ঢাকা,মঙ্গলবার,২৮ আগষ্ট ২০১২,১৩ ভাদ্র ১৪১৯,১৭ তম সংখ্যা ।


 " বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের  প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা "
 
১৭ তম সংখ্যায় আছে মোট ১২টি কবিতা, লিখেছেন-মৌসুমী সেন,রেজওয়ান তানিম,কবির য়াহমদ,নীল আলো,মামনি দত্ত,সঞ্জয় চ্যাটার্জ্জী,শামীম পারভেজ,মৌ দাশগুপ্তা,আহমেদ মুনীর,সায়ক চক্রবর্তী, শ্রীশুভ্র এবং জিনাত জাহান খান


নিয়ন্ত্রনহীন অনুভূতি
মৌসুমী সেন

আমি চোখ বুজতেই তোমার-
অস্তিত্ব অনুভব করি,
ভাবনার সিঁড়ি বেয়ে আসি-
তোমার মনের গভীরতায়;
তুমি কি তা বুঝতে পারো ?
না বুঝলেই বেঁচে থাকি;
বুঝতে পারলেই যত যন্ত্রণা!

তুমি যখন আমায় বুঝতে পারবে,
তখন যে ভাবনা থেমে যাবে!

আমি চাইনা তুমি আমায় বোঝ,
তোমার না বোঝার মাঝে-
আমি খুঁজে নেব বিরহে তুমি কত কাছের।
সেই অনলে পুড়ে পুড়ে-
আমি তোমার তুমিকে দেখবো
নতুন রঙ্গে নতুন অনুভূতিতে।

বিরহ যে তোমায় কতটা কাছে টানে
তা দেখবো আমি কাছ থেকে!

যাতনায় জ্বলতে জ্বলতে কখনো সখনো
হয়ে উঠবো বড় বেশী অশান্ত,
তোমার অস্তিত্বকে অনুভব করবো
কামনার দুর্বার গতির অবলম্বনে।
নিষ্পেষিত হৃদয় তৃষ্ণায় মরুভূমির-
বালুচর তৈরি করবো বাঁধ নিয়ন্ত্রণে,
আমি দেখবো পৃথিবী তোমার মাঝে,
প্রকৃতির বৈষম্যতার চাদর মুড়িয়ে
জোছনার বাইরে ছায়াহীনতায়।।

বিচ্ছুরিত বিষাদ কণা

রেজওয়ান তানিম


নিতান্তই অলীক তোমার সত্তা, ধুম কুয়াশায় হেটে বেড়ানো প্রেত শরীরের মত, কল্পনার অনিবার্য জাল পেঁচিয়ে ধরেছে সর্পিল সারপেন্টের মতন। স্মৃতি, বাস্তবতা আর আমার স্বল্পদৈর্ঘ্য স্বপ্নের বেড়াজালের মধ্যে তোমার বাস; দ্বন্দ্ব উসকে দেয়া তোমার মাংসাশী আনন্দ, আমি নির্বিবাদে মেনে নেই। কষ্ট পাব মেনে নিয়েই ভালবেসেছিলাম তোমাকে, উজাড় করে দিয়েছিলাম কর্মহীনতার ফুটফুটে সাতটি সকাল, ঘুমহীনতার তিন তিনটি অন্ধ প্রহর, এমনকি আমার তথাকথিত সৃজনশীলতার অনির্বচনীয় প্রহরগুলো।

আধার তরঙ্গ বিলাসিনী, বুক ভরে তুমি চাষ করো প্রতারণার কালো আফিম! আমাকে নিয়ে খেলেছ মারণিক পাশা খেলা। আমার নিউরনে যখন অনুরণন চলছিল ঘুণপোকাদের জাবর কাটার অর্থহীন পূনরাবৃত্তিময় শব্দের মতন, যখন তোমায় আরো একটু বেশি সময় নিজের কানাগলিতে একাকী করে পাবার জন্যে, ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করেছি আলোকবর্তিকা জ্বেলে, তখন তুমি এইখানের নিমগ্ন নির্জনতাকে অশ্লীল অভিনয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেছ মৌ-মথ দর্শনে দৃষ্টিসুখ নিতে, ব্যভিচারের রাত জীবনের কালো আকর্ষণ, ওই পাব ক্লাবের মাঝে

নির্দয়া, আমায় তুমি বিষাদ চাষি করেছ, কি নিষ্ঠুরতায় আমার লাঙল ফলা বেঁকে গেছে ঊষর মৃত্তিকার বুক জুড়ে অবিরাম কর্ষণে, যার পরতে পরতে ছিল দুখপতঙ্গের কিউপ্রিক নীল রক্ত মাখা ! হতাশার বাতাবরণে পচে যাওয়া মস্তিষ্কে, আমার রক্তকাগজের ছেড়া খেরোখাতায় না পাওয়ার মহাকাব্যিক আল্পনা। অথচ তুমি, এই তুমি অদ্ভুত এক মদিরা সুবাসে নিজেকে মুড়িয়ে, নিতে গেছ উষ্ণতার লালায়িত সঙ্গম। অসভ্য সুখের দেশে হিম জড়ানো মৌনতার কোন আবেদন থাকে না, তাকে জড়াতে হয় কোলাহলের উদ্ভট গাউন

আমার রক্তের প্রতিটি শ্বেত কণা, অণুচক্রিকার প্রাত্যহিক প্রার্থনা বেদনার মঞ্চে। ভ্রান্তিবিলাসী হয়ে ছটফট করি প্রতিফলিত সূর্যালোকের রাতে, হেমন্তের উর্বর গর্ভবতী বিকেলে! আমি কাঁদতে থাকি ঝুমবরষা রয়, মৌনতার অদ্ভুত মুখরতায়। স্মৃতির পাতারা, তোমরা আমাকে পূর্ণ করেছ জমাট কষ্টের সিম্ফনি দিয়ে। কোন সুখ, কোন আনন্দ এমনকি জনাপাঁচেক লোকের কোলাহল উপভোগের সুখটুকু, বিনষ্ট করেছ ফালি ফালি করে কেটে। এখন আমার আর দু: চাষের কোন বর্গা জমি নেই, তাই বলছি তোমাকে- বেচে থাকাটা খুব সহজ, যন্ত্র হয়ে, শাদা কালো স্বপ্ন বিসর্জনে, আলো-ছায়া আবেগ ছাড়া জড় দেহের পার্শ্বস্থ বৃদ্ধি নিয়ে।
 
জানে অবনত পাতারা

কবির য়াহমদ

অবনত পাতারা জানে শৃঙ্খলিত গ্রামের মাটি
অবনত পাতারা জানে উল্লসিত রতিক্রিয়া।

বর্ষণ শেষে নিরুত্তাপ ভূধারায় নামছে এক কঠোর বাষ্প
ঊর্ধ্বপানে তাকিয়ে থাকে কালের মশাল
তারা উপলব্ধির দরোজায় টোকা মারে
শিক্ষিতজনের শীতলস্নেহে জড়িয়ে নেয় কালের ওম,
তাদের কথা আলাদা যারা আলাদা ভেবেছে নিজেদের
অবজ্ঞায় উপলব্ধি করেছে কিছু স্বর্গীয় গৌরব।

আমাদের কল্পৎসবে হাজির হয়েছিল কিছু সমার্থক শব্দ
বৃষ্টিদিনে তাদের ইশারায় দেখিয়েছি মেঘদল
আবারো অবনত পাতা আবারো রমণক্রিয়া
আমাকে দেখায়, আমাকে শেখায় জন্মরহস্য।

ঠিক যেন দিঘীর মত
নীল আলো
·
তুমি ঠিক যেন দিঘীর মত
আমি যতবার আঙ্গুল টেনে ভাগ করে দেই-
ততবার তুমি মিলে যাও,
ধৈর্যের দীক্ষা নিয়ে আমি এক ধ্যানে থাকি --
বিচলিত হয়ে যদি উঠতে চাই
তখনি তোমার প্রপঞ্চ সুক্ষজালে উষ্ণতা দিয়ে
আমার হৃদয়ে সুরভি ঢেলে দেয়।।

সীমিত সঞ্চয় মধুগন্ধী বিরহ দহন--
যা আমার অনন্ত কালের বিচ্ছেদী সুখ,-
অতলান্তিক দুঃখজরা দূর করে,
তারি প্রয়াসে আমি সন্মোহিত হয়ে থাকি তোমার পানে
সপ্ন মায়ায় তুমি বিষকাটা হয়ে বিধে আছো মনে
আমিও পুষে রাখি তোমায় পুজারীনি হয়ে ...
প্রিয়,জীবন বেলায় থাক তুমি দীঘি হয়ে ।।

বিরহ নীলকন্ঠের সীমাহীন যন্ত্রনা
একেবারে নিরেট পাথর , তার উপরে কিছু নেই,
অবিমিশ্র সুধা বিষ পান করে...
আনন্দে পতঙ্গের মত উড়ে উরে পরি আগুনে,
চিরন্তন সত্য শুধু এই...
দু'টি মন মিশে আছে দীঘালয়ে
বিচ্ছেদের হিমেল গভীর চুন্বনে।।
সমর্পণ

মামনি দত্ত


দিগন্ত ছুঁয়ে যাওয়া এক পাহাড়ের বুকে উপুড়
করে দিতে চাই সব বিষাদ।
লুটোপুটি হাওয়ায় ক্লান্তির
শিথিলতা মুছে যাবে অনায়াস ভঙ্গিমায়।
পাহাড়ের শরীর বেয়ে ঝরনা ধারার নিবন্ধন পুলক
জাগবে মনে!
একই কথায় বড় বেশী একঘেয়েমি তে অতিষ্ঠ যদি হও,
তবে অতি সংগোপনে,

এসো মাতিয়ে তোলো নতুন খেলায়, আঙ্গুলে আঙ্গুল
ছুঁয়ে পরখ করে দেখো
ভূকম্পনের তীব্রতা, প্রখর দহন কালে সমস্ত বিষাদ
জুড়ে চুঁইয়ে পরে গাঢ় শীতলতা!
ভিজে যায় ওষ্ঠাধর অঝোর বৃষ্টির নেশায়, বিন্দু বিন্দু
জল চিবুক বেয়ে গ্রীবার দিকে অগ্রসর!
নতুনের উন্মোচনে ধীরগতি তে গুনছি, বুনে যাওয়া এক
একটি প্রহর!

আঁকাবাঁকা পথ এড়িয়ে দাড়িয়ে আছি খাদের কিনারায়!
বিষাদ ভুলে ডুবে যাব, তোমার মদির আহ্বানের এক
ইশারায়!!


বধূ

সঞ্জয় চ্যাটার্জ্জী


আপন মনের রাগে,
বধূ রেঙ্গেছে অনুরাগে,
দেখি তাকে অনুভবে,
মিষ্টি সে মুখ আনত নীরবে!

আমি নিষ্পলকে চেয়ে থাকি,
স্বপ্ন বিভোর সে গভীর দুটি আঁখি,
ডাগর চপলা হরীণি নয়নে বধূ,
চমকিয়া ওঠে মৃদু মৃদু!

মরমে মরমে পশেছি তাহার নাম,
সে যে ছুঁয়ে গেছে মনদ্বার অবিরাম,
কেন এসে কাছে শুধু ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাও,
বধূ আপন মনমাল্যডোরে আমায় বেঁধে নাও!

মন গভীরে তব শ্রীচরণ লভেছি,
আপনার চেয়ে আরও বেশি দিতে চেয়েছি,
বধূ বাসিয়াছি ভালো তোমার সুপ্ত মন,
হারিয়েছি প্রেমে বিশ্ব ব্যাকরণ!
 
অস্ত্র নয় কালি কলমে যুদ্ধ করো
 
 
শামীম পারভেজ


লাল টুকটুকে রক্তের রং মাটিতে মিশে ফেকাসে হয়ে গেছে ঠিকই,
কিন্তু এর গন্ধ আমাদের মনে করে দেয় সেই -
অন্ধকারাচ্ছন্ন কালো রাত্রির কথা ,
গানের সুমধুর সুর নয় , মা বোন ভাইয়ের চিৎকারের কথা,
পোশাক বিহীন বীর যোদ্ধাদের কথা,
লাল সবুজের পতাকা উত্তোলনের কথা,
মাকে স্বাধীন করার কথা

আজ আমরা স্বাধীন , অনেক স্বাধীন
এমন স্বাধীন , লাগাম ছাড়া বক্তব্যের স্বাধীন,
এমন স্বাধীন , যা মনে চায় তাই করার স্বাধীন,
এমন স্বাধীন , বিচার বিহীন মানুষ খুন , গুম করার স্বাধীন,
এমন স্বাধীন , জোর যার মুল্লুক তার এর স্বাধীন,
এমন স্বাধীন , স্বার্থ হাসিলে সত্যকে মিথ্যা , মিথ্যাকে সত্য বলার স্বাধীন,
এমন স্বাধীন , বাক রুদ্ধ করার স্বাধীন,
এমন স্বাধীন , নিরাপত্তাহীন পথ চলার স্বাধীন ,
এমন স্বাধীন , ঘরে বসে আধুনিক কম্পিউটারের বুতাম টিপে
অবুঝ অশিক্ষিত দরিদ্রদের শাসন করার স্বাধীন
এমন স্বাধীনতাই আমারা চেয়ে ছিলাম ?
এমন স্বপ্নই কি আমারা দেখেছিলাম ?

জেগে উঠো , জেগে উঠো , হে নতুন প্রজন্ম,
আর নয় তামাসা ,
ইতিহাস জানো , বুঝো , রক্তের গন্ধ নাও,
প্রাণ প্রিয় মাকে রক্ষা করো ,
মায়ের সুশ্রী রূপকে পুনরায় উদ্ধার করো ,
স্বার্থবাদীদের ধ্বংস করো ,
অস্ত্র নয় , কালি কলমে যুদ্ধ করো

ঋতুতে লিমেরিক
 মৌ দাশগুপ্তা

গ্রীষ্ম

উফ্ কি গরম রাত্রি-দুপুর,ঢালছে আগুন সূয্যিঠাকুর,
শুকনো নদী,শুকনো পুকুর,চড়ছে সবার সপ্তকে সুর,
দামে আগুন বাজার-পাট,
শুকিয়ে গলা শুকনো কাঠ,
বর্ষা হয়ে বাজিয়ে নূপুর,আসবে কবে টাপুর টুপুর!

বর্ষা

কালো মেঘে ঢাকলো আকাশ,গরজায় বুঝি বাজ,
ভিজবে মাটি বরষার জলে,তৃপ্ত হবে আজ,
সজীব হবে গাছের পাতা
ঢাকবে মাথা নতুন ছাতা
বরষা রানী সবুজ রঙের পরবে মোহন সাজ।।

শরৎ

ঢ্যাম কুড়কুড়,ঢ্যাম কুড়কুড়,পড়লো ঢাকে কাঠি,
দোল,দোল,দোল সোনার ধানে ভরলো গাঁয়ের মাটি।
শিউলি,শিশির, ঝরছে ঘাসে,
দিঘীর বুকে পদ্ম হাসে,
সুনীল আকাশ,সোনা রোদে চারপাশ পরিপাটি।।

হেমন্ত

কুয়াশাতে মুখটি ঢেকে উষারাণী আসেন,
হিমেল বাতাস ধানের ক্ষেতে উল্লাসেতে মাতেন,
শিশিরদানা ঘাসের বুকে
পড়ছে ঝরে অবোধ সুখে
সেই না দেখে ফুলের বনে হেমন্তিকা হাসেন।।

শীত

ধরিয়ে কাঁপন হিমেল হাওয়ায় ঝরিয়ে পাতার রাশি
উত্তুরে বায় আনছে বয়ে শীতবুড়োটির হাসি
নরম রোদে বনভোজন
কি নবান্নের আয়োজন,
হাজার মজা,সবার সাথে ভাগ করে নিই খুশী।।

বসন্ত

শীত ফুরালে রং ঝরিয়ে এলেন ঋতুরাজ
গান গাইলো পাখীর দলে,ফুল পরালো সাজ।
উড়ছে অলি মধুর টানে,
ফাগের আবীর সবার মনে,
আনন্দকে সঙ্গী করে মনকে ভরাই আজ।।

অভিন্ন দ্বৈরথে
আহমেদ মুনীর
 
একটি কবিতার আকাশ হয়ে তুমি সারাক্ষণ ডাকো
আমাকে নিভৃতে নির্জনে নির্মোহে
চেয়ে চেয়ে দেখো অপলক
একটি কবিতার মেঘ হয়ে তুমি দাও বৃষ্টিধারা
জল ছায়া মায়া
একটি কবিতার নক্ষত্র হয়ে তুমি দাও
আলোকিত জনপদ উদ্দিষ্ট শৃঙ্খল
একটি কবিতার চাঁদ হয়ে তুমি তোমার সুকোমল
অনুরাগে আমাকে করো সিঞ্চিত
একটি কবিতার বৃক্ষ পাহাড় পর্বত হয়ে তুমি আমকে দাও
অম্লজান ক্লোরোফিল ঝরনা খরধার নদী
একটি কবিতার মৃত্তিকা হয়ে তুমি
আমাকে দাও সবুজ হলুদ শস্য ফুল ফল
একটি কবিতার সমুদ্র হয়ে তুমি নিভিয়ে দাও আমার
পরমাণু চুল্লীর অনল
একটি কবিতার অনর্ঘ অধর হয়ে তুমি আমাকে
দাও স্পর্ধা স্পর্শ স্পন্দন
একটি কবিতার বজ্রাগ্নি বজ্রনিনাদ হয়ে তুমি
আমাকে দাও প্রজন্ম স্বাধিকার স্বাধীনতা
একটি কবিতার ভাষা শব্দ সুর ছন্দ হয়ে
তুমি সারাক্ষণ কথা বল আমারই সাথে
প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে
একটি কবিতার মহাকাল হয়ে তুমি আমাকে
নিয়ে চলো অচেনা অনন্তলোকে ।।

অভিন্ন দ্বৈরথে মিলেছি আজ দুজনে
ভালবাসার নির্মল জলে করেছি অবগাহন ।।

কত সহস্র লক্ষ কোটি বছরে
কত সহস্র লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দূরত্বে
কত জাদুকরী মনোহারী মায়াবী প্রহর
চারদিকে জীবনের কত ভালবাসা শব্দ
করে আমাকে উতলা
প্রণত তোমার দ্বারে
দেখ আকাশে তোমার আমার দিগন্ত
বিস্তৃত নীলাম্বর শত সহস্র লক্ষ কোটি
কৃষ্ণগহ্বর ছায়াপথ নক্ষত্ররাজীর
একান্ত প্রেম ভালবাসা
তুমি কী একটুও বুঝ না ?

 
তিন-তারা
 সায়ক চক্রবর্তী

যতদূরে চলে যাওয়া যায়
ঠিক তত কাছে চলে আয়
কাছে এসে দূরে থাক
মাপটুকু কাছে রাখ
যেন পরে দূরে যাওয়া যায়
মাটি ফাটা মন জমি পড়ে তাও কাস্তে
পর্দায় ঢাকা সব মানা আছে আসতে
চোখে যদি পড়ে যায়
ফেরানোর পথ নাই
নদী আছে চোখ ভরা আনমনে ভাসতে
চেয়ারটেবিলপর্দাপাখা হাতের ম্যাজিক হাতে
নিয়ন আলো জ্বলছে আজও অন্য কারও সাথে
সঙ্গীবিহীন ভঙ্গিমা
হয়ত তোমার সঙ্গী না
হাতের ম্যাজিক ঠিক শিখেছি এবার হাতেনাতে
বিবস্ত্র তবুও ১…২…৩….
শ্রীশুভ্র


এসো তোমার ঠোঁটের কোণায় এক চিলতে হাসি
ঝুলিয়ে দিই! তুমি
বারুদ ভরে নিও!

সকালের রোদে ঘরটা
যখন সোনালী হওয়ার কথা
বিবস্ত্র লোভ  সুড়ঙ্গ কাটে!
তুমি কাটতে দিও!

ভালবাসার কাণ্ড বেয়ে
লালসা লতিয়ে প্রকাণ্ড
হয়ে ওঠে! আমরা উদোম
দেখে নিও!

বিবেকে পেরেক দিয়ে
দশটা পাঁচটা কিংবা
ওভার টাইম
এবং পরকীয়া!

আগুন আর জলের সহবাস
চোর পুলিশের খেলা!
পরিবর্তনের শপথে আমাদের গল্প সকর্মক ক্রিয়া!

স্বার্থের চব্বিশে সময়ের কাঁটা স্থির থেকে তবু
মানুষ বিয়োবে! মিছিলের
আয়োজন শ্মশানেও হবে!

ক্রোধকে ভয় না পেয়ে
তুমি বারুদে আগুন দিও!
দেশকাল সমাজে
আগুন ছড়িও!

সময়ের ঘর্ষণে রিরংসার বসনে হয়তো কোনোদিন
মানুষ ঘুরে দাঁড়াবে!
তুমি দেখে নিও!
অনিদ্রায় যাপন 
জিনাত জাহান খান

ঘুমের ঘুঙুর বাজে অনিদ্রায়
শত বৈরিতার মাঝেও
কুই কুই কলরব নাচহীন
সন্ধ্যা পাখির
নিঃশব্দ হাততালি জমে শিবিরে শিবিরে
গল্পে আর কায়ায় ছায়াহীন হেঁটে যায়
ভৌতিক মানুষগুলো
পক্ষপাতহীন একটি দুপুর দেখব বলে
ঠাঁয় রৌদ্রে দাঁড়িয়ে আছি আজন্ম
সূঁচ হারানো খোঁজ আজও সন্ধ্যা উত্সবগুলোর -
সুখ নেই , সুখ আছে
চরাচরে ঘুমের ঘুঙুর বাজে অনিদ্রায়
এমন রূপবিন্যাসে সাপের জিভ জলকাটে দুধারে
কেবলি পালিয়ে যাওয়া জখম রাতের পর
কোন ছাপ থাকে না কোথাও