ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর ২০১২, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪১৯,২৪তম সংখ্যা।



২৪ তম সংখ্যায় আছে মোট ১৫টি কবিতা, লিখেছেন- রেজা রহমান,কচি রেজা,অমিতাভ দাস,মৌ দাশগুপ্তা,সৌভিক দা',ইন্দ্রানী সরকার,শামীম পারভেজ, ,ডাক্তার শাহ্নাজ বীথি,কবি আসাদ,তামান্না রুবাইয়াত,নাইম হাসান,অভিলাষা,আহম্মেদ রফিক,ইমেল নাঈম এবং জাকিয়া জেসমিন।

কাচের চুড়ি
 রেজা রহমান

কে বলে আমার হাতে কাজ নেই আর
একটু পেয়েছি আলো দিয়েছো তুমিই
সেই সাথে একটু অন্ধকার
বেরিয়ে পড়েছি আমি আলোঅন্ধকারে
জলবন্দি যাবো দূর জলের ওপারে

দুগাছি কাচের চুড়ি কিনতে হবে পরাবো দুহাতে
সকালটা হেঁটে হেঁটে কখন যে পৌঁছে গেল রাতে
সকালটা ছিলো গতকাল
রাতটা পেরিয়ে দেখি আরেক সকাল
আবার বেরিয়ে পড়ি ঘুমঘুম চোখে
সোনার বদলে কাচ
কাচের চুড়িই হাতে পরতে হবে ওকে!

এমনও কি হতে পারে দেখি এক ভোরে
হাতদুটো গড়া ওর পরশপাথরে
কি হবে কাচের চুড়ি -হাতে পরালে
হাতই কাচের চুড়ি নেবে সোনা রে!

পরশপাথর হাত ছোঁবো আমি পরাণপাথরে
কি খুব কাঁদবেনা
সংজ্ঞা মুহূর্তে যদি একটুও বৃষ্টি না ঝরে
না- যদি ঝরে বৃষ্টি ফোঁটায় ফোঁটা্য তারাফুল
ভেঙে কি যাবেনা স্বপ্ন মনে কি হবেনা সবই ভুল!

যে মেঘে বৃষ্টি ঝরে সেই মেঘই দেখে নাকি ক্ষরা
যে হাত কবিতা লেখে সে হাতই জেতে বুঝি জরা
সোনার কাঁকনই থাক তোমার সোনার হাতে পরা
কাচের চুড়িও সোনা তোমারই হাতে যে অধরা!

ভেবোনা আমার জন্য
পাখপাখালিরা আছে সে তোমারই নামগান করা
নদী আছে দূরে কাছে অবশিষ্ট অশ্রুজলভরা
কথাবলা নীরবতা কথাশোনা অবাক বৃক্ষরা!

ব্যর্থতা তুমি নাও
কচি রেজা

আজকের ব্যর্থতা তুমি নাও
এই ত্রিমাত্রিক মনঃকষ্ট , এই নির্ভেজাল, নির্মম আঁচড়
এই অনির্লিপ্তি
ধীবর অভ্যাস তুমি নাও
একটু সফল চেষ্টা করব তোমাকে ভুলে যেতে
আরেকটু অধ্যবসায়?
অনুশোচনায় বেজে উঠবে না তো নৈরাশ্য
মন্দিরে মন্দিরে বলি চেয়ে, মাঠে মাঠে
বৃষ্টি চেয়ে সংঘটিত করবে না আরেকটি ঘোর মন্বন্তর
এসব তোমাকে মানায়, বহুদিন তোমার এই প্রভুপ্রভুভাব
আমি কুলাঙ্গার তবু অত্যাগসহন

আমাকে বিরহ দিয়ে তুমি
পৌরাণিক আয়নায় খেলে যাচ্ছ বিলিয়ার্ড
আবিষ্ট হয়েছ ঈশ্বরে
তীর্থগর্তে গড়াতে গড়াতে আমি মেনে নিচ্ছি পতন
টের পাচ্ছি ধাবমানতা
দেহস্থচক্রে ক্রমশঃ গাঢ় হচ্ছে তল
যেন উপোষী চিবুক
আমার প্রীতিভাজন ঠোঁট, আজকাল দেখতে বমির মত লাগে
চোখ ঢাকা এক তুলনাহীন চশমায়
আমার গিটার কত আমি ভুল বানান তোমার কাছে

আহা! মন কেন মন, মনের মানুষ, বাঁধো না?
অমিতাভ দাস

কত গুলো স্তর মনের
আবেগের কতো সুর, রাগ
ভালবাসা, কতো নানা রূপ
প্রেম বা উতল অনুরাগ।

কান্না হাসিতে কত জল
দেহের নদীতে কত ঢল
কতো ঢেউ, নানা কতো ঢেউ
রেখে গেল ঘাটে কতো দাগ।

মেঘ রঙে নদী আঁকে প্রেম
অভিলাষ, ডুব সে সাঁতার!
কল্পনায় পথ হাঁটলেম
তবু, চিন্তার কত কাল নাগ!

এতো কি আছে সে ভাবার?
নাওনা নদী-কে টেনে কাছে --
কি এসে যায় যদি লোক
অথবা সমাজ রাঙে চোখ?

বাতাস বুলিয়ে যায় হাত...
আকাশ করে না কোন রাগ
নদী কেউ ভালবাসলেই
মেঘ রঙে... প্রেম, অনুরাগ

চিঠি : প্রযত্নে রাজাবাবু
মৌ দাশগুপ্তা

জানো রাজাবাবু,
রাত গভীর হলেই আমাকে অন্ধকারের মত ঘিরে দাঁড়াও তুমি।
একটা গল্প লেখোনা সোনা, আমায় নিয়ে, তোমার কলমে।
তুমিও যে আমার গল্প হতে চাও,খেয়ালই করিনি কোনোদিন।,
সেদিন কথাটা বলেই চুপ করে গেলে,
আনমনে চশমাটা নামিয়ে কাঁচটা রুমালে মুছতে মুছতে
একটু থেমে গেলে, চেয়ে রইলে চুপচাপ,
তারপর নিজস্ব আলোছায়া নিয়ে ভ্রুক্ষেপহীন তুমি
আমার গল্পের পথ ধরে হেঁটে চলে গেলে।
কি অনায়াসে নতুন রচনার দিকে হাত ধরে নিয়ে চললে আমায় তুমি!
শাদা পায়রার মতো ডানা মেলা ভোরে,রোদ ঝকমকে ঘোর দুপুরে,
গোলাপি ফুর্ফুরে বিকেলে, গোধূলির করুণ আলোয়,
শান্ত তুষারের মতো ঝরে পড়া চাঁদের আলো মাখা রাতে,
রাত্রির ঘন অন্ধকারে , আমার কলম লিখে গেছে অসমাপ্ত যত জীবন কথা,
মেধাবী এক কল্পকিশোর, ডাগর দু-নয়নে যার , আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন,
এক স্বপ্নিল তরুণ,ভালোবাসার নারীর সাথে ঘর বেঁধে যে হারিয়েছে তার স্বপ্ন,
এক সাংসারিক ঋণগ্রস্ত পথিক মানুষ, এক ঘোরতর সামাজিক যাযাবর,
এক ভালোবাসার কাঙ্গাল, যার দু আঁজলা ভরা ভালোবাসা
কেবলই আঙ্গুলের ফাঁক গলে জ্যোৎস্নার মত চুঁইয়ে পড়ে অনুক্ষণ,
ঘুমন্ত সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে থাকা এক বাবার গল্প,
অসুস্থ স্ত্রীর অসহনীয় শারীরিক যন্ত্রণা লাঘব করতে না পারা
এক অসহায় মানসিক যণ্ত্রণাবিদ্ধ প্রেমিক স্বামীর গল্প,
মনের গভীরে বৃত্তের পর বৃত্ত তুলে ঢেউ এর মত
একের পর এক গল্প জমা হচ্ছে আমার কলমের ডগায়,
যেসব গল্প শুরু তো হচ্ছে কিন্তু কোন শেষ নেই তাদের।
তাদের মাঝেই তুমি আছো। ঘিরে আছো আমর বহির্জগত অন্ধকার করে।
আর দেখো, রাজাবাবু, অসমাপ্ত সেই জীবনের চুপকথা থেকে
কেমন মৌমাছির মতো ছড়িয়ে পড়ছে গল্পের ঝাঁক
আমার ভাণ্ডারের সব শব্দ সব ভাষাজ্ঞান কলমের শুকনো আখরে
শুধু তোমার গল্প বলতে বলতেই কেমন চুপিসারে ঘুমিয়ে পড়েছে।
তাই, আমি তোমায় নিয়ে গল্প লিখতে পারিনি রাজাবাবু,
শুধু তোমার নামে এক ভালোবাসার চারাগাছ
নিরিবিলিতে আমার মনের মাটিতে পুঁতে রেখেছি।

প্রলাপ
সৌভিক দা'

শেষরাতে কিছু সবুজ ধোয়া ঢুকে মাথার ভেতর
ওলটপালট করে দিচ্ছে সব নাগরিক ব্যঞ্জনা।
আমি ক্যালেন্ডারের পাতায় মিশে যাচ্ছি যেন রাখাল বালক -
আমি শো-কেসে সাজিয়ে রাখা বায়ুযানে চেপে কৃষ্ণ-গহ্বর -
বাতাসে দুলতে থাকা জানালার পর্দাগুলো যেন ম্যাজিক কার্পেট
ভেসে যাচ্ছি নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বনের ভেতরে
কীভাবে কী করে যেন গতরাতে কিছু সবুজ ধোয়ায়
ওলটপালট গেছে আমার রাস্তাঘাট, দোকানপাটের সহজ ঠিকানা।
কারা যেন অবৈধ মুদ্রার মত গোপন কাগজে
ফটোকপি করে নিচ্ছে আমার শরীর, রক্ত ঘামের জলছবি !
কারা যেন কর্পোরেট বাণিজ্য দিচ্ছে শিল্পের মেধাকে !
আহ ! শালার বণিকের দল !
শেষ পর্যন্ত কিছুই বাদ দিলোনা তাদের প্রফিট মার্জিন থেকে...

তিতাস একটি নদীর নাম
ইন্দ্রানী সরকার

ফুলের এতই ভালোবাসা
মনে জাগায় অনেক আশা |
কিন্তু ফুল তাও ঝরে যায়
তবু ভালোবাসা রেখে যায় |
ফুলের মিঠাস্ চাঁদের মিঠাস্ ...
ভরা শ্রাবণে চাতকী তিয়াস ..
ছোট্ট নদীর নামটি তিতাস ..
অনুভবে ভরে আজ চারিপাশ |
দূরের ওই বাঁকা নীল ঝরনা
আমায় কেন আপন করনা ?
তোমার বুকের মুক্তো সোনা
কেন আমায় কুড়োতে দাওনা ?
তিতাস তিতাস আমার তিতাস
কেমন করে আমায় ভেজাস ?
আমার বুকের গভীর পিয়াস
তোর জলে কী মেটাবি সে আশ ?

তবেই হৃদয় হয় সুখময়
শামীম পারভেজ

হৃদয়
বেড়ায় হৃদয় মাঝে
তাজা হৃদয় হৃদয় খুঁজে
হৃদয় দিবে উজাড় করে
ভালবাসবে হৃদয় বুঝে
হাত বাড়ালেই পায়না হৃদয়
হৃদয় পাওয়া সহজ নয়
হৃদয় পেতে থাকবেনা ভয়
হৃদয় পেতে শ্রম দিতে হয়
হৃদয় হাতের মোয়া নয়
পেলেই তা করবে জয়
প্রকৃত হৃদয় পেতে হয়
তবেই হৃদয় হয় সুখময়

কে ?
ডাক্তার শাহ্ নাজ বীথি

দরজায় কড়া নাড়ে , কে ?
আমি দুঃখ !
তুমি বুঝি জানো না
তোমাকে দিয়েছি নির্বাসন
যবে এসেছে সে !
জানালায় উঁকি দেয় , কে ?
আমি সুখ !
বড্ড দেরীতে এলে
শান্তিকে করেছি আলিঙ্গন
দেখা যবে দিয়েছে সে !
মনে দোলা দেয় , কে ?
আমি আনন্দ !
এসেছ সময় মতন !

মানুষ
কবি আসাদ
খুব বেশি স্পর্শ কাতর,
ঈশ্বর থেকে বিজ্ঞান
আমাথেকে আমিতে ,
সর্বময় ব্যাপী অসহায় প্রাণী
মানুষ !
ক্ষণে ক্ষণে , দমে দমে
নিজের মাঝে আপনারে খুঁজে হারিয়ে যাওয়া ?
জন্ম লগ্নের একক অস্তিত্ব আদম
অথবা
ক্ষুদ্র থেকে অতি ক্ষুদ্রকায় অ্যামিবিয়াতেই
নিজেকে খুঁজে পাওয়া !
অথচ
রাজা রাজ্য , সমাজ, ধর্ম
হিংসা বিদ্বেষ , হিংস্রতায়
মিথ্যে খোলসে নিজেকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে
পশু থেকে অতিনগন্ন সাঁজার কি প্রয়োজন ?
আমাতে আমি একক অস্তিত্বে
ঈশ্বরের মতো মহৎ থেকে অতি উত্তম
যার একক অদ্বিতীয় নাম
মানুষ !

প্রশ্নের উত্তর
তামান্না রুবাইয়াত
বহু বছর যাবত একটা প্রশ্নের উত্তর
খুঁজে খুঁজে আজ আমি পরাজিত
সেটা আমি বলব না,
মানুষ নামক জীবের কাছে
প্রশ্ন করতে করতে ক্লান্ত হলে
হেসে উড়িয়ে বলে "কি বোকা রে..."
এমন প্রশ্নও করে নাকি
শিক্ষা,বিবেক বুদ্ধি সব কি
শিকায় তুলে রেখেছ?
কি হবে এত ডিগ্রী নিয়ে
ওরা ধমক দেয় ঠিকই
কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা দেয় না
শুনেছি সুযোগ মাঝে সাঁঝে ফিরে আসে
সময়ও নাকি কথা বলে
আমি সেই অপেক্ষায় আজও আছি
কবে সুযোগ পাব আর কবে সময়
মুখ খুলবে আর অসহায়ত্ব দেখে
কবে বলবে এইবার আমি প্রস্তুত
করেই ফেলো প্রশ্নটা, আমি বলব
আমার বড্ড জানতে মন চায়
চলার জন্য সঠিক পথ কোনটি?
কিন্তু উত্তর মিলে না যে যার মত
নিজের জীবন মুঠির মধ্যে পূরে
জান বাঁচিয়ে চলে যায়
কিন্তু আমার মত বোকার
প্রশ্নের উত্তর কেউ দেয় না।

অমানুষ
নাইম হাসান

ভালো
মন্দ মিশে আছে
সব ধরণের সমাজে,
আমি রোগীকে নয়, রোগকে ঘৃণা করি
আমি পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা করি
মানুষ নামক শ্রেষ্ঠ জীব কেন হয় অমানুষ?
জেনো আমি পাপী আমার চেয়ে যে বড় কেন পাপী নেই!
বাবার স্বপ্ন হলনা পূরণ,
পারলাম না সাজতে ভালো মানুষ_
সবাই ভাবে আমি কিনা বলদ ভদ্রলোক,
হায়; আমি বেশ কিছু হিংস্র জন্তুর মাঝে এক নিরীহ বলদ।
ধর্ম পালন না করলে নিশ্চিত জাহান্নাম,
তবে যারা কিনা ধর্মের নামে রাজনীতি, হত্যা, ধর্ষণ, দুর্নীতি চালায়,
বিধাতা তাদের জাহান্নামের কোন চূড়ায় পাঠাবেন?
ভালোবেসে বলেছিল অপরাজিতা একদিন_
সত্যিকারের মানুষ হয়ে সামনে দাঁড়াতে,
আমি দুর্নীতি করি না, করি না সন্ত্রাস, মানুষের ভরসা নিয়ে করি না খেলা
তবুও কি আমি অমানুষ?
আজ অপরাজিতা এক বিত্তশালীর সহধর্মিণী;
মানুষের চোষা রক্তে চলে তার বিলাসিতা!
আমায় ভাবে রাস্তার কুত্তা।
সত্যি আমি অমানুষ_
হায়েনা রুপি মানুষের ভিড়ে

আকাশধারা
অভিলাষা

স্মৃতির ভুবন নিরিবিলি,
বনপলাশীর পদাবলী,
আবেগ মাখা ভালোবাসায়,
ঘর ভুলেছি মোহন নেশায়।
পরশকাতর আর্তি নিশির,
বানভাসি চোখে স্ফটিক শিশির।
অবোধ চাওয়ায় শ্রান্ত মন,
অপেক্ষাতে আর কতক্ষণ?
দিনে রাতে,রৌদ্রে ছায়ায়,
মন উচাটন প্রেমের মায়ায়।
নকশীকাঁথার রঙের মত,
রঙিন হোক আজ স্বপ্ন যত।
মনবাগিচায় স্পর্শসুখ,
মনমুকুরে প্রিয়মুখ।
হাসিকান্নায় সময় হারায়,
নদী ছোঁয়া আকাশধারায়।

সুখের পরশ
আহম্মেদ রফিক

সুখের খোঁজে ঝঞ্ঝায় নামি
আছড়ে পড়ি পাহাড়সম ঢেউয়ের বুকে
মাছের তরী নিখোঁজ, মানুষের পোণাগুলিও
কত কান্না আরও চাই তোমার
কত উৎকণ্ঠায় শীতল হবে ভালোবাসার ঝুপড়ী

ব্যলকনি ভরা পূর্ণিমা দেখো, অথচ
কারো আকাশ হারিকেনের আলোয়
মৃত তালগাছের শ্যাওলা বেয়ে নেমে যায় ঘাটে
যেমন করে স্বপ্নগুলো দাদনে বাঁধা থাকে

সুখের খোঁজে অনামিকায় আংটি লাগাই
খুলে যায়, হারিয়ে যায়, ধরে রাখা দায়
কত বড় ঢেউ হানিছে আঘাত
বিশ্বাসের দর্প ভেঙে চুরমার

নিবু নিবু সলতে শুকিয়ে যায়
কত আর সইবে ক্ষুধা.....অপমান
সুখের খোঁজে সিগন্যাল ভাঙি
হারিয়ে যাই পরশে তার

পত্র দিও
ইমেল নাঈম
সেদিনের রাতটি ছিল মেঘমেদুর
মনের আকাশে উড়েছিল বলাকারা
আকাশ মাটিকে ভালবেসে খেলেছিল জলকেলি ,
মাটিও ছড়িয়েছিল সোঁদা গন্ধ
আকাশের ভালবাসা পেয়ে ,
তাদের এমন প্রণয় দেখে
চাঁদ অমাবস্যাকে পাঠিয়েছিল প্রেম পত্র
উঠোন দিয়ে আকাশ-মাটির ভালবাসা
দেখতে দেখতে -
দুষ্ট চোখ খুঁজে পেয়েছিল তোমায়
বারান্দা দিয়ে তাকিয়ে দেখছিলে বৃষ্টি
ঝড়ো বাতাসে উড়ছিল এলোকেশী চুল
নারীর তৃতীয় চোখ তোমায় জানিয়েছিল
আমার উপস্থিতির খবর
সাথে সাথে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলে লজ্জাবতীর মতন
সেই থেকে স্বপ্নরা খেলা করে তোমার চুলের বেণীতে,
খোঁপাতে , কেশের গোঁড়ার প্রতিটি রন্ধ্রে
পত্র দিও প্রিয় ,
ফসলের পাকা ধানের মাঠ হতে কর্ণফুলীর মোহনার কাছে ,
পত্র পেলে , অঝোর ধারার বৃষ্টিতে ভেজাবো এই মন
পত্র দিও প্রিয় ,
ঠিক চাঁদের মত করে এই আমাকে,
পত্র পেলে , তোমার ওই ললাটে আঁকবো স্বপ্ন
তোমার - আমার ভালবাসার বীজ বুনবো মাটিতে
নিশ্চিত একদিন -
প্রেমের সোনালী ফসলে ভরে যাবে সমগ্র পৃথিবী

প্রেমে, শব্দশৈলীতা!”
জাকিয়া জেসমিন
আঙ্গুলের ছন্দে শব্দের বুনন বেঁধে
কথার পরে কথা সাজানো?
সে সব এখন বাক্সবন্দী
হাতে বাঁধা শব্দের শৈল্পিকতায়
প্রাণ থাকেনা,
থাকেনা তোমার কণ্ঠের উত্তাপ,
নিঃশ্বাসের গভীরতা;
আদরনীয় অদৃশ্য স্পর্শ!
কথাগুলো যে পথে বেরিয়ে আসে,
সে পথের উপরে একটু আশ্রয়ের আহ্বান
তো থাকেনা, হাতে বাঁধা ছন্দের শিল্পে।
কণ্ঠের বুননে থাকে প্রাণের স্পন্দন,
হাসিতে ঝরে পরে উপলব্ধি,
নিজেকে ধরা দেবার মাঝেও
এক অন্যরকম তৃপ্তি!
সে কথায় না থাক কোন নির্দিষ্টতা,
না থাক ছন্দ, বা গতি;
না হয় থেমে থাকে, কিছুটা সময়।
তবু কথা হোক
দিনে,
রাতে,
শত ব্যস্ততার ফাঁকে,
তোমার আমার।