ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫জানুয়ারি ২০১৩, ২ মাঘ ১৪১৯,২৭তম সংখ্যা।

২৭তম সংখ্যায় আছে মোট ১৬টি কবিতা, লিখেছেন-অমিতাভ দাশ,শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়,এম আর ফারজানা,সৌভিক দা',রেজওয়ান তানিম,মৌসুমী সেন,জে এম আজাদ,সৈয়দ সাইফুল রহমান সাকিব,পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত,কানিজ ফাতেমা রুমা,অনন্যা ব্যানার্জী,রোকসানা লেইস,রুদ্রনীল রায়চৌধুরী ,সৌমিত্র চক্রবর্ত্তী,শামীম পারভেজ এবং ফেরদৌস হাসান খান ।




আনমনা রঙ্
অমিতাভ দাশ

একগোছা রজনীগন্ধার মতোনই থাকুক না 
  কবিতার ঘ্রাণ

আমি যাই মিলিয়ে...
  মরুবেহাগের সুরেলা সানাই,
  হাল্কা আবেশী ধোঁয়া, একটু আবেগী!

অনেকটা আবীর,
  থাক, ছড়ানো থাক, আনমনা রঙ্...
রঙিন করেই নিও দুপুর বিকেল...

পাখিডানা চোঁয়ান আলোয় 
  ইচ্ছেরা ছিল,
  ছিল করে ভীড়...

আগ্রহী হাত রেখে তোমার চিবুকে
  তন্বিষ্ঠ ঘনিষ্ঠ সুনিবিড়
 এক 
  কাছে টেনে দেখা!

কে তুমি রোদেলা নদী?

কি মানচিত্র আছে আঁকা গো?
 দীঘল চোখে আর
 সহজিয়া বড় বেশী
  সহজিয়া বাউলিনী ঠোঁটে?

স্খলিত অন্যমনষ্কতা শুধু ছড় টেনে 
  দূরে নিয়ে যায়...
  হাতছানি দেয় পথ
পথ নিরুদ্দেশী!


ভালবাসাডোডোপাখী
শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

ভালবাসা ক্রমক্ষীয়মাণ এই পৃথিবীর থেকে
ভেঙে যায় একে একে হৃদয়ের সাঁকো
কোথায় হারিয়ে যায় সুকুমার মনের বিশ্বাস
যেমন হলুদ পাতা উড়ে যায় বাতাসের সাথে এঁকে-বেঁকে

উড়ে যায়, ঝরে যায়, সবুজ সজীব হয় ফিকে
গান গেয়ে চলে যায় মাতাল বাউল
তখন নৈশব্দ এসে ভিড় করে জীবনের আনাচে-কানাচে
ভালবাসা লুপ্তপ্রায় ক্রমে দিকে দিকে

যে মেয়েটি রেখেছিল মুখ তার দইতের বুকে
আতর মেখেছে তার দুবাহুর গভীর আশ্বাসে
কেটেছে অনেক বেলা চোখে চোখ স্বপ্ন বুনে-বুনে
তারাও হারিয়ে যায় দিশাহীন এদিকে সেদিকে

যে ছেলেটি এঁকেছে চুম্বন তার নারীর চিবুকে
সাগর সিনান করে তৃপ্ত হোতো আকণ্ঠ জীবন
গীটারে তুলেছে সুর ভালবাসা স্বরলিপি দিয়ে
গান ভোলে সে পুরুষ, ভুলে যায় সেই নারীটিকে

অথচ পৃথিবী চায় ভালবাসা, প্রেমিকা, প্রেমিক
অথচ ভোরের সূর্য আলো আনে হেসে ভালবেসে
অথচ জীবন বাঁচে ভালবাসা জড়িয়ে জড়িয়ে
তবুও তেমন করে কেউ আর ডাকে না সে ডোডোপাখিটিকে

প্রিয় শহর (কুমিল্লা

এম আর ফারজানা

ফেলে এসেছি সেই ধুলো উড়া পথ
বন্ধুর সাথে খুনসুটি ভুলে যাওয়া শপথ
আবছায়া পিছুটান আজও আমায় ডাকে
গোমতির পাড়ের সেই মোহনার বাঁকে।
হুটখোলা রিক্সায় ঝুম বৃষ্টিতে ভেজা
আনমনে চুপিসারে বন্ধুকে খোঁজা
ধর্মসাগর পাড়ে কত লোকচুরি খেলা
মান অভিমানে ভাসিয়েছি ভেলা।
ভিক্টোরিয়া কলেজের ক্যান্টিনে গিয়ে
বাকী খেয়ে ফাঁকি দিয়ে বন্ধুকে নিয়ে,
মাতাল পাগল করা সেই দিনগুলো
কখন কেমন করে কোথায় হারালো।
নাচ, গান আসরের শিল্পকলায়
কেটেছে কত বিকেল তুমুল আড্ডায়।
জানিনা বন্ধুরা আজ কে কোথায় আছে
রয়ে গেছে বহু ঋণ প্রিয় শহরের কাছে

প্রস্থান
 
 সৌভিক দা'
আমি চলে যেতে পারি আজও। আমি চলে যেতে পারি কালও। আমি চলে যেতে পারি যে কোনদিন। ভীষণ ব্যক্তিগতভাবে আমি চলে যেতে পারি। যেভাবে অগোচরে চলে যায় একটি ফুল, কিংবা একটি পাখির মৃত্যু হয়। রোদের অবহেলায় একটি স্বর্নলতা পাতা ঝরে যায়। অকালে জন্ম নেয়া কোকিল, খড়কুটো-বাসা ভেঙে উড়ে গেছে যে চড়ুই, উঠোনের সবুজ ঘাস কখন হলুদ হয়েছে। কে কবে খবর রেখেছে তার। আমি চলে যেতে পারি সেভাবে। তুমুল গোপনে। যে কোনদিন...


চন্দ্রহীন জোছনা
রেজওয়ান তানিম

হয়ত পোয়াতি হবে ক্রম অবসন্ন
এইসব শবনিদ্রাভ রাত! যখন
বিষণ্নতার তুলনাহীন সঙ্গম;
ছাপিয়ে যাবে নির্জনতার অর্ন্তদ্বন্দ্ব।

অশরীরি সময়ের কোলে, জন্ম নেবে
বিষাদশাবক। শব্দহীন কান্নাপর্ব
আলেয়া খেলায় মত্ত, ‌আসন্ন বিপন্ন
বিস্ময়- চন্দ্রহীন জোছনার অনন্তে।

যমজ বেদনায় লেখা, মৌনাক্রান্ত শব্দ
শীতের সন্ধ্যায় ঢালে, বিরহ শরাব!
ভস্ম থেকে ফেরা, বিজারক সময়েরা
গ্রাস করে কবিতার শরীরের ঘ্রাণ

পাসওয়ার্ড
মৌসুমী সেন

জটিলতার দ্বারে-
খুঁজে দেখি সম্পর্কের পরিধি !
নক করতেই অপরপ্রান্ত থেকে সুমিষ্ট কণ্ঠস্বর
পাসওয়ার্ড চাই রুমে প্রবেশ করার,
হতভম্ব হয়ে ভাবি সেকি 'গো !
আমার ছোট্ট শিশু পুত্রটির 'কি হলো ?
একটু আদরের ভঙ্গিতে বলি-
বাবা, রুমে ঢুকতে পাসওয়ার্ড !
সাহাস্যে বললো কেন নয় ?
প্রযুক্তির ফাইলে কোন কিছু পাসওয়ার্ড ছাড়া হয় 'না
আমরা তো ডিজিটাল বাচ্চা, তাই রুম থেকেই শুরু
ব্যাপারটা আন্দাজ করতে না পেরে-
কয়েকটি অক্ষর সাজিয়ে বলে গেলাম পাসওয়ার্ড,
সু-মিষ্ট হাসিতে হেসে অনুনয়ে বলল_
অনুপ্রবেশের আগে ইমেল পাঠাও, যে তুমি এখানে আসছো !
অবাক হয়ে ওর বিবৃতি শুনে যাচ্ছি, আর বলছি-
কেন বাপ, এমন কথা বলিস কেন ?
আমায় বলে সারাদিনের নোটিফিকেশন খুঁজে দেখো_
তুমি আমায় কতটুকু টাইম দিয়েছ ?
হঠাৎ' তো এলে, তাই রুমের সিকিউরিটি হিসেবে
ইমেল-পাসওয়ার্ড আমি টেলিভিশন রিমোটে'-
সিকিউরিটিতে সেভ করে রেখেছি অনিশ্চিত ভেবে,
যাতে তুমি রুমে অনুপ্রবেশের সুযোগ না পাও
' শিশুসুলভ আচরণের মাঝে বিক্ষুব্ধ প্রভাব-
আমায় নিয়মের কার্যক্রমের উপলব্ধি শেখালো।
আরও একটি ব্যাপার পরিষ্কার হলো
অনেক কিছু শেখার আছে আমার।
ছোট যদিও, তারও নিজ অধিকারে ভাবনার পরিসর আছে;
সেই পরিসর প্রিয়জনের সময়ের হিসেব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে-
নিজ অস্তিত্ব বলয় দাগ কাটে নির্মমতা' সাক্ষ্যে ।।

 
ভালোবাসা মানে

জে এম আজাদ

ভালবাসা এক অনন্ত সাগর
যে ডুবেছে সেই শুধু জানে
কতটা জল আর কতটা পাথর ?
ভালবাসা মানে অশ্রুত বোধের কাজল,
লাগলে চোখে একবার ফিরে আসা দায়,
ফিরে আসা মানে জোস্নার সাথে চাঁদের বিরোধ,
ফিরে আসা মানে, বুকের ভেতরে দহনের রোদকে সরানো,
বেদুঈন জীবনে ঠাই ছাড়া মুক্তি মেলেনা
ভালবাসা মানে
সদ্য ফোটা কুসুমের সাথে রোদ্রের লুকোচুরি,
কান্না এলে চোখে লুকোবার ছলে জলে নেমে পড়া,
ভালবাসা মানে দীপ্ত চোখের দুরন্ত কিশোরীর
গৃহত্যাগে কারো কারো বুক কেঁপে ওঠা,
ভালবাসা মানে দুজনার মাঝে
সাতরে পার হবার এক নদী জল,
হৃদয়ে বিষজ্বালা, বোধিতে অনল


প্রতারক আর প্রতারনা
সৈয়দ সাইফুর রহমান সাকিব

উলে বোনা সোয়েটারে হাতা
থাকবে না। বুননেও দিও
কিছু ঘৃনা-অবিমিশ্র প্রণয় যাতনা।
চিন্তায় কিছুটা
আকাঁবাকা রেখা টেনো-
কিছু মনগড়া ছবি। খুঁজে পাই
যেন ফেরারী হবার পথ
বাহ! বুনেছো! বেশতো!
কেমন দেখাচ্ছে আমাকে? দেখতো!
আমি জানি মানিয়েছে বেশ
প্রতারক আর প্রতারনা

  
সর্বাণী,দ্য হ্যাংওভার
 পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত

প্রেমের ওপর সিলমোহর বসলো কাল রাত দশটায়,
স্মল ওয়ান্ডার,কথা থেকে কিংডম বিপাসা বসুর চেয়েও বেশি।
কাগজের নৌকো ভেসে চললো মিনা-বাজারের দিকে।
ঝিল আমাদের প্লেস্টেশন,সর্বাণী-থিয়েটার,আহ্লাদিত আমি।
চতুর্দিকে লায়লা-মজনু শ্যামা উত্তীয় গীতিকবিতার প্রবৃত্তকরণ।
তসরীফ রাখো শ্লোক কবিতার খাতায় ফল দাও,
মনের দীপ্ত আগুনে আমি পুড়ে ছাই হয়ে যাই
টিলার ওপর অতিবাস্তব জাবর কাটছে কিটক্যাট
ছবি আঁকছে গসিপ নায়িকা


বাঁধন

কানিজ ফাতেমা রুমা

কত বছর কেটে গেছে
দু মুঠো ভাতের নিশ্চয়তা
এখনো ভাবায়,
দহনক্রিয়ায় গ্রীষ্মের রোদে
দুঃসময়ের মতো
তার সাথে সাথে চলে
অতীত, অতীত থেকে বর্তমান
বর্তমান থেকে ভবিষ্যৎ
কত যুগ ধরে
এক টুকরো কাপড়ের জন্য
বাতাসে আগুন, পানিতে আগুন
দগ্ধীভূত উদ্যানেও
খালি পায়ে হেটে চলা,
দুর্দমনীয় শামুকের চলাফেরায়
পা কেটে রক্ত ঝড়ে
আর সাথে চলে
অতীত, অতীত থেকে বর্তমান
বর্তমান থেকে ভবিষ্যৎ
কত কাল মনে নেই
এক চালা ঘরের জন্য
বুকের ভৈববে দুঃস্বপ্নে সিক্ত
কাঁথা গুলোর সাথে বসবাস
মাংসে প্রবল হুতাস, চোখে জ্বলন
কণ্ঠে হাহাকার,
প্রতিবাদ না হয়না!
ভাত, কাপড়, একচালা ঘর
কোনটাই আয়তনের মাঝে নেই
নইলে কে এমন চায়
ছিন্নভিন্ন বাঁধন!
এভাবেই যায়
অতীত, অতীত থেকে বর্তমান
বর্তমান থেকে ভবিষ্যৎ

 স্মৃতিতে , ভালোবাসা
 
অনন্যা ব্যানার্জী

ভালোবেসে কলঙ্কিনী নাম নিতে
আপত্তি নেই আমার
আপত্তি নেই প্রতি মুহুর্তে -
তোমার দেওয়া উষ্ণতা কে রোমন্থন করতে
প্রথম চুম্বন বল
কিম্বা ,
কিছু স্বপ্ন মাখা আদর
যা - আঁকড়ে ধরে আছি এখনও

সেই সঙ্গে আহরন করছি
কিছু লোনা জলের স্বাদ

হৃদয়ের গভীর গ্রন্থনে
সুপ্ত আমার ভালোবাসা ,
তোমার সৌম্য দর্শনে
আজও আমার আত্মসমর্পণ

কিঞ্চিত আবেগে ভর করে
তোমার ভেলায় ভেসে চলা
আর কঠিন তোমার জীবন দর্শন

তীব্র আকর্ষনে পরাজিত
আমি আমার ভালোবাসা
উষ্ণতা আদর চুম্বন্
প্রেমের অন্তমিল হীন জীবনে
ধৈর্যশীল আমি
নিয়ে তোমার স্পর্শের আশ্বাস ।।


দিকশূন্য উচ্ছাস

রোকসানা লেইস

দেহ বল্লরী নেচে যায় মুদ্রা তুলে বাতাসের ছন্দে কত্থক ঢঙে
স্বপ্নীল চোখ মেলে জাগো তুমি ঐশ্বর্যবলয়ে

আজ আমি হৃদয় তানপুরা ধুয়ে নিব চন্দন জলে
চুলে দিব তুলসী ঘ্রাণ, কস্তুরী মেখে নেব কাঞ্চনী দেহে
মদির আঁখিতে জড়াব শ্যামল ছায়া
ছড়িয়ে দিব সূর্যাস্তের রঙ-মায়া চপল অধরে
রঙধনু রেশমী তন্তু শরীর জুড়ে

স্বর্ণালি লতার ঝালর দুলাব চাঁদোয়া
বাতাসের শীষে ভাঙ্গবে জলতরঙ্গ
বৃন্দাবন ঘাসের গালীচায় বসব ঋষি আসন পেতে
যোগী যজ্ঞধ্যানে জ্বেলে হোমের আগুন চারপাশে
খেলে যাবে অমরাবতি বাতাস মধুগুঞ্জরণে
স্বর্গীয়সুধা বীণ টানছে প্রবল কম্পনে-
তুমি বাল্মীকির ধ্যান ভেঙ্গে হাহাকার শূন্য হৃদয়ে
অমরাবতীর ঘ্রানে দিকশূন্য অস্থির উচ্ছাসে
ভুলে যাবে নিমগ্নতা- উল্কা পতনে সাম্পান ভাসিয়ে
ছুটবে বৃন্দাবনে ঋষির আসনে বৈরাগীর একতারা ঢঙে

  
অবিচ্ছেদ্য প্রেক্ষাপট
রুদ্রনীল রায়চৌধুরী

অসম্ভব সুন্দরে সেঁজেছে-
আজ তপ্ত মরুদ্যান;
লীলাভূমিতে যে টুকু পলি ছিলো,
তাও আজ বিলুপ্ত !
অস্তিত্বের লড়াইয়ে বড় বেশি_
স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল
আজ তার পটভূমি,
অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে
শুধু গেঁথে আছে স্মৃতির প্রেক্ষাপট
মাঝিবিহীন নৌকা নাকি-
গন্তব্যে অপারগতা পায় !
কিন্তু জীবনের পালতোলা নৌকাগুলো-
আজ সারি সারি চলছে যেন;
অপুর্ণতার পরশ থামাতে পারেনি
গন্তব্যের দিক নির্দেশনা;
সময়ের পূর্ণতাই_
এনে দিয়েছে বিলীনতার গন্তব্য
অলীক দর্শণে জীবন
সাজানোর বাসনায় মত্ত্ব ছিলো__
জীবনের সীমাবদ্ধতা;
গন্ডি পার হওয়ার মতো ধৃষ্টতা,
দেয়নি কখনো পাঞ্জাকষা জীবন.
শেষ যখন বৈধব্যতার বেসাতি থেকে
মুক্ত করে নিয়েছে, অলীক দর্শন
জোড়াশালিকের সাথে সন্ধি করে
পৌছে দিয়েছে নিশানায় !
বার্ধক্য যেখানে-
বয়সের ফ্রেমে বন্দি,
সেখানে স্মৃতির প্রেক্ষাপটে আকাঁ ক্যানভাস
গুমরে কাঁদার পরিবর্তে,
জমা করেছে নিশানার লক্ষ্যবস্তু !
তবেই কি প্রকৃতি_
শুন্য করতে চাইছে মরুদ্যান ?
নাকি পূর্ণ্য করবার আশে,
শুন্যতাই তার শ্রেষ্ঠ বিনোদন।

বিবর্ণ দিনের স্বরলিপি
সৌমিত্র চক্রবর্ত্তী



আয় খোকা, একটুখানি বোস এখানে,
 অনেকদিনই দেখিনি তোকে!
  তোর ছায়ার সঙ্গে কথা বলে
 ছায়ার গায়ে হাত বুলিয়েই  
কেমন করে দিন কেটে যায়।
 আবারও একটা বিবর্ণ দিনের স্বরলিপি;
 এখন তো আর শুরুও নেই
 শেষও ধোঁয়ায় ভারাক্রান্ত।
  খুবই এখন ব্যস্ত থাকিস?
 বাবা ডাকটা কেমন যেন…!
  আবছা কুয়াশায় মনেও পড়েনা
  কাল নাকি তোর জন্মদিন?  
কেমন যেন তাড়া সবার  
কেউ বলেনা আমিই শুধু  
দুধে কেন চোনার মত!
  জানিস খোকা, জন্মদিনে  
মা আমায় পায়েস দিত
  নক্শীকাঁথার আসন
  আর সামনে প্রদীপ  
পায়েস-বাটি হাতে দিয়েই  
জড়িয়ে ধরে কত্ত আদর  
আজকাল আর অনেকদিনই  
গায়ে তো কেউ হাত রাখেনা,
জড়িয়ে ধরে কেউ বলেনা-
বাবা তুমি কেমন আছো?’


আসতে নাহি মানা
 
শামীম পারভেজ

শীত লাগলে চলে এসো
আমার হৃদয় মাঝে
হৃদয়ে আছে তাপ
সকাল দুপুর সাঁঝে
হৃদয়ের দরজা খোলা
যদি আসো সেথা
ভালবাসার হিটার দিবো
তুমি জানো কি তা !
শীতলতা দূর করে দেয়
আমার হৃদয়খানা
ভালো হৃদয় আছে যাদের
আসতে নাহি মানা

 
আমি কাপুরুষ নই

ফেরদৌস হাসান খান
আমি কাপুরুষ নই-
আমার লেখার পান্ডুলিপি জুড়েও
বিদ্রোহের বারুদ বিস্ফুরিত হয়
শত অত্যাচারিত মুখের বিপরীতে দাঁড়িয়ে।
যদিও আমার কবিতাগুলো
শহর মাতাল করতে পারিনি
তাই আজকাল তার ঠাঁই হয়েছে
কাগজ কেনা ফেরিওয়ালার টুকরি জুড়ে।
আমি মুক্তিযোদ্ধার মত
বুলেট আর মেশিনগান তুলে নিতে পারিনি
কলম আর কাগজই আমার একমাত্র সম্বল
পারিনি বীরাঙ্গনা নারীর মত আত্মসম্ভ্রম দিয়ে স্বাধীনতাকে চাইতে।
আমি শুধু চেয়েছি-
চেতনার নতুন সুরে রাঙ্গাতে স্বদেশটাকে
আরো একবার মুক্তির স্বাদ দিতে
আমাদের তারুণ্যতায়।