স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭১
সালের
২৬
মার্চ
যে
যুদ্ধ
শুরু
হয়েছিল,
দীর্ঘ
নয়
মাসের
অবর্ণনীয় ত্যাগ-তিতিক্ষার পর ১৬ ডিসেম্বর ঘটেছিল
বিজয়।মহান শহীদদের উদ্দেশে বলি: আমরা তোমাদের ভুলিনি, ভুলব না। লাখো
শহীদের
রক্তে
রাঙা
মহান
বিজয়ের মাসে সেই
যুদ্ধে
যাঁরা
প্রত্যক্ষ ও
পরোক্ষভাবে অংশ
নিয়েছিলেন, তাঁদের
সবার
প্রতি
রইল
আমাদের
শুভেচ্ছা ও
অভিনন্দন।
২৬ তম সংখ্যায় আছে মোট ১৩টি কবিতা,
লিখেছেন-শামীম পারভেজ,কচি রেজা,আলী রেজা,সৈয়দা মকসুদা হালিম,নীল আলো,শুভ বাবর,বিলকিস আরা ক্ষমা,অর্পিতা,ইমেল নাঈম,জগলুল হায়দার, সিপাহী রেজা, আহসানুল হক এবং মোঃসরোয়ার জাহান ।
ইতিহাস বলি বারবার
শামীম পারভেজ
ফেব্রুয়ারির একুশ এলেই নগ্ন পায়ে শহীদের কবরে যাওয়া আর শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া । মার্চের ছাব্বিশ এলেই সাভার যাওয়া দলে দলে এ দিনটা চলে গেলে স্বাধীনতা যায় ভুলে। ডিসেম্বর ষোল এলেই বিজয় বিজয় তাদের মুখে দরিদ্রের হাহাকার তারা তো আর নাই সুখে । নতুন প্রজন্ম বড়-ই অসহায় জানেনা তো এর ইতিহাস আমরা তাদের কি শিখাচ্ছি করে যাচ্ছি সর্বনাশ । এখনও সময় আছে ইতিহাসটা জানাবার চলো তাদের সবাই মিলে ইতিহাস বলি বারবার । পিষ্ট সময়
কচি রেজা
কিছু যদি নাই বলি আজ কিছু আজ নাহয় না ই শোনো যদি চূড়ান্ত অর্থে কিছু ই বলি নি যা বলেছি শুধুই সংকেত--তাৎপর্যহীন একবার বলেছি, মৃত্যুর কথা কারণ মরে দেখেছি ত অনেকবার একবার বলেছি, প্রেমের কথা কারণ প্রেম ও একটা জরুরী পৃষ্ঠা জীবনের স্বপ্নে আহত হয়ে কতবার স্বস্তি নিয়েছি তোমাতে এখন নিজের হাতে ডানা ছিঁড়ে শুনছি চিৎকার এখন প্রেম থেকে দূরে গিয়ে দেখছি গ্রাম-গ্রামান্তরের কাকের বিদ্রোহ তরমুজের পিপাসা এখন রাগেশ্রী আলাপে কেবল চূর্ণ একতারা আজ পালকের টুপি খুলে দেখি নিজের চুল ও এক একটি সশস্ত্র যোদ্ধা আর নিয়তি চাকা ঘুরিয়ে নিয়ে এসেছে উলটো দিকে ক্ষমতাধর প্রতিপক্ষ আমার সামনে পেছনে ক্ষুরধার দেয়াল শরীরের সমকালীন খুঁটিনাটি
আলী রেজা
আঁচলের গিট খুলে দিয়েছিলে আলিঙ্গনের গুপ্ত চাবি ঠোঁটের তীব্রতর ওমে পুড়ে গ্যাছে আঙ্গুলের ছোঁয়াখানি সুনামির বেগে উপচে পড়েছে ধনেশ পাখির ঠোঁট অকাল পতনের ঝর্ণাধারায় প্রকাণ্ড যতি চিহ্ন শরীরের সমকালীন খুঁটিনাটি ভুলে তুলে নিয়েছো ছড়িয়ে থাকা নকশীকাঁথার গোপন বস্ত্রসম্ভার ঢেকে ফেলেছো মুহূর্তেই মধুমাখা দেহলতাখানি;
রাত নামে নির্জন ঘুমঘোর দরজা ভেঙ্গে
সারারাত ইচ্ছে জেগেছিল মীন মৃগয়ার তেজি অশ্বের হ্রেষারবে কোষবদ্ধ তরোয়াল প্রত্ন পৃথিবীর রুপোর কৌটা খুলে তুলে রাখি কাপালিক অঙ্গার আর অধুনা অসমাপ্ত সকল দোহন-কার্য।
যদি দাও আমাকে
সৈয়দা মকসুদা হালিম আমাকে ফাল্গুন দাও- ফুলে ফুলে রঙিন প্রজাপতি উড়ে উড়ে রঙ মেখে সুবাস ছড়াবে। রঙিলা মধুমতী মধুপান করে যাবে। আমি হবো রাজ রাজেন্দ্রানী, অনুগত অনুচর অহরহ স্তবগানে মাতাবে বনানী! আমাকে দাহ দাও- খরতপ্ত সঘন-গহন নিঃশ্বাসে জীর্ণ যা কিছু সব পুড়ে হবে ছারখার, সাজবো নতুন বাসে। আমাকে শ্রাবণ দাও- বুকনিয়ে বারিভার অদৃশ্য আকাশের মতো সারাদিন ঝরঝর-পুত্রহারা জননীর অশ্রু অবিরত, ভেজা ভেজা মাটি হবো, বীজ বপনের জন্যে যথাযথ- নিষিদ্ধ দিনের পরে হবো ফের পুত্রবতী রমণীর মতো। আমাকে হেমন্ত দাও-ফসলের ভারে ভারে স্নেহময়ী জননী হই যদি, বক্ষের ক্ষরিত সুধা ঢেলে ঢেলে হয়ে যাবো স্রোতস্বিনী নদী। তারপর কুয়াশাঘেরা শীতের নিভৃত নিশীথ রাতে- তোমার বুকের উষ্ণতায় গুটিসুটি ঘুমাবো নিশ্চিন্তে। আমাকে যৌবন দাও- প্রাণবেগে ছুটে যাবো, দিক থেকে যাবো দিগন্তে পূর্ণ প্রাণে ভরে দেবো, ভাসাবো দশদিশি দাদরার দুরন্ত সঙ্গীতে।।
অমৃত স্নানে শুদ্ধ হবো
নীল আলো
আমার বলতে কিছু আর নাই প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি দীর্ণ ভ্রান্তি মনে হয়, আবেগে বুকের তলা ভেঙ্গে খান খান তবুও ডুবজলে প্রান্তর খুঁজি, কোথায় তুমি? একখণ্ড মানচিত্র শীতসকালের ওম-- দেখা কি দেবে তুমি ? ডানা ভাঙ্গা তবু উড়ে বিসর্জনে দগ্ধ হতে চাই মায়াজাল ফেলেছে নিঝুম রাত্রি, ছায়াপথ ঘুরে কোথাও ঠাই হলোনা, তারপরও বিচ্ছেদের চুম্বন অন্তরীণ হৃদয়ে ঢেউ তোলা রাত্রির নরম নীল জোছনা তোমায় কাছে পেতে চায়-- আমি সেই মর্ম বিরহ কাঙাল ! চোঁখে ধরা পড়েনা হৃৎপিণ্ড কতটা পুড়েছে ঝড়ের রাতের ভৌতিক ঘড়ির শব্দ, এখন আর ভয় পাইনা, ব্যথার মাঝে বন্দী দেহ - অনুভবে তীব্র অগ্নিশিখা হাওয়ায় গভীর গর্জন, তবু প্রহরগুলি স্তব্ধ; আমার মন মগজে শুধু তুমি। এই অনাবাদী জমিতে কোন্ চাষে ফসল ফলবে ? সঞ্জীবনী জল কোথায় পাব ! কোন্ ফুল তুলে প্রিয় মালা গাঁথবো, দৃষ্টির সীমানা এখনতো জানা নাই স্রোতের তোরে ভেসে যাওয়া খড়কুটো ধরে বাঁচার তপস্যা, তুমি কি এ'কে জীবন বলো? হোকনা বেপরোয়া কিছু -ভাঙুক নিয়ম দেউলিয়া জীবনে সন্যাসধর্ম রয়েছে তো পিছে, জোর নেই, থাকে যদি হৃদয়ছেড়া ভালবাসা- তবে এসো দুঃখ গ্লানি অপবাদ গ্রাস করবো নির্বিচারে, অমৃত স্নানে শুদ্ধ হবো।।
অন্ধ কুপের প্রভু আমাকে আর নিষিদ্ধ করোনা
শুভ বাবর
তুমি বা আমি কেউই নিষিদ্ধ নই ,ইয়া প্রভু কাউকে নিষিদ্ধ করোনা সৃষ্টির অনিষ্ট ধর্মের আশ্রয়ে কারাগারের অন্ধ কুপে কারারুদ্ধ কুমন্ত্রণার পাপপুণ্যের উপাস্য ব্যক্তিজীবনে অনাসৃষ্ট জংলা ফুল ৷ আমি মনে হয় ঠিক বোঝাতে পারি নি আমার চক্ষুলজ্জা কথা সামাজিকতার বানানো গল্প জনসম্মুখে ফাঁস হয়ে যওয়ার কথা অপ্রস্তুত বাঁকানো ঠোঁটে লজ্জাশরমের তোয়াক্কা কথা করোনি , চোখের জলে খুঁজেছ ন্যায্য ক্ষুধার স্বাদ ,মিথ্যা বলিনি মনে পড়ে তুমি সেদিন শরীর ভুলে অতিগোপনে ছুঁয়ে ছিলে ঠোঁট ৷ অতি নগণ্য মোহমুক্ত ভালোবাসায় নিসর্গ বিনির্মাণ অধরা বিষাদের কথোপকথন স্পর্শে স্পর্শে খুবলে খায় মিথ্যে মিথ্যে অপবাদ নরের অনুমোদিত পাঁজরের হাড় নারী পঞ্চরাশির ক্ষমতাবান পুনর্প্রকাশে স্বাধীনতা ধূলিসাৎ মনঃসমীক্ষণের ইস্কুলে পরস্ত্রীকাতরতা স্বর্গ ধান্দায় আমি তোমার শত্রু হয়েও দূরে বহুদূরে সরে যাই ৷ আমি ধর্মের ফিলসফি বুঝিনা, কারণ আমিতো বুঝে কোরআন পড়োনি ৷ মানুষ মুক্ত নয় ইতিহাসের বানানো কথা নীল সন্ধ্যায় মস্তিষ্কপীড়ায় উটকো বুদ্ধিচাষ করে হতবুদ্ধির গন্থিকগন অজৈব হদয়ের জরা বিরক্ত দ্বিধাবোধ সুখের তাড়নায় কামেচ্ছে বিষের পেয়ালা অসংযম উঁকি দেয় বিশ্বাস করতে বাধ্য বিশ্বাসে নিদ্রাহীন অনুভূতি-ক্লেদে ঐ হতভাগা জ্ঞানবৃক্ষের ফলভক্ষণ করে দুষ্ট ফড়িং নিষিদ্ধগমন উল্লাস করে ,বোকা লোক ঠিকই তার নজুক ফর্দ আঁটে ৷ তুমি ত প্রচুর পড়াশুনা করেছ বলতে পরো হিংসার আদর্শের নাম কি শরীর বলতে পরো তুলনামূলক কোন ধর্মে মানুষ হত্যা বন্ধ করে গান গায় সাম্যের বিশ্বরূপ বর্ণনা করনে তিন ভুবনে দেবতা কি মানুষ কেউই স্বার্থপর নয়। পলিথিনের ঐ ঘর যেদিন ভিজেছে , ভিজে গেছে নেংটি শিশু হৃদপিণ্ড কোন ডগবান কোন ঈশ্বর কোন খোদা কেন সেদিন বাঁচাতে আসেনি ৷ মা বিশালাক্ষি চিত্ররূপিণী সুলক্ষ্মণা , তুমি আমার কন্যারূপে ভূমিষ্ঠ হলেও,আমি তোমার স্বরূপ কিছুই জানি না আমাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করো ৷ আমার গুণগাথা শ্রবণ করবে এই উপন্যাসের যুগে অসম্ভব সম্ভাবনার মানুষ মা, তোমার গুণ আমাকে খোঁচা দিওনা , আমার ভেতর আরেক ভোগ্যবস্তু নড়াচড়া করে প্রতিদিন আমি জানি কোন কিছুই পবিত্র নয় নিষিদ্ধ ঘৃণিত দালান আজম্মের পূজা ক্ষরণে আমি মিথ্যে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে নিজেই নষ্ট করেছি অতীত , আমাকে খেয়ে ফেলেছে অপবিত্র জীবনযাপন , প্রত্যয়ি কর্তা মাইল বেগে ছোটে রিজিক দাতা দ্বীনের সশস্ত্র সংগ্রামে আমি হতে চাই রক্তপাতহীন লেখনী সৈনিক ,আমাকে আর নিষিদ্ধ করে বাংলার মাটি বিলকিস আরা ক্ষমা বাংলা আমার ভাষা বাংলা আমার কণ্ঠস্বর বাংলা আমার স্বর্গোদ্যান বাংলার মাটি আমার মায়ের কোল। একাত্তরে কিছু স্বৈরাচারীর দল ভয়ংকর এক কালো রাত্রির পর্দা ভেদ করে ঢুকে পরেছিল সবুজে সবুজে ঘেরা বাংলার এই ছোট্ট একটি স্বর্গ-উদ্যানে। একটু একটু করে গ্রাস করতে চেয়েছিল ওরা আমার বাংলা মায়ের কোল। একাত্তরের এক অলস দুপুরে ওরা আমার মা- বোনের সম্ভ্রম কেরে নিয়ে নগ্ন উল্লাসে উচ্চকণ্ঠে ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় বলেছিল আহ কি অপরূপ তৃপ্তি এই বাংলার নারী। কেঁদে উঠেছিল একাধারে শত শত লাঞ্ছিত জননী, ধর্ষিতা অবলা নারী...। স্বাধীনতার আজ চল্লিশ বছর, কোথায়...আজ ও কি স্বাধীন এই বাংলাদেশ ??? আজ ও এই সোনার বাংলায় তৃষ্ণা কাতর হিংস্র কিছু কুকুরের লালার বীজ রূপণ হচ্ছে এই বাংলার মাটিতে। বাংলার মাটি হয় আজ ও গর্ভবতী।
অন্য কবিতা
অর্পিতা
আমেজ ছড়ানো শব্দের আবেদনে
কেউ যদি এসে বলে মোর কবিতায় বস
আমি উড়োজাহাজ ?
ঘুম ছুঁয়ে যাওয়া মধ্য বিকেল নামাতে পারি দিগন্তের হাত থেকে রঙ কেড়ে নিয়ে সোনালি সন্ধ্যা জড়াতে সে কবিতার গোপন অঙ্গে ।
তার ছলচাতুরী বুঝে নিয়ে
শব্দ বাজি রেখে রাতের হাতে ছেড়ে যাব নিঃসাড়ে ! কবিতার বুক রাতচরা ছুঁয়ে যাক অনবধানে --
নক্ষত্রের জাল ছিঁড়ে
একলা পাড়ি যৌবনবেলা কত ভেজাবি মেয়ে সে কবির কবিতা ?!
দুহাতের মুঠোয় ভোরের শিশির
অতল স্বপ্নের আহ্বানে ভরে যাক পাখির কলতানে
ঝরনার উতরোল থেকে
শব্দের গান ভেঙে বেহায়া বাতাসের হাতে অরন্যে রোদন করুক ঝরে যাওয়া পাতাদের সাথে নিরুত্তর শব্দের দল । পাতা কুড়ানো শিশুর স্বাধীনতা ইমেল নাঈম স্বাধীনতার সংজ্ঞা বোঝে না ফুটপাতের পাতা কুড়ানো সেই শিশুটি , অভাব ও দারিদ্র্যতার সাথে লড়াই করে পরাজিত নিজেকে প্রস্তুত করছে আগামী দিনের জন্যে । তার জন্যে কেউ কি নিয়ে আসতে পারবেন স্বাধীনতার সংজ্ঞা সমৃদ্ধ অবিধান? যা পড়ে সে ভুলবে স্বাধীন দেশে পরাধীনতার কষ্ট ! বিশেষ দিনে দেশপ্রেমিকের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হয়তো তার মনে কাঁপন ধরিয়ে দেয় , সে ভাবে বছরের বাকি সময়ে এইসব শিয়াল পণ্ডিতের দল থাকে কই ? তার জীবনের গল্প কথন সভা, স্যামিনার ও বক্তৃতায় ফুলঝুরি হয়ে ফুটে । বক্তৃতার উৎসবের সমাপনের পরে সে কাউকেই দেখে না তার জীবনের কথা ভাবতে । সর্বত্র না পাওয়ার বেদনা তাকে কুড়ে খায় প্রতিনিয়ত, তার হৃদয়ে বয়ে যায় দুঃখেরই রক্তক্ষরণ । বিয়োগান্ত সময়ে কিছুটা আক্ষেপের চোটে ক্ষয়প্রাপ্ত হৃদয়ে কেউ তো লাগিয়ে দেয় না স্বাধীনতা নামক এন্টিসেপ্টিক ক্রিম। আজ তার কিছুই চাওয়ার নেই নগরীর এই ফুটপাত ও সমাজ ব্যবস্থার কাছ থেকে । তার গগণে কখনো রোদ হাসে না , সব সময় হৈহৈ করে বৃষ্টি এসে ভেঙ্গে দেয় প্রতিটি স্বপ্নকে নীরবে , সেই বৃষ্টির পানি চোখের জল হয়ে ঝরে প্রতিটি প্রহর ।
বিপজ্জনক
জগলুল হায়দার
আটটা বুড়ো পাট্টা নিয়ে ঠাট্টা জমায় রিস্কি তার সাথে ফের শয়তানে দেয় সৌহার্দের হিস্কি। ### বিশ্ব যেন প্রমোদবালা হাসছে ওরা মিচকি ভোগের শেষে ঢেকুর তুলে ফালায় পানের পিচকি! ### ভূবন মেয়ের শরীর কেটে করবে ওরাই পিস্ কি বিপজ্জনক সাপের মুখে তাও খেতে কও কিস্ কী?
আত্মকথন
সিপাহী রেজা
১. মরা মাছের চোখ নিয়ে আমি ক্রমাগত ডাঙায় লাফাই। আঁশটের শরীর, কাঁটা কাঁটা লোম, পরতে পরতে ছাই মেখে আমিও ধরা ছোঁয়ার মধ্যে। আমি অর্ধেক মানুষ তার অর্ধেক কৈ মাছের প্রান ! সচারচর ভুল হয় দুপুরের দিকে যখন গোটা কয়েক ক্ষুধা মেরে ফেলি বড়শি গিলে। ২. অনেকদিন ধরে মাথার মধ্যে একটা বুলেট আটকে আছে, ঠিক মগজ ঘেঁষে! ভাবা ভাবিতে খুব জ্বালা-পোড়া হয়, খচখচ শব্দ হয় নিউরনে। ব্যথা জুড়াতে জলের কাছে যাই, বৃষ্টির কাছে যাই, মাথা কাত করে দাড়িয়ে থাকি, মনে মনে ভুলে যাওয়া দোয়া আওড়াই তাতে আর কি হয় উল্টো বুলেটের গা বেয়ে আরও কিছু জ্বালা, রক্তে পানিতে মিশে ব্যথাগুলো বেদনা ছড়ায়। চিলিক দিয়ে উঠে বার বার... মেমোরির বিশেষ জায়গা জুড়ে এখন ছোট্ট বুলেট যার দেয়াল ফেটে ছড়ায় ফুলের ঘ্রাণ, ধুতরার ঘ্রাণ... ৩. রাত বাড়ে, জানালা আরও বিস্তৃত হয় আকাশের দিকে! মেঘ হয়ে ভেসে আসা চুল গুটিয়ে নেয়, ঢেলে দেয় আলোর পিপাসা ! বুনো গন্ধে আটকে যায় ছোপ ছোপ তারার পাঁজর। কবে যেন বলেছিলাম; বাতাস’ তুমি আর মেহগনি ফল হয়ে উড়ে এসো না, এই মাটির বুকে! যার কাছে তিক্ততা আছে, তাকে নতুন কিছু দেও; প্রয়োজনে অথবা অপচয় ভেবে!!! স্বাধীনতা ও বিজয় আহসানুল হক লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি একটি পতাকা পেয়েছি আমার বাংলা মায়ের স্বাধীনতা অনেক বাবার রক্ত ঝরেছে অনেক মায়ের খালি বুক অনেক বোনের সম্ভ্রম আর অনেক ভাই এর আর্তনাদের মুখ শুধু একটি পতাকার জন্য একটি স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য। অনেক আশায় বেধেছিলেম বুক এদেশ স্বাধীন হলে রাজাকার আর আলবদরদের দেখে নেব এক হাত উন্মত্ত উল্লাসে যারা কেটে নিয়েছিল আমারই বাবার দুটি হাত আমার বোনের সম্ভ্রম লুটেছিল পিশাচ ওই পাকসেনা রাজাকারগুলো বিকিয়েছিল বিবেক ঘরে ঘরে দিয়ে হানা বাবা ভাইদের বুকে ছুরি মেরে মা বোন দের ঘর থেকে তুলে পিম্পের ভূমিকা বেজন্মাগুলোর যাই নি রে আজো ভুলে ক্ষরণ জাগায় হৃদয়ে আমার যখন তাদের দেখি কষ্ট হয় বিশ্বাস করতে দেখছি আজ এ কি? স্বাধীন বাংলার পতাকাবাহী গাড়িতে চড়ে যায় আজো এই বাংলার মানুষ তাদের এম পি আর মন্ত্রী বানায় বড্ড কষ্ট লাগে মনে। মনে পড়ে কত লাখো শহীদের অকাতরে আত্মদান বাঘের মতন যুদ্ধ করেছিল সম্মুখ সমরে দিয়েছিল প্রাণ বাঁচাতে মোদের ওই পাক হানাদের বর্বর অভিযানে ভুলিনি আমরা আজো তোমাদের রেখেছি তোমাদের মনে দিয়েছিল প্রাণ অকুতোভয়ে বাংলা মায়ের তরে দামাল ছেলেরা কাতারে কাতারে শহীদের পথ ধরে।
প্রতিটি বছর বিশেষ কিছু দিন আমরা পালন করি
ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদদের গুন কীর্তন করি প্রতিটি বছর স্বাধীনতা দিবসে অর্ঘ্য ঢেলে শহীদ মিনারে বিজয় দিবসে ফুলে ছেয়ে যায় শহীদ মিনার অঙ্গনে অঙ্গনে তবু যেন হায় বাংলার আকাশে আজো কাঁদে সব শহীদের আত্মারা তবু যেন কোথায় শ্রদ্ধা জানাতে কি যেন বাকি রেখেছি আমরা একটু যদি ভাবি রাজাকার আর আলবদর গুলোকে মন্ত্রী বানাব কি? আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো লাল ওই পতাকা সম্ভ্রম হারানো বোনের সারিতে সবুজ ওই পতাকা পত পত করে ওড়ে স্বাধীন বাংলার আকাশে কিছু বিশেষ দিনগুলো তাদের স্মৃতিতে না হয় অর্ধেক নেমে থাকে। তাদের আত্মার বুকচেরা আর্তনাদ শুনতে কি আমরা পাই না? তবে কেন ওই রাজাকারদের ফাঁসিতে ঝোলাতে পারি না?
স্বাধীনতার মন্ত্রমুখে
মোঃসরোয়ার জাহান
যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে
ব্যস্ত কবি
গনতন্ত্র পুড়ে যাচ্ছে পরাজিত
শক্তির দগ্ধ আগুনে
চৌদ্দ কোটি মানুষের মুখ
আর মুখোশের পার্থক্য
এবার চিনে নেবে জন্মান্ধ
স্বাধীন বাংলাদেশ !
নিঃশব্দে নয় যুদ্ধে যাত্রা
এবার স-শব্দে
ইতিহাস দুপায়ে মাড়িয়ে সামনে
পরাজিত শক্তি !
ওঠো,ওঠো সবাই স্বাধীনতার
মন্ত্রমুখে
ওঠো বাংলাদেশ
ওঠো বিক্ষুব্ধ বাতাস
ওঠো রক্তাক্ত রাজপথ
পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে
রুখে ওঠো !
|
ইন্দ্রিয়গম্যের মধ্যে ইন্দ্রিয়াতীত ঝংকারের নাম কবিতা আর এই ঝংকার বুঝবার নয় বাজাবার।কবিতায় থাকে আত্নার সত্তার বিশ্বজনীন বিস্তার,থাকে কাল থেকে অনন্তে উত্তরণ,আসীমকে অবলোকনের উচ্ছাস পাঠকের হৃদয়ের গভীরে..!কবিতা লালন করে চলে প্রেমময় সৃষ্টিকে..পাঠক হৃদয় সিন্ধু ঝিনুকের মুক্তার মত ধারণ করে সেই সৃষ্টিকে সূক্ষ্ণ উন্মাদনায় যখন যন্ত্রণায় বিপয্স্ত এই পৃথিবীতে কবিতা মনবাত্নার সুনিশ্চিত আশ্রয় ।
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ডিসেম্বর ২০১২,৪ পৌষ ১৪১৯,২৬ তম সংখ্যা।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন