক্লান্ত নিথর দু'হাত বিবশ হয়ে ঢলে পড়েছে মুত্যু যন্ত্রণায়
পাগলের মত হা হা করে হাসতে থাকবে ,যতক্ষন না মৃত্যু হয়
কৃতি সন্তান পরাজিত করতে পারলে এদের আনন্দের শেষ নেই!
অকৃত্রিম অধমের শরীরের গিটে গিটে ঝালাই করে বুঝিয়ে দেয়া দরকার,
সত্য কথা বলার কি ভয়ংকর কণ্ঠস্বরের চিত্কার হতে পারে
কালো অক্ষর সাদা কাগজের পৃষ্ঠায় কতটা শক্তিশালী
দিকে অসভ্য বিবেক খোঁজ করে সোনার মানুষের সন্ধান

সাদা কালো রাত ফিকে হয়ে আসে হঠাৎ কার কি যায় আসে , কার যন্ত্রণায়
হারিয়ে যায় কোথাও অনন্ত জীবনের
বেসুরো কথাগুলো ছাড়তে ছাড়তে ধুলো অন্য কারো ভুল ঠিকানায়

ধানসিঁড়ি নদীতীরে একদিন
আহমেদ মুনীর

সেদিন আকাশ ছিল ঢাকা মেঘে
সুগন্ধার তীর ঘেঁষে হেঁটে হেঁটে
সাফারী পার্কের বিশাল বুনো ঘাসের
বন পাড়ি দিয়ে পায়ে চলা পথ -
দুপাশে তাল নারকেল শিশির আর মেহগিনির
মায়া কাটিয়ে উঠলাম
বিশাল সুন্দর গাবখান ব্রীজে
গাবখান চ্যানেলের দুপাশে রেইন ফরেস্ট বিশাল
সাজানো বাগান আর বৃক্ষের অপূর্ব সমাহার
চোখে না দেখলে বুঝা যাবে না তার রূপ কী অপরূপ।।

কিছুদূর আরও পশ্চিমে দক্ষিনে গিয়ে পেলাম জীবনান্দের
সেই বিখ্যাত ধানসিঁড়ি নদী আর তার বিশাল থাল
উহ ! বাংলাদেশে জন্ম আসলেই সার্থক যে আসে স্বর্গে
ধানসিঁড়ির জলসিঁড়ি আর তার ঘূর্ণি ঘোলা জল সুতীব্র
স্রোত মনমাঝির ভাটিয়ালী গান কী তীব্র বাতাস
দুই ধারে সাজানো বাগান কদলী কড়াই শিরিষ শিমূল রেন্ডী
আরও অসংখ্য সবুজ বৃক্ষের কথা হয় বাতাস
আর মানুষের অন্তরে
উড়ে আসে গাঙ্গচিল শালিক সারস বক
দোয়েল ঘুঘু আরও হাজারো পাখী
কেউ ধরে গান কেউ খেলা করে কেউ ধরে মাছ
সবুজ ধানের ক্ষেতে
মেঠোপথে দিয়ে যায় রাখাল গরুর পাল
বাংলাদেশে সুশোভিত সুবাসিত এমন অসাধারণ
অপরূপ রূপ সুষমা দেথিবে না কেউ অন্য কোথাও
বাংলাদেশের আনাচে কানাচে দেখেছি বহূ রূপ
কিন্তু জলসিঁড়ি বুকে নেওয়া ধানসিঁড়ি আর তার
অপরূপ নিসর্গ প্রকৃতি নদী নালা সবুজ জল
দেখিবে না কেউ অন্য কোথাও ।।
ঘূর্ণিত জলাধী আর তার ঘোলাজল জলসিঁড়ি
পাখীর ডাক আর পাখীর খেলা
জনম হবে সার্থক যদি জন্ম নিয়ে এই দেশে
দেখি মনমাতানো হদয়হারানো ধানসিঁড়ি নদী আর নিসর্গের
এই চিরায়তন রূপসী ধানসিঁড়ি নদী ।।

বিলীন হয়েছে
আব্দুল্লাহ্ আল জামিল

আত্মার অই দরজা খোলা হয়নি অনেক কাল
কেননা ওটার চাবি যে ছিলো শুধু তোমার কাছে।
মনের আরশিতে দেখা যায়নি নতুন কারোর প্রতিবিম্ব
তোমার রূপের ঝলকে ওর পারদের আস্তর খসে গেছে
নীল শাড়ী পরে যেদিন বেরুলে তুমি
আমার আকাশ সেদিন থেকেই আর রং বদলাতে পারেনি।
যেদিন তুমি আমায় অরণ্যের নিকটে বেড়াতে নিয়েছিলে
আমার বাগান সেদিন থেকেই সবুজ-শ্যামল হয়ে আছে
আয়ত নয়নে যেদিন আমি প্রেমের কবিতা পড়লাম
সেদিন থেকেই আমার অন্তর সাগরে সাইক্লোন চলছে অবিরাম।
সেই সুরেলা কন্ঠ শ্রবনের পর থেকে যেনো আমি বধির হয়েছি
আর কারো গান ভালো লাগেনি কখনো
গৌরী, এভাবেই এক এক করে আমার সকল সত্তা শুধু
বিলীন হয়েছে কেবল তোমার মাঝে

রাশিফল
সিপাহী রেজা

দিনকাল ভালই যাচ্ছে; পত্রিকার রাশিফলের মত...
টাকা আসে, চাকরি যায়, যাত্রা ভালো, কারো অভিমানও ভাঙ্গে
কি যেন একটা সুখবর আসি আসি করেও আর এলো না !

পাতা জুড়ে শুধু লাভলোকসান আর ক্ষয়বৃদ্ধির কথা।
গ্রহদের হাঁসি ঠাট্টার কথা, কে কবে কোথায় দাঁড়াবে,
কতটুকু ভর করে কীভাবে হাঁসাবে, কীভাবে কাঁদাবে
শনি কিংবা বৃহস্পতি, স্বাস্থ্যের অবনতি কমবে নয়তো বাড়বে।

ভালই আছি! পাওনাদার নেই। প্রতিযোগী নেই। দাম্পত্য নেই।
না থাকা জুড়ে ওইএক চিনচিনে ব্যথা, তাও সেটা গ্রহ মেপে-
কখনো কমে, কখনো বাড়ে।

    স্বস্তি-অস্বস্তি বলতেও ওটুকুই,
    দৈনন্দিন সূচিপত্রে কোথাও মৃত্যুর কথা নেই!
    কেননা, রাশিফল মানুষ মারে না !

আপোষহীন কিছু রাত কেটে যায় আলোর আশায়

তমিজ তমোহর
[]
বাউলদুপুরে যদি একা হয়ে যাই
অথবা রৌদ্রের সঞ্চয় গোপন রাগ প্রকাশিত হয় তবে আমি মেঘ ডাকব, জল ডাকব
[]
তাড়া করা প্রেম
গোপনে সাজয় সে
গোলাপের পাপড়ি
আলোতে চমকে দেখা
স্থির জেটিতে ভাসছে
একটা কবিতা
চুল পাকা দক্ষ নাবিকরা ছন্দ মিলিয়ে যায়
[]
আমি ঠিকই লুকিয়ে রাখব
কাল রাতের ক্ষত
সকালের প্রতারণা
বজ্র আর বিদ্যুতে বিদ্ধ-
প্রেম
[]
পঞ্চাশের সাঁতার তুমি আঠারোয় এসে দিয়েছ বলে আমি আবাক!
দুরের এক দেশে বাতাসের বয়সে বেড়ে হয়েছে উষ্ণ
মাথার ভেতর টগবগ করা মরিচিকা
মরুঝড় শেষে ফিরে এসো
বাসমান মেঘে ভেসে ভেসে
ঝরাও ফোঁ টা অশ্রু
[]
ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে ঋতু পরিবর্তন
সে যখন ফিরল ফুল তো দূরের কথা গাছেরা পাতাও হারাল
মেঘেরা মাটি থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল
[]
রাত শেষ হয়ে গেল
হারিয়ে গেল অধিকারবোধ
আমি আমার দিকে মুদ্রাটা
আর তুমি তোমার দিকে
হাত বদলে বদলে একদিন
অচলের তালিকায় নাম লেখাবে
অথবা আঙ্গুলের ফাঁকগলে পড়ে যাবে
পয়সা।

দেবকন্যার মৃত্যু

ফেরদৌস হাসান খান

ভেঙে যাক মন ঘূর্ণিঝড়ে তোমারই প্রেম প্রতারণায়
সুনামি উঠুক আমার দীর্ঘশ্বাসে উড়ে যাক সব স্মৃতির ধূলো
বর্জ্রপাতের গর্জেনে সবাই জানুক আমি কেবল তোমারই ছিলাম
ছিঁড়ুক তোমার শাড়ির আঁচল চোঁড়া কাঁটায়
দেখা যাক গায়ের গোপন দাগ যেথায় শুধু আমার অধিকার ছিল।।

আজ ভেঙে যাক সব নিষ্ঠুর সামাজিক প্রাচীর
ছিঁড়ে যাক বন্ধনের শেকল, ছিঁডুক আধিকারের বেড়ি
বৃষ্টিস্নাত দেহ আজ চায় রূপসী রমনীর
রূপ আর যৌবনের অদম্য বিলাস ভাবনার দৃশ্যপটে।।

তোমার আমার কাব্য আজ ছুঁয়ে যায়
মেঘের ক্রন্দন শুধু সময়ের পার্থক্যে
আজ আমার লেখনির সেই সুন্দরী দেবকন্যার মৃত্যু হবে
আমারই কবিতার খাতায় কবিতা লেখা বন্ধে।।

আজ আমার লেখনির সেই সুন্দরী দেবকন্যার মৃত্যু হবে
আমারই কবিতার খাতায় কবিতা লেখা বন্ধে।।

সৃষ্টির বৈচিত্র্যতা
কবি আসাদ

সৃষ্টির বৈচিত্র্য তায় আপন রূপে
তারুন্নের চিরো সবুজ বেস্টনিতে
ধরণীকে সাজিয়েছে স্বর্গ রূপে !
প্রথা বিরধি আচারন অস্বাভাবিক নয় ,
তা সৃষ্টির বৈচিত্র্য রূপ !
যা আশা করনি আমার কাছে ,
যেমনটি আমিও চাইনি
এই পৃথিবীর চিরো সবুজ শীতল মায়ায়
মানুষে মানুষের বৈরি আচরন
আর হিংসাত্মক মনোভাব !

ফরমায়েশ

অনুপম মুখোপাধ্যায়

আরো পেঁয়াজ দাও ... রসুন দাও ... ক্যাপসিকাম দাও
তোমরা বলছ , ঝোলে
আমি শিউলি দিচ্ছি , বেলা দিচ্ছি , শেফালি দিচ্ছি
আবার কেমন ঝোল
বেশি করে লংকাগুঁড়ো দাও
তোমরা বলছ
রডোডেনড্রন ... ছিঁড়েখুঁড়ে খাচ্ছো
আমি দিচ্ছি , ঝোলে

নিঝুম
অনুপম মন্ডল

হীরার জঙ্গল গজিয়ে উঠছে
তোমার রাগতমসা। তেরোশ বছরের মৃত্যু ঘুমে।
আর দূর চুম্বনস্তুপে
প্রসাদিত কামরাত্রি। চূর্নবিচূর্ন।
কলঙ্কপ্রভা কেটে জড়োকরা সব রেশমি ঝিলিমিলি।
লাল লাল চুমকির খরধূলো মেখে
চলেছে হাড়কলরোল। কাকরক্ষিতার গিলোটিনে।
দূরে কোথাও যত রক্তমালতির ভার। পরীঝোরায়। তার
সব শুষেও রয়ে গেছে কিছু রোদনবাহার। রূপপিপাসা।
নাশকরোজ্জল। সুরহারা
কেবল একজোড়া ঝুমুরের দীপিত অভিসারে...

সাতকাহন

পাগলা জাঈদ

তুমি ভয় পাও কেন ? সততা কি হারে ?
তুমি ভয় পাও কেন ? মৌলিকতা কি খুব বেশি কিছু ?
আমি না হয় বিরিয়ানীর যায়গায় ডাল ভাত দেব।
তুমি ডাল ভাত আর বিরিয়ানীর পার্থক্য জানো ?
প্রথমটা হল চাহিদা, আর পরের টা ? বিলাসিতা।
না হয় আমি তোমায় বিলাসিতা দিতে পারব না।
চাহিদা পূরণে কি চলবে না তোমার ?
না হয় আমি তোমায় জামদানি কিনে দিতে পারব না,
কি আসে যায় ? ধুসর টাঙ্গাইল তাঁতেও তো তোমায় পরীর মত লাগে।
ইটালিয়ান ওক কাঠের খাটে শুয়ে কি লাভ ?
যদি ঘুমের ঘোরে আমার বুকে মাথা রাখতে না পারো ?
তার চেয়ে শীতল পাঁটিতে দু'জনে মাখামাখি হয়ে থাকা ঢের ভাল নয় কি ?
তবে এসো নৌকা ছোটাই পদ্মার জলে,
তবে এসো বাসর গড়ি সে প্রথম চুমুর কৃষ্ণচুড়া তলে।