ঢাকা,মঙ্গলবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১২,১০ আশ্বিন ১৪১৯,২০ তম সংখ্যা ।


মুক্ত ডানা- বাংলা কবিতার -পত্রিকার ২০তম সংখ্যায় আছে মোট ষোলটি কবিতা, লিখেছেন-রেজওয়ান তানিম,মাহবুবা কামাল বিনু,আহম্মেদ রফিক,মৌ দাশগুপ্তা,আহমেদ তানভীর,ইন্দ্রাণী সরকার ,শামীম পারভেজ ,শুভ বাবর,সুবর্ণা গোস্বামী,শৈলেন্দ্র প্রসাদ চৌধুরী মানিক,অনুপম দাশশর্মা, সাইদুর রাহমান মিলন,খান রনক,সুবীর সরকার,অভিলাষা এবং বিলকিস আরা ক্ষমা


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান
 
আশার কথা বলি

রেজওয়ান তানিম

এই পথে, যেখানে রাত ছিল অপার্থিব আলোর খেলায় মত্ত, সেখানে এখন ধূসরতা আলো নেই, ধুলো নেই, জনমানব কিংবা যানজট কিচ্ছু নেই এখন শূণ্যতার এই পথেই তোমাকে যেতে হবে স্ট্রীট লাইট বিহীন এই বিরান বিষাদ সড়ক, তোমার অন্তিম পথ হয়ে দেখা দেবে কিনা জানতে চায় পৃথিবীর নামের কুচক্রী বুড়িটা

তুমি হাঁটবে পাথুরে এই রাস্তাটুকু, তোমার পদস্পর্শ পাওয়ামাত্র মেলে ধরবে নগ্ন অভিশাপ ওইপাশে বেঁধে রাখা কালো শ্বাপদের মূর্তিগুলোয় অগ্নিবাণ আসবে, প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হবে শোনা যাবে নগ্ন হুংকার, শেকল ছিঁড়ে গেলে পশুত্ব প্রকাশ হয়ে পড়বে রূঢ়তার সবটুকু নিয়ে

ওরা উন্মত্ত হয়ে উঠবে, সলাপরামর্শ করবে কামড়ের প্রক্রিয়া নিয়ে, বিমর্ষ তোমার চোখে দেখব আর্তির ভাষা, খুব স্বাভাবিক একবুক আতঙ্ক, জলাতঙ্ক কিংবা মৃত্যু রোধের আগাম প্রস্তুতিটুকু!

চোখ বুজে সবশেষ ভেবে হেরে যেও না মেয়ে, সবশেষ হয়ে যায়নি আমাদের তখন অবাক হবার সময় আমরা বিস্ময় নিয়ে দেখব, আশাবাদী চোখে- এর মাঝেই, এই ভ্যাপসা অস্বস্তির অস্থিরতার মাঝেই, অনতিদূরের বনানীতে নেমে আনবে প্রগাঢ় শান্তির করুণা ধারা আধখানা চাঁদ অন্ধকারের সীমান্তের কাছাকাছি ওই আকাশের বুক চিড়ে উঠে আসবে গলে যাওয়া বেদনাটুকু বুকে নিয়ে স্বপ্নের নীলে স্নান দিয়ে সে দূর করবে অনাবশ্যক অন্ধকার খয়েরি শালের বনে ফুটবে বুনোফুল, জঠর জ্বালায় পুড়ে অঙ্গার, বিকারগ্রস্ত শকুনের তির্যক হলুদাভ চোখ;

ভাগাড়ের মাঝেই খুঁজে পাবে বেঁচে থাকার রসদ!

তুমি যাবে কি হেটে হেটে, এই পথে, সেই রূপকল্পের কাছাকাছি, বিষাদ পুরাণের জন্মসড়ক থেকে, আনুভূমিক জীবনের খোঁজে! সবটুকু হতাশাকে ফুরিয়ে যাবার পথটুকু দেখিয়ে দিতে ?


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান

তুমি নিরবধি
মাহবুবা কামাল বিনু,

তখন আকাশে এক ফালি বাঁকা ফিকে চাঁদ
হৃদয়ের ভেতর থেকে গুনগুনিয়ে উঠেছিলে
"
ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে বহে কি বা মৃদু বায়
তটিনী হিল্লোলে তুলে কল্লোলে চলিয়া যায়
পিককি বা কুঞ্জে কুঞ্জে কুহু কুহু গায়
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায় "
সত্যি প্রাণ হায় হায় করেই উঠেছিলো আরেক
হৃদয়ে ,কান পেতে দেখেলেই বোঝা যেতো !
সন্তুরের মতোন অনুরণনের ঝড় তুলেছিল
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞ হার মানে
চিরদিনের সেই সঙ্গীতের কাছে ,আমার অপ্রকাশিত
সাধারণ ভাললাগার মুহূর্ত ,অবরুদ্ধ নদীর মতো
হয়তো কোনদিন আর জানানো হবেনা
সে কথা ,চির পুরাতন কথা !
বেঁচে থাকা জীবনে অন্য ভালোবাসার আধারে
না চাইতেই দিয়েছিলে হাজার তারার আলো ,
সম্পর্কের উৎসধারায় শুধু বয়েছিল ছোট ছোট
খুব সাধারণ আনন্দ আর --হু হু করা
উদাস বাতাসে স্থির শিশির শুক্তিকা মতো
রহস্যময় নিরবধি তুমি একবার শুধু --

একবার ছোঁয়ালে আঙুল তোমার ;চির তম:
আকাশে হেসে উঠবে আমার বসন্তের চাঁদ !


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান
 
তুমি আমার কবিতা হয়েছিলে

আহম্মেদ রফিক

একটু করে পিছিয়ে যেতে পারি,
সেটা কারণে -তুমি কোথাও দাঁড়িয়ে ছিলে
পিছনের দিকে ফেরা হয়তো মানতে চাইবেনা কেউ,
তবু ভালোবাসার জীবনে দু-চারটে উদ্ভট ঘটনা থাকবেই !

বলতে বলতে পৌঁছে গেছি তোমার ব্যালকনির সামনে,
বৃষ্টিতে নাগরিকেরা দাঁড়িয়েছিল যেখানে
হয়তোবা রূপের এমনি তৃষা -ভবঘুরে করে,
ভাবের রাজ্যে সঙ্গী করে আবেশ ভালোলাগা
জীবনের মোড়টাতে হালকা ঝাঁকুনি ছিল
ছিল চোখে চোখ রাখা আর
বিগত দিনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা

বিশ্বাস করো তোমার হৃদয়ে যে ঝড়,
পরিধি ত্রিভুজাকার ছিল আর
সামনে রেখেছিলে সাগরসম অবিশ্বাস
তবুও ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু বুঝিনি সেদিন,
দিয়েছি সবটুকু উজাড় করে

তুমি আমার ভালোলাগা ছিলে
তুমি আমার কবিতা হয়েছিলে


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান
 
স্বপ্ন

মৌ দাশগুপ্তা

কাল অবেলায় সাঁজবাতিটির আলোয়,
অদ্ভুত এক স্বপ্নের পেয়েছি দেখা
যেন কোন ছেঁড়াছেঁড়া স্মৃতি নয়,
না পাওয়া যত ইচ্ছের রেণু মাখা

মমতামাখা স্বপ্ন কাজল চোখে,
ভবঘুরে মন ছোটে পলাতক পায়ে,
যেখানে উর্বরা ভূমিটি স্বপ্নশীল,
শব্দের কুঁড়ি ফোটে কবিতা হয়ে

যত কথকতা, জীবনের যত গীত ,
এসেছিল কাল সাঁঝ স্বপ্নের সাথে
না বলা কথা,না ভোলা যত স্মৃতি,
জমা হয়েছিল অতীতের মনোরথে

তারা বলে গেল স্বপ্ন দুঃখ বাড়ায়,
স্বপ্নই ছোঁয় আকাশচুম্বী আশা,
স্বপ্ন ছাড়া বাঁচতে শেখা ভুল,
স্বপ্ন আসলে নিজেকেই ভালবাসা


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান
 
 মনভাঙা রোদপ্রহর

আহমেদ তানভীর

নিঃসঙ্গ বাবলা গাছে দোয়েল-শিস,
রোদমাখা থমথমে দুপুর...
আমার কিশোরবেলার রঙপ্রহরের গল্প;
নাকের নিচে সবে গোঁফরেখার উঁকিঝুঁকি,
গলার স্বর ভেঙেছে বেশ 'দিন!

কলতলার জল ঢালা থামিয়ে
ইশারায় ডেকে নিলো চিত্রা দি'...
ফিসফিসিয়ে উঠলো নির্জন প্রহরে,
'
তুই আমার ঘরে আর যাসনে, বিষ্ণু'
বুকের মধ্যে রক্ত ছলকে উঠলো,
হু হু করে উঠলো মনোমন্দির!
'
কেন, দিদি? কী করেছি আমি?'
'
তুই এখন বড় হয়ে গেছিস, আমার ঘরে ফের যাবিনে বলছি;
আর কিচ্ছু জানতে চাসনে, এখন যা
যা এখন, কেউ দেখে ফেললে...'

কলতলার জলস্রোতে দুপুর-দহন,
আমার চোখপুকুরে জলজোয়ার-
বিষণ্ণ বাতাসে কসকো সাবানের গন্ধ;
চুরি করে মাছ খাওয়া বেড়ালের মতন
আমায় তাড়িয়ে দিলো চিত্রা দি'
মনভাঙা রোদপ্রহরে পরান-দহন!

এরপর আর কোনোদিন চাঁদভরা সন্ধ্যায়
চিত্রা দি' বুকের উপত্যকায়
মুখ ডুবিয়ে শুনতে পাইনি
ডালিমকুমার, পঙ্খিরাজ কিংবা
সোনার কাঠি-রূপার কাঠি...


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান

শরত বিচিত্রা

ইন্দ্রাণী সরকার

শরত, কি বিচিত্র রূপ তোমার
কি করে দিই বর্ণনা !
কোন্ আখরে বাঁধি তোমায়
তাই ভেবে হই উন্মনা ||
আকাশের ওই গভীর নীল
মেশে সুদূর নীলিমায় |
পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘের রাশি
উদাস হয়ে ভেসে যায় ||
কাশের বনে হাওয়ার দোলায়
ঢেউয়ের ওঠাপড়া |
শিশির ভেজা মাঠের পথে
মুক্তা খুঁজে ফেরা ||
সোনার আলোয় ভরে গেছে
দিকদিগন্ত আজ |
খুশির ছোঁয়ায় মন ভরে যায়
নেই কোন আর কাজ ||
মধুর হাওয়া উদাস করে
ভাঙায় ঘুমের ঘোর |
এমনই এক দিনে আমি
স্বপ্নে হলাম বিভোর ||


ছবি: আলী রেজা
আমার, রুপ হতোনা

 
শামীম পারভেজ

থাকবোনা আর নগ্ন গায়ে,
জামা কিনে দাও,
থাকবোনা আর ফুটপাতে,
কোলে তুলে নাও

খাবোনা আর বাসি পঁচা,
ভালো খাবার চাই,
ক্ষুধার জ্বালায় ডাস্টবিনেতে,
আর যাবোনা ভাই

কলম চাই, খাতা চাই,
কে দিবে আমায় ?
বিদ্যালয়ে যাবো আমি,
জানিয়ে রাখি তোমায়

আমায় তোমরা ফেলে দিওনা,
আমি বড়ই অসহায়,
ছন্নছাড়া আমার জীবন,
এভাবেই কেটে যায়

অনাদরে,হচ্ছি বড়,
কেহ দেখার নাই,
জীবনটা বাঁচাতে গিয়ে,
হয়ে গেলাম 'টোকাই'

বাবা কোথায়, মা কোথায় ?
বলতে পারবোনা ,
তারা যদি থাকতো পাশে,
আমার, রুপ হোতোনা

ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান

অনভিজ্ঞ পুরুষ তৃতীয় শ্রেণীর গাধা
শুভ বাবর

অনভিজ্ঞ পুরুষ তৃতীয় শ্রেণীর গাধা ,
দরদী স্রষ্টার গৃহে বিক্রি শরীর ফেরৎ হয়না
অমানুষ গোছানো যায়না ,বসন্তের কোকিল অসময়ে কুহু জ্বর
আগুনে পুড়ে যাচ্ছে ব্যাকুল উতলা দেশ,
নেশার ঘোর তবুও কাটেনা ,শরীর খেলে শরীরের খেলা
স্বামী পুরুষ সাপটা দেহে ছড়িয়ে দিয়েছে মরণ-বিষ
শক্তিধর যুবক শরীরের ঘ্রাণে আসক্ত রুদ্রাঘাতে ছিন্নভিন্ন
নীল রহস্যে ঘেরা পোড়া মন খুঁজে সুদীর্ঘ চোরাবালির চৈতন্য

জন্ম থেকে মনে জ্বলে আগুন সেই ক্ষুধায় দাস হয় পুরুষ
অকুণ্ঠ মানবী অপেক্ষা করে সেই পুরুষের
সুঠাম শরীর কোমল কণ্ঠস্বর দমবন্ধ আঁকড়ে ধরে বাজু
মলয় বাতাসে স্বপ্নবিভঙ্গের উসকানি দেয় পছন্দের সুন্দরী
অনন্ত রাত্রির অশান্ত চমক বুকের চেপে ঘুমোয় নগণ্য সভ্যতা
রাত্রিময় পণ্য বসে মুখোমুখি
চোখে চোখ ভাঁজে ভাঁজে ভাঁজ করা তৃপ্তির নিষিদ্ধ উল্লাসে

চোখের তারায় দেখেছি
আপন রক্তের কিরিচ জলের বুকে আঁচড় কাটে
প্রেমের কাছে কিছুই না জীবনানন্দ অস্তিত্বের বনলতা
ফেল মেরে গেছে কোন এক লেখিকার সম্মানে
চকিত চোখের কটাক্ষে প্রার্থিত কাব্যপুরুষ
ভিন্ন মুদ্রায় দূরে কচি ঘাসের উপর নগ্ন বিছানা
পলকে পলকে দৃষ্টির নির্লজ্জ ঝলক ঘাড় মাথা এক হয়ে
মিশে গেছে কাঁধের কাছে বৃত্তের সঞ্চিত আগ্রাসী চুম্বন,
হাসে গোধূলির শেষ দিগন্ত লাল সূর্য
আশ্রয় খোঁজে চঞ্চল শিরদাঁড়া মূর্তিমান সংস্পর্শের শেষমুহুর্ত

নারীই শক্ত প্রতিবন্ধী পুরুষের উত্তেজনায় পাথরের বুকের ভিতর
খুঁজে ফিরে আর একটি অশান্ত সু-স্বাদু,পাথুরের বুক
আদিম রহস্যে কাঁপে উপত্যকার ঘনঘাসে চিত্রিত ঘুমন্ত বিচরণ

ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান
 
অজেয় অসুখে
সুবর্ণা গোস্বামী

প্রথমবার বিষ খেয়েছি গাঢ় নীল পানপাত্রে
অসুখ আমার দিকে চেয়ে বিদ্রূপে হেসেছিল
"
আরো কতবার অনির্বাণ এই নেশা তোমাকে ছোঁবে!"
এই ভেবে ঠোঁটের কোণায় বিষাদ লুকাল সে

অভিশাপে পাথর হয়েছি পুরাণ কথিত পাপে
রুদ্ধ হয়েছি আবক্ষ, মৃত্তিকার বুকে
কুচক্রী জীবন তবু সুযোগ খুঁজেছে শরীরের ভাঁজে
দ্বীপ জ্বেলে ডেকে নিয়ে গেছে কবন্ধ অন্ধকারে

কত প্রেম অলেখ্য,অকথিত অন্তরালে
কত দুঃখ দেয়ালে তোমার ছবির সোনালী ফ্রেমে
নির্বিবাদে সমঝোতা আক্ষেপের সাথে
আমি অনন্তকাল ধরে বিষ খাচ্ছি অজেয় অসুখে


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান
 
কবিতা গান
শৈলেন্দ্র প্রসাদ চৌধুরী মানিক

চাতকের মত চেয়ে থাকি অষ্টপ্রহর
যদি আসো এই হৃদয়ের মাঝে
যদি আসো বুঝবে ওগো
কী এক অভিসার জাগে !
আকাশ পাগল হল এই ভাদরের রাতে
কত কথা হৃদয়ে জাগে মিলনেরই তরে
বৃষ্টি যে ভিজায় আঁখি
কেউ বুঝে না এই কাঁদনের ধারা
এই মাঝ রাতে চাতক ডেকে যায়
কোন্ সাথী হারার বেদনায়
গান এখানে সত্য
সেই সত্যের কাছ থেকে
একটু জানতে চাওয়া
জীবন কি শুধুই বৃথাই ?
চারিপাশ শরত্এরই আহ্ববান
মরা নদীর ধারে কাশ ফুলের আহ্ববান
আকাশ ঘন মেঘে ডাকা
বিজুলী ঝলকায় বারে বারে
পাপিয়া কী যে চায় বারে বারে
বুঝি কবির কোন গান !
যা মেঘমল্লার রাগে
দরবারির ছোঁয়ায় !
উদাস করা উদাস কবির
উদাস করা কবিতা গান !
আজ রাতে যে আছে ঘুমিয়ে
সেও জেগে উঠে শুনবে কবিতা গান

ছবি: আলী রেজা

অভিলাষ
অনুপম দাশশর্মা

ক্রমশ হালকা মেঘের পোশাক ইতস্তত কাশের ঘ্রাণ
দোয়েল ফিঙের পালকে এঁকে দিল
আগামী কর গোনা হেমন্তের ঝলমলে আভাস,
আবছা ছায়ামূর্তি অতীতের ছাই থেকে নিরাকার
ইথার ভেলায় উদ্ভিন্ন যুবতীর কাঁধে চুমু দেয়,
গুমরে থাকা সৃজনী চোখ ধারাল হয়ে অনায়াসে
ফিরিয়ে আনে জলতরঙ্গ সে সময়,
নিমেষে অলংকৃত হয় মনদ্বার
সন্ধ্যার জরিদার আঁচলে আকাশদানা হাসে
অপকৃতি অধরা সান্নিধ্য ঘিরে নেয় কলম,
ঈশ্বর রুপ ধরেন সৃষ্টি ভাবনার ফলায়
ক্ষয়িঞ্চু সৌহার্দ্য রঙ্গিন পোশাকে সাজে,
আর তখনি শরতের স্বল্পায়ু দীর্ঘসুবাসে
সোনা বিকেল কে সাজায় সহজেই
অনন্য ইমন রাগে..!


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান
 
মন সঙ্গম !

সাইদুর
রাহমান মিলন

মন আকাশে আসতে যদি
মুক্তা ডানার মনের চিল
মন জুড়ে উড়ে মনের তুলিতে
মাখতে গায়ে মনের নীল !

মন ঘাটে তে বসতে যদি
মনের হাওয়া, মন বাতাস
জুরিয়ে দিতো পুড়িয়ে যাওয়া
রুক্ষ তোমার মনের ঘাস !

সাঁতরাতে যদি মন পুকুরে
তুলতে শালুক মন খুড়ে,
মন ডুবালে মনও পেতে
উর্বরা মন জুরে !

মন জলে যদি করতে গোসল
মন সাবানে মেজে গা
মনে তে মন ঘসে ধুতে ,
মন ময়লা মনের যা !

মন গামছায় মন গা মুছে
মন আতরের নিয়ে ঘ্রাণ
মনবিছানায় মন সংগমে
হতো, মন একাকারের গান !!


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান
 
কবি জিজ্ঞাসা..?
খান রনক

কবি,কবিতা, কেমন বিধান...??
কবে, কোথায়,তোমার উত্থান..??
দুনিয়া যেখানে ভাবের সাগর...
...
তুমি,তোমরা...
কেমন ঢঙের নাগর..??
আঁকারে,-কারে...
জীবনের মানে কবিতার চিৎকারে.....
কখনো কবি,,
কখনো কবিতায়...
সঙ্গ-সাথী, বেঙ্গ-রসে, হাত-তালি....
তোমাদের বলি...
কবি,কবিতার ছায়ায়...
পরে আছি স্বর্গীয় মায়ায়....
পার্থিব চাওয়ায়..
সবি ভুয়া...
মানি শুধু.... কবি,কবিতার ধুয়া...


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান
 
আপেলগুচ্ছ

সুবীর সরকার

মেঘের ছায়ায় মেঘ মেখে বসে আছি
পুকুরের জলে বয়াতির চুল
কাদামাটির টিপ,শ্যাওলা জমবে পায়ের
পাতায়
শিষ বাজিয়ে চলাটা অভ্যাস
যতদূর যাও ধাওয়া করবে সপর্দংশন
নদী কিনারায় পাখি,আপেলগুচ্ছ


ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান

ফিরে আসা
 
 অভিলাষা

আমি আবার আসবো ফিরে,
ঝিরঝিরে এই স্রোতস্বিনীর তীরে,
পাশে স্বপ্নিল আকাশচুম্বী পাহাড়,
সবুজের মাঝে রঙ্গিন বর্ণবাহার
শান্ত সবুজে সমাহিত চিত্রিতা,
প্রকৃতি-পটে রচিত কবিতা,
আকাশে ঘনাল মেঘ ঘোরকালো,
রহস্যভরে হাতছানি কেন দিলো
শুধু আসা যাওয়া,ভিড়ে কি নিরালায়,
মনে পড়া শুধু স্মৃতিময় আঙ্গিনায়
কি জন্য আসা, কার জন্য আসা,
ভেবেও পাই না দিশা
ভুলে যাওয়া মুখ, ভুলে থাকা দুখ,
তারি টানে ফিরে আসা

ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান

আমরন স্বর্গ পাব

বিলকিস আরা ক্ষমা

তুমি রাজি হলে
তোমার উপ্তও কপালে খাব বিদ্যুতের চুমু
তুমি রাজি হলে
তোমার উদ্দেশে পাখি হয়ে উড়াল দেবো আঁকাসের পর আঁকাস
তুমি রাজি হলে
আমার বুকের গভীরে তৈরি করবো এক অনশ্বরপ্রেম
তুমি রাজি হলে
পৃথিবীতে থাকবো না আর, আমি তুমি আমরন স্বর্গ পাবো

ছবি: মোঃ সরোয়ার জাহান