ঢাকা,মঙ্গলবার , ২৬ জুন ২০১২, ১২ আষাঢ় ১৪১৯, নবম সংখ্যা ।

নবম সংখ্যায় আছে মোট পনেরটি কবিতা, লিখেছেন- মৌসুমী সেন,আফসার নিজাম,আরশাদ উল্লাহ,রবি,শওকত কবির কাজল,ওমর জাবীন,শ্রীশুভ্র,শামীম পারভেজ,সুমিত রঞ্জন দাস,হাননান হামিদ লিখন,ইফতেখার দীপু,হিমেল,রিয়া দাশগুপ্তা,জাকিয়া জেসমিন এবং কচি রেজা



অদম্য পিপাসা



--মৌসুমী সেন

 
 
কালরাতে আমার ঘুম হয়নি একদম!
অঝোরে ঝরে ছিলো বৃষ্টির মতন,
আমার অনুভূতির কানন
ইন্দ্রিয়ের প্রতিটি উপশিরায় টের পেয়েছি
এক অদম্য পিপাসা! যা ভেঙ্গেছে মধ্যরাতের
এক স্বপ্ন গাঁথা অন্তরালে দুঃস্বপ্নের মতন
যখন বৃষ্টি এলো আমি ভিজে গেলাম__
অঝোরে অবলীলার আকাশে তখন মেঘ
উড়ন্ত দুর্নিবারে আমি ভেবে ভেবে আঁতকে উঠি!
ওগো তুমি কোন সীমান্ত সুদূরে?
দেখো আমি তোমার অপেক্ষায় ভিজে ভিজে দিশেহারা
শরীরের ভাঁজে ভাঁজে অস্তিত্ব অনুভবে
আমি তোমার স্পর্শ পাবার আশে কাতরাই
যখন তোমার স্পর্শ আমায় আকুল করে__
তুমিহীন সাঁতার কাটি আমি পাথর সমুদ্রে
যা নড়েচড়ে না শুধু ফাঁক ফোকরের মাঝে বয়ে যায়;
উত্তাল সমুদ্রের বয়ে যাওয়া কিছু স্রোতধারা
সেই ভিজে যাওয়া আমায় ভেজায় না;
আমায় বালুকণায় আবদ্ধকরে জড়ায় আমার ইন্দ্রিয়,
বন্ধ করে দেয় আমার ভালোলাগার কেন্দ্রস্থল!
মেঘদূত হয়ে তুমি ঢেকে রাখো আমার মনের আকাশ,
সান্ত্বনার রন্ধ্র থেকে ফুটে ওঠো জোছনালোকে
সোনার ঘণ্টার মত বাদ্যযন্ত্রে ভাঙ্গাও রাতের ঘুম__
অসংখ্য তারার মাঝে আমি খুঁজে ফিরি
তোমার অবয়ব!
আচ্ছা, আমাকে তোমার মনে পড়ে?
জানো, বৃষ্টি ভেজা মুহূর্তে সুখ শ্রাবণের জল যখন গুমরে কাঁদে নীরবে,
তখনও আমার ভীষন মনে পড়ে তোমাকে__
আমার সকল অনুকম্পনের গভীর গভীরতায়
তোমাকে আমার খুব বেশী প্রয়োজন মনে হয়;
আমার অন্তিমে, আমার শেষ নিঃশ্বাস যেন তোমার বিলীনতায় মেলায়


সবুজ অন্ধকার

-আফসার নিজাম
 
 

প্রতিদিন সবুজ অন্ধকারে
আমাদের বোধগুলো হত্যা হয়
আমরা মৃত্যুহীন প্রাণ নিয়ে বেঁচে থাকি অনন্তকাল...
আমাদের প্রাণ ...
সবুজ অন্ধকারে পুড়ে ছাই হয়
আর ক্রমাগত ছাই থেকে তৈরি হয়
নতুন জীবনের স্ফুরণ

আহা!
আমাদের জীবন নিয়ে কি সুন্দর
খেলা করে প্রাচীন নগর
আহা!
আমাদের জীবন নিয়ে কি সুন্দর
খেলা করে নাগরিক মন
আমরা প্রতিনিয়ত খেলার মাঝে
একটি ফুটবল ছাড়া আর কিছুই হয়ে উঠতে পারি না


যদি কভু দেখা হয়


 -আরশাদ উল্লাহ
 

কত সাল কত যুগঅতীতে গেল!
জীবনের প্রান্তে এসে তোমায় ভালবেসে
কত যে দুঃখ আরো কিছু রয়ে গেল
সে হিসাব করি আমি মনের খাতায়!
শুধু একবার দেখবো তোমায় সে আশায়!
মন আমার - ক্ষণে ক্ষণে - জানতে চায়
তুমি আজো ভাল আছো কি?
আমায় তুমি মনে রেখেছো কি?

কোন দিন দেখা দেখা হয়ে যায়
অনেক লোকের ভিড়ে কোন মেলায়
কোথাও কোন রাজপথে
যদিও তা স্বপ্নের মতো
হারাবার ইতিহাস যদিও
কথাটি জানার আশায়
কত কি যে লিখে যাই - মনের পাতায়
যদি আবার দেখা হয়ে যায়
তুমি চিনবে কি আমায়?




 তাকাও দেখতে পাবে 

-রবি



 
একটি ওভার ব্রিজে দাড়াও চোখ খুলে তাকাও
দেখতে পাবে মানুষ, মানুষের জীবন কতোটা তারতম্য,
উঁচু উঁচু দালান কোঠা বুক ফুলিয়ে দাড়িয়ে আছে
ভাল করে চেয়ে দেখলেই দেখতে পাবে
প্রাসাদের সামনে টাইলস বসানো সুইমিং পুল,
সাজানো স্বচ্ছ বাগান কাঁচ ঘেরা দরজা জানালার পরত
পুড়া মাটির শিল্প বাহারি রং বেরং এর অব্যবহৃত
আসবাব পত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে সাজানো যেখানে সেখানে ,
পাশেই দোলনার দোলার আয়োজন
যেন দোলতে দোলতে সুখ সাগরে পাখনা মেলে উড়ে চলা
এদিকে দেয়ালের ঠিক উল্টো পিঠের দৃশ্য
তারই নিচে হেলান দিয়ে বেঁচে থাকার আয়োজন
মেরুদণ্ড হীন ছোট ছোট স্বপ্নের গরীবের খানা ঘর
অনেক দিন পানি না লাগা চামড়ার ভাজ পরা ধুলোর স্তর
ক্ষুধার্ত হতে হতে পিণ্ডে চুয়ে চুয়ে ঝরা রক্তের ফোঁটা
কপালের দুপাশে মোটা হওয়া অভিমানী রগের যন্ত্রণা
যেন চামড়া ছিঁড়ে বের হয়ে আসতে চায় ক্ষুধার যন্ত্রণায় ,
হাতের আঙ্গুল দিয়ে দুচোখের মনিকে কে খাবলে খামচে আনতে চায়
যেন সভ্য পৃথিবীতে ক্ষুধার্তের দংশন চিত্র না দেখতে হয় বার বার
আর মনে মনে হাজার বছরকার হাজারো ক্ষুধার্তদের মনে
কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়ায় ,
একটু ক্ষুধা সাঙ্গ করতে হলে কতটা পরিশ্রম করতে হয় ?
একটু ক্ষুধা সাঙ্গ করতে হলে কতটা টাকার মালিক হতে হয় ?
একটু ক্ষুধা সাঙ্গ করতে হলে কতটা রক্ত ঝরাতে হয় ?
একটু ক্ষুধা সাঙ্গ করতে হলে কতটা খোয়া উঠাতে হয় হাতের তালুতে ?
প্রশ্ন অবশেষে প্রশ্নই থেকেই যায় ক্ষুধার চাপে চাপা পরে

কই বড় বড় সাহেব, বড় বড় মেমসাহেবদের তো তেমন পরিশ্রম করতে দেখি না
তবে কেন তারা ক্ষুধার ভুক্ত ভুগি না ?









আগ্রাসন


-শওকত কবির কাজল


 
ভয়াল অজগরের আগ্রাসী উদরে এখন
ঢুকে গেছে রাজনীতি-শিল্প-শিল্পকলা-প্রকৃতি
যেমন কিছুদিন আগেও যে মৌসুমী বায়ু
বঙ্গোপসাগরের বুক থেকে বাঙলার
ঘর্মাক্ত আকাশে এনেছিল
প্রেমময় উচ্ছ্বাসে নৃত্যরত মেঘদল
খলনায়কের মতো পশ্চিমা লঘুচাপ তাড়িয়েছে ওদের
খরতাপে পুড়ছে আজ সহজিয়া মানবের সহজ মনন
বিরান বন আর মৃত প্রায় সব জলজ প্রাণ

আশার জানালায় দেখি দুঃসহ খরতাপ শেষে
সত্যের আলোর মতো নেমে আসছে পৃথিবীতে
আগ্রাসী মুক্ত আকাশ থেকে বর্ষার প্রেমোচ্ছ্বাস





ইচ্ছেটুকু তোমাকে ছুঁয়ে



- ওমর জাবীন
 

তুমি বললে, সময়কে কাঁপিয়ে দিতে পারবে কবি?
তোমার চোখের পানে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে অবাক হয়ে
ভাবি শুধু তোমারই ইচ্ছের টানে উড়াল দেবার পূর্ণতায়
ব্যবধান ভুলে তোমাকে কাছে পেতে চাই একান্ত প্রহরে

কেবল তুমিই জানবে আমি কতোটুকু পারি উজাড় হতে!
সব ভুলে তোমার ইচ্ছেটুকু অনায়াসে ছুঁয়ে দিতে পারি
বৃষ্টিস্নাত তোমার হাতে তুলে দিই আমার উদার আকাশ
আমাকে দিতে পারবে তোমার মুগ্ধতার আশ্বাস?

যতোটুকু দূরে থাকো তার চেয়ে কাছে থাকি আমি
চাইলে তুমি ভালোবাসায় কাছে টেনে নিতে পারো

আমি তো ব্যাকরণ জানি না, কিভাবে শুধাবো তোমায়?
মনের অলক্ষ্যে তুমিও চাইবে ভালোবাসা কারে কয়
জানতে চাইবে ভালোবাসার উৎপত্তি কোন্ প্রান্ত থেকে
অবিনশ্বর চেতনায় ফুরাবে না প্রেম, ভালোবাসা

জেনে রেখো, নির্দ্বিধায় আমি কাঁপিয়ে দিতে পারি সময়কে!
বিষাদের আস্তিন ঠিকই ছুঁড়ে ফেলি দিতে পারি অনায়াসে
তুমিও চাইলে একাত্ম হবে মগ্নতার এক অপূর্ব সুরে
পুষ্পিত ঘ্রাণে উতলা হবে স্পর্শতার নিবিড় আকর্ষণে



অন্তর দহন 

-শ্রীশুভ্র





চোখে কম দেখি কিন্তু দেখতে পাই!
সাপের পাঁচ পা নয়!
বেদের চেনা হাঁচির মতোন!
হাতঘড়ির কাঁটা জুড়ে
খেলে যায় রিপুর কম্পন!
ভালোবাসার নিকানো উঠানে
প্রেমের সংলাপে হৃদয় ঢুঁ ঢুঁ!
হিংসা দ্বেষ স্বার্থের তালে
তাল তাল সোনা
সঞ্চিত ভাঁড়ারে শুধু!
চাবির গোছা নিয়ে আঁচলে
তুমি তোমার সংসার গোছালে!
তবুও নন্দিনীকে দেখো!
কেমন সহজে তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়ালে!
রঞ্জনের রক্তিম রঞ্জিত পতাকা
তুলে নিয়ে আঁধার আলো
হল নন্দিনী কতবার কালে কালে!
তবুও তোমাদের রিরংসার শীতে
ইতিহাস লিখে রাখ
যীশুর শরীর থেকে
হিরোশিমা নাগাসাকির নড়বড়ে ভিতে!
চোখে কম দেখি কিন্তু দেখতে পাই!
মুষল পর্বের শেষে
রোম থেকে ব্যাবিলন
পুড়ে হল ছাই!
 





 আহ্বান 

 
- শামীম পারভেজ


 
থেকোনা আমাকে ছেড়ে ,
আমি আজ অসহায় ,
চলে এসো সোনামণিরা ,
আমার শীতল ছায়ায়

কি নেই তোমার জন্য,
সব রেখেছি সাজিয়ে ,
এসো চলে এসো ,
রাখবো বুকেতে জড়িয়ে,

দূরে থেকে লাভ কি ?
কে নিবে কোলে তুলে !
সেখানেতে কি সুখ ,
যাচ্ছো আমাকে ভুলে

তোমরা না এলে ,
সম্পদ হারাবে তুমি,
শত্রুরা সব লেগেছে পিছু,
শেষ হয়ে যাবো আমি




আমরাই পুরুষ 


-সুমিত রঞ্জন দাস


 
 
পরিখার কাছাকাছি এসে -
পিছিয়ে যাই,
নিকষ কালো অন্ধকারের শরীরে ...

মন বলে - ওদিকে যাস নে,
ওদের অন্তর্বাসে লুকিয়ে থাকে
বিষাদ ভেজা ঝরাপাতার কাহিনী,
নিয়ন আলোয় বরফ কুচির আবদার;

ফেরিওয়ালা ওরা,
শরীরের বাসায় লুকিয়ে রাখে আস্তিনের সাপ ...

তবু যাবার আগে
কিনে নিই বেল ফুলের মালা
দেখে নিই চারিদিকটা একবার ,
আর ফেরার সময় -
মুখটা মুছে নিই সভ্যতা আর সাম্যবাদের আলোয়


গন্তব্যে গমন

-হাননান হামিদ লিখন





তোর ঘুম ভাঙাবো বলে,
রোদের আকাশে আঁকিবুঁকি কেটেছি
একটা মস্ত দুপুর, একটি আস্ত সন্ধ্যে,
একটু মন কেমন করা মায়াবী ভোর !
আমি ডেকেছি, ঘুম ভেঙেছে তোর !

তোর সাড়া পাবো বলে,
পা ঘষটে চলেছি অনেকটা পথ,
পথ-ঘাট মিহি বালি, চটচটে জনপদ
কাল ফাটানো কলতানে উষ্ণ ভরপুর,
আমি চেয়েছি, সাড়া এসেছে তোর !

তোর দেখা পাবো বলে,
অন্ধ তীরন্দাজ তাক করে হেঁটেছি
কোথাও চোখ মেলিনি একবারও
কত হাতছানি এলো কত মায়াডোর
আমি তাকিয়েছি, দেখা পেলেম তোর !

তোর কাছে যাবো বলে
মনে মনে কত গোছগাছ, সাজানো
নিজেকে তিলোত্তমা নগরীর ছাঁচে
দুবাহু প্রসারিত অনন্তকালের ঘোর
তুই ডেকেছিস, কাছে যাবো তোর !



ভাববার অবসর আর নেই



 
 -ইফতেখার দীপু








ঘরে বসে বসে ভাববার অবসরে
প্রথমেই চুরি হয়ে গ্যালো
স্নিগ্ধ সকালের মত স্বস্তি
শান্তিতে তলিয়ে যাওয়া ঘুম
দুপুরের গা ধরে বিলাপের অবসরে
চুরি হয়ে গেলে মানবতা
প্রতিদিন দেহাবশেষ মিশে যায়
গোপনে গোপনে, চেয়ে দেখি
বিচারের ঘরে প্রহসন নাটক

ভাববার অবসর আর নাই
চোখের সামনে দিয়ে হাত নেড়ে যায়
বাঘা সিদ্দিকীর কাদেরিয়া বাহিনী
বাতাসে বাতাসে যেন পাই
বুআজিজের পোড়া শরীরের ঘ্রাণ
আরব বসন্তের ঢেউয়ের গর্জন
তুমি ভেবোনা একটুও
আবারও স্ফীত হয়ে উঠবে নদীর বুক
বর্ষা বালিকাদের সবুজ রুমালে হাসবে
তোমার স্বপ্নগুলি ;
লাল রঙটাকে আরও লাল করে দিয়ে
পৃথিবীতে চিরদিন মাথা উঁচু রবে আমাদের




অনন্যাকে উৎসর্গীকৃত

-হিমেল


আমি অনেক কাল আগে
বোধহয় গত শতাব্দীর- আগে ,
একবার বর্ষা রানীর মহলে যেয়ে
তাকে অবনত মস্তকে অনুরোধ করে -
বলেছিলাম ,
তুমি বৃষ্টি হয়ে অনন্যাকে ভিজিয়ে দিও

তোমার বর্ষা বৃষ্টি হবে ,
তোমার প্রতিটি মেঘের দরজা খুলে দিবে
ভিজে যাবে পৃথিবীর যত অনন্যা

কিন্তু তুমি বৃষ্টি হওনি আজ-
তুমি ছিলে মধ্য গ্রীষ্মের মতই খটখটে শুকনো ;
তুমি তো অনন্যার মনে বৃষ্টি হওনি -
তুমি বৃষ্টি হয়েছিলে ওর শরীরে
শুধু ভিজিয়েছ ওর কাপড় , অঝোরে ঝড়ে পড়েছ
পড়ে পড়ে ভিজিয়েছ ওর শরীর

তবে কি ওর মন ভিজার জন্য আমাকে -
আরো আরো অপেক্ষা করতে হবে ?
অনন্যার জন্য আমি সহস্র বছর অপেক্ষা করতে পারি
তুমি শুধু অনন্যাকে ভিজাতে থাকো ......


নির্জনতা







-রিয়া দাশগুপ্তা



বুকের সেফ ভল্টে
লুকানো আছে যে বিত্ত গুলি
মাঝে মাঝে টেনে নিয়ে দেখি অগুছালি
এলোমেলো করে দিয়ে দেখি
বয়সের বিভিন্ন গ্যালারিতে রাখা
জল রং , তেল রং ছবির পশরা
কথাকয় ওরা বিচিত্র বুলিতে
বোঝা না বোঝার হেঁয়ালি ধাঁধাঁতে
তারি মাঝে শৈশবের অস্ফুট গুঞ্জন
কথা ছাড়া এক সুস্পস্ট কথন
শোনায় মনের নিভৃতে
জীবনের এই ধুসর গোধূলিতে...!




 দূরত্ব, আজ ফেরার পথে!”



জাকিয়া জেসমিন
 

এখন কেন খোঁজো
দিন রাত উপেক্ষা করে,
কেন ভুলে যাও সময়ের হিসেব,
আজ কি বার সেটাও!
নদীর কুলকুল জলধারার মত
কথার প্রবাহ ছুটতো যার,
মেঘমুক্ত নীলিমে রংধনুর মত
বর্ণিল জীবনে খলখল হাসিতেই যার পূর্ণতা;
আষাঢ়ের আগমনের অনেক আগেই
চোখে মুখে নামলো বর্ষার ঢল,
ভর করেছিলো মেঘ সমস্ত অবয়বে;
একটু নির্ভরতা চেয়ে
মেঘ কাটাতে নির্নিমেষ চেয়ে থাকতো যে
একটুকু মনোযোগের আশায়...
তখন কোথায় ছিলে, কোথায় ছিলো তোমার
এই আকুল আপ্রাণ ডাকাডাকি!
পারলে না তো এক মুঠো রোদ হয়ে
দুঃখের নদীটায় চর জাগাতে!
দুখের সময়েই যদি না পারলে
রাখতে এই হাতে হাত,
এখন খুঁজে কাজ কি!
দূরত্ব আজ তোমার খোঁজার পথে,
মন নেই ফিরে যেতে সেই গন্তব্যে, বহু দূরে!





একটি কাঠের পুতুল



-কচি রেজা



তোমার জন্য বিষন্ন আঙ্গুলগুলো আর মন্দিরে যায় না
ওপারের সীমান্ত প্রহরীকে কি তুমি নির্ধারন করে দিয়েছ সীমা?
একটি কাঠের পুতুল তবু রোজ অদৃশ্য হয়ে যায়
তার ব্যাগে টিফিন বক্স,টুকি টাকি লিপষ্টিক,গোল আয়না

কফি খাওয়ার একটি কাপ পছন্দ করে এসেছি,সেদিন মনে পড়লো
তুমি তো ডাঁটি ভাঙ্গা কাপে চা খাও,জানি না এখন কেমন আছে তোমার টেবিল ল্যাম্প?
কিছু পাতা পুড়িয়ে দেয়া হয় এই কারনে যে তারা ও সুন্দরী ছিল খুব
আত্মহত্যার পক্ষে এইসব উলকাগল্প আমাকে বিষন্ন করে
মধ্যযুগীয় যুক্তিতে আমার বিরুদ্ধে ও লেখা হয় ব্যংগ রচনা
কিন্তু আমিও আগুন সাপেক্ষে পুড়ি
কিছু মূর্খ আপেলগাছ আমাকে পুড়ে যেতে দেখে ও ফায়ারব্রিগেড ডাকে না
তবু ঘুমিয়ে গেলে আমাকে ডেকো না

পাতার অসাধারণ হাতে একটি চুম্বন করো শুধু